"ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জনের বক্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল"
"ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জনের বক্তব্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল"
২২ জুন : টিপাইমুখ বাঁধ ইস্যুতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে । বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ পানি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদরা যখন বলছেন, ভারত এই বাঁধ নির্মাণ করলে বাংলাদেশ মরুভূমিতে পরিণত হবে ঠিক তখন ভারতের পক্ষ থেকে দাবী করা হচ্ছে এই বাঁধ নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরোধীতা করতে পারে না । তিনি বলেছেন, ১৯৭২ সালে এ বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে ভারতের আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় হাই কমিশনার গতকাল এক সেমিনারে এসব কথা বলেন । টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের যেসব বুদ্ধিজীবী কথা বলছেন ভারতীয় হাইকমিশনার তাদের সমালোচনা করে বলেছেন, তথাকথিত পানি বিশেষজ্ঞ ও বুদ্ধিজীবীরা টিপাইমুখ বাঁধ সম্পর্কে না জেনেই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বক্তব্য দিচ্ছেন । তিনি দাবী করেন, ভারত এ ব্যাপারে কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করেনি । পিনাক রঞ্জন আরো বলেছেন, এ ব্যাপারে কোনো চুক্তি নেই ।
তবে ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর এ ধরণের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞ, বুদ্ধিজীবীগণসহ বিভিন্ন মহল । তারা বলছেন, ঐ বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে যখন বাংলাদেশের সর্বত্র আলোচনা ও সমালোচনা চলছে তখন পিনাক রঞ্জনের এ ধরণের আক্রমণাত্মক ও বিদ্বেষী মন্তব্য স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত হানার শামিল । তারা বলেছেন, কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত এ ধরণের কথা বলার এখতিয়ার রাখে না ।
বাংলাদেশের সাবেক পানিসম্পদ সচিব ও পানি বিশেষজ্ঞ এম আসাফউদ্দৌলা ভারতীয় হাইকমিশনারের এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, পিনাক রঞ্জনের বক্তব্য এটা প্রমাণ করছে যে, ভারত টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ করবেই । তিনি বলেছেন, ১৯৭২ সালে যদি ভারত এই বাঁধ নির্মাণের কথা বলে থাকে তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে এর ব্যাখ্যা দেয়া উচিত । আসাফউদ্দৌলা বলেন, আসলে বর্তমান সরকারের ইঙ্গিতেই ভারতীয় হাইকমিশনার এ ধরণের মন্তব্য করার সাহস পাচ্ছে । তিনি ভারতীয় হাইকমিশনারের এ ধরণের বক্তব্যকে কূটনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত বলে মন্তব্য করেন । সাবেক পানি সম্পদ সচিব বলেন, পানি সম্পদ বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি করার কোনো প্রয়োজন হয় না । যেসব দেশ এ ধরণের সমস্যা পড়বে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হবে তারা প্রতিবাদ জানাতে পারবে । আসাফউদ্দৌলা প্রশ্ন করে আরো বলেন, টিপাইমুখে বাঁধ হলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কাজেই আমরা এর বিরোধীতা করে বক্তব্য তুলে ধরবো। কিন্তু এ ব্যাপারে পিনাক রঞ্জন কথা বলার কে ? তিনি বলেন, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলার এখতিয়ার ভারতীয় হাই কমিশনারের নেই । ফলে তার এ ধরণের মন্তব্যের জন্যে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা উচিত ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আমেনা মোহসিন এ সম্পর্কে বলেছেন, কমন ইস্যুগুলোতে যে কোন দেশই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিবাদ জানাতে পারে । ভারতীয় হাই কমিশনারের মন্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একের পর এক বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে পিনাক রঞ্জন মূলত আধিপত্যবাদী শক্তির পরিচিয় দিচ্ছে । আমেনা মহসিন বলেন, ভারতীয় হাইকমিশনারের এ ধরণের মন্তব্য বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল । তিনি বলেন, একজন রাষ্ট্রদূত এ দেশের বিশেষজ্ঞমহলকে তথাকথিত বিশেষজ্ঞ বলার সাহস পায় কি করে ? আমেনা মোহসিন বলেন, পিনাক রঞ্জন অব্যাহতভাবে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন আর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদই করা হচ্ছে না । তার ভাষায় - আসলে বর্তমান সরকার ''সাব সার্ভিনেন্ট রোল প্লে'' করছে । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি যাতে আবারো সংঘাতের দিকে না যায় সময়ক্ষেপণ না করে সরকারকে সে ব্যাপারে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে । #
একজন রাষ্ট্রদূত এ দেশের বিশেষজ্ঞমহলকে তথাকথিত বিশেষজ্ঞ বলার সাহস পায় কি করে ?
সরকার কেন এর প্রতিবাদ করছে না ?
সরকার আর তাদের বক্তব্য যে একই ধরনের কেন ?? তাহলে সরকার নিজেই কি ....আসলে বর্তমান সরকার ''সাব সার্ভিনেন্ট রোল প্লে'' করছে
পিনাক সহ সকল দালালদের বহিকার চায় অনতিবিলম্বে