somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দক্ষিণ এশীয় বাঘা জসীম ও বুনোহাঁস সমাজ

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের চলচ্চিত্র ভুমি বাস্তবতার সমাজকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমরা দেখেছি নায়ক রাজ রাজ্জাক নায়ক আর তার চারপাশে চাম্পু; তারা হচ্ছে চার্লি। আর রেযযাক ভাইয়া হিরো। একটি বিরাট তেঁতুল গাছ। তার নীচে কয়েকটি রঙ্গিন পিংপং বল নাকে পরা সাইড-কিকস। বন্ধুতার সাম্যবাদকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এসে পড়লো, পুঁজিবাদী সুপারম্যান। তাও মেনে নিয়েছিলাম, রাজুদা জীবন থেকে নেয়ার নায়ক; লক্ষী বেহুলার অলস লখিন্দর।
রাজ্জাক ভাই এইটা কী যে করলেন কলকাতা থেকে এসে; সবাই হিরো বাপ্পী লাহিড়ীর মতো সোনাদানা বাগিয়ে বন্ধুবৃত্তের কেন্দ্র হতে চায়।

অথচ সেই যে জীবন থেকে নেয়ার অনেক গুলো নায়ক, সমনায়ক, সেই বন্ধু সংস্কৃতিকে বাতিল করে দিয়ে এলো জসিম। সঙ্গে দিলদারেরা। জীবন থেকে নেয়ার গৃহকর্মী আমজাদ হোসেনও কিন্তু নায়ক ছিলেন। ঐ গল্পে উনি ইনডিস্পেনসিবল ছিলেন।

অথচ এই বাংলা চলচ্চিত্রের তালগাছপন্থী জসিম ভাইরাস ভার্চুয়াল জগতে বাঘের প্রোফাইল পিক জসিম হয়ে দিলদারকে তার গল্পে জাগলিং এর তিনটে লাড্ডু বানালো। দিলদারের ইচ্ছার কোন দাম নাই। ফেসবুকে জসিমের এক একটা বাঘা স্টেটাস দিলে, সেখানে দিলদারকে লিখতে হবে। উহ আজ সাহিত্যের ইতিহাস রচিত হলো। নায়িকা বুনোহাঁসের মত কলকলিয়ে এসে বলবে, বাঘা জসীম এশুধু তোমাকেই মানায়। রবীন্দ্রনাথ কিছুই নয়। সেইখানে এক ব্যাক্কল কোন দ্য আউটসাইডার এসে লিখলো, বাঘাদা কাজটা ভালো হচ্ছে না। আপনি অযথা এর ওর পাদদেশে কামড় দিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন।

এইসময় দিলদার এসে বলবে, এইডা ছাগু নাকি! ক দেহি পাঁচটা রাজাকারের নাম?

বুনোহাঁস আবার এসে বলবে, পাদদেশ ভুল শব্দ। আপনি ভার্চুয়াল ইন্টের্যা কশন-অটিজমে ভুগছেন।

এরপর দিলদারের চারপাঁচটা ক্লোন এসে বলবে, এই ঘাটের মড়াটা যায়না কেন? চুলকানি কুলুদাদাকে ডাকবো, দেবে ঢিল। এরপর জসিম বাঘ চিৎকার করে ওঠে, খামোশ, বাতিল মাল, ছাগু এক কামড় দিয়ে তোর বাপের নাম ভুলিয়ে দেবো। আর তুই আমার পেজে আসবি না তামার তার। যা তরে ব্লক মারলাম।

এই যে বাঘ জসিম সিনড্রোম; পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশে প্রতি দশজনে ৫ জন, ভারত-পাকিস্থানে ৬ জন এই রোগে আক্রান্ত। পাঞ্জাব প্রদেশ থাকায় ভারত-পাকিস্তানে সংখ্যাটা বেশী। এই বাঘ জসিম এসেছে আসলে পাঞ্জাব থেকে। বাংলাদেশে আনোয়ার হোসেন, গোলাম মুস্তাফা, খান আতা, রহমান, হাসান ইমাম, বুলবুল আহমেদ, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, জাফর ইকবাল, ফারুক আহা সাম্যবাদী অলৌকিক নৌকার সারেংবন্ধু সবাই। সুমিতাদেবী, আনোয়ারা, সুচন্দা, কবরী, শাবানা, ববিতা, সুচরিতা, নুতন, অঞ্জনা; সব সুনীল জলে পালকে এতোটুকু কাদা না লাগা হাওয়ার সাথে দুলতে থাকা সোন্নত রাজহাঁস, বেতোফেনের সুরে ভেসেচলা লক্ষী বৃত্ত।

পাঞ্জাবের বাঘ জসিম এখন সব জায়গায়। ভূমিতে, ভারচুয়ালে। এক এক জন সচিব, ডিসি (অপুলিশ-পুলিশ), ভিসি,গার্মেন্টস মালিক অনন্ত সম্ভবনাময় জসিম, বিএনপি-আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের জসিম ভাইও একি, জামাত ছাগু হওয়াতে জসিম হতে পারেনি। তবে সেখানেও বেশ কিছু পাঞ্জাবের মারখুট ইমরান খান আছে। ডাক্তার জসিম, ইঞ্জিনিয়ার জসিম, শিক্ষক জসীম, কবি জসীম, সাংবাদিক জসিম, সম্পাদক মহাজসীম। টকশোর জসীম ও বুঁনো হাস বনাম ইমরান খান, কর্পোরেট জসীম ও ওয়াইল্ড ডাক, সংস্কৃতি ও চেতনার ঠিকাদার জসিম, সেলিব্রেটি জসিম ও অনুভূতি হাঁস। ট্যাক্সি অলা যাবো না জসিম, এমনকি বাসের কন্ডাক্টর রাগী জসিম, দলিত সমাজের সভাপতি কুলুদাদা জসিম; এমনকি নোবেল ও ম্যাগসাসাই জসিম সবাই এক একটি মাগণ ঠাকুর। তার চাই শশীকর বেড়ি যেন দিলদার গণ মেলা। জসিমের বন্ধু দরকার নেই। তার দরকার ভাঁড়। এমনি বুনোহাঁসও দিলদারের একটু পৃথুল সংস্করণ।

আমরা কী এই জসিম বাংলাদেশ চেয়েছিলাম! চলুন আবার ফিরিয়ে আনি সেই সাদাকালো সাম্যবাদী বন্ধুতার বাংলাদেশ, যেখানে সাম্যবাদী মুজিবের গৃহকর্মীও নায়ক ছিল। তাকে না খাইয়ে, তার জীবনের গল্প না শুনে; নিজে খাননি এবং নিজের জীবনের গল্প বলেননি তাকে বঙ্গবন্ধু। সাম্যবাদী চে গুয়েভারা তার কমরেড নায়ক বন্ধুদের সবার গ্লাসে একটু কিউবান রামজল না পড়লে; নিজে গ্লাস ছূঁতেন না। এরকম সাম্যবাদী নায়ক এবং বন্ধু সমাজ হলেই বুঝি বঙ্গবন্ধু বা চে গুয়েভারার মতো ইতিহাসের মহানায়ক জন্মে সেখানে।

নইলে জসীম বাঘে ভরে যায় সমাজ, প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রিক ও ব্যক্তিগত জীবন।

হে মহান সৃষ্টিকর্তা, আমাদের সরল মানুষের সমাজটাকে আবার সেই সাদাকালো জীবন থেকে নেয়া করে দাও। রঙ্গিন জসীমদের ফেরত পাঠাও অরণ্যে। বাঘেরা বনেই সুন্দর, মানুষেরা সমাজে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×