somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কতর্ৃপৰ ব্যাখ্যাটা দেবেন কি?

০৪ ঠা মার্চ, ২০০৬ রাত ২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভেবেছিলাম কিছুই বলবো না, কিন্তু জানি না এখন আমার কী বলা উচিৎ। এই বস্নগে যখন উপন্যাসটির প্রথম অধ্যায় পাঠিয়েছি তখন যে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে তাতে কিছু মনে করিনি। মনে করিনি কারণ, মানুষ নির্মম শুনতে আগ্রহী নয়, যে সত্য 'ওদের' স্বরূপ চিনিয়ে দেয় সাধারণকে তা মেনে নিতে ওদের নিদারম্নণ ভয়। আপনারা লৰ্য করে থাকবেন, যারা এই কদর্যতায় অংশ নিয়েছেন তাদের কেউ কেউ প্রকাশ্যেই দম্ভ করেছেন যে, তসলিমা নাসরিন কিংবা হুমায়ন আজাদের তারা কি অবস্থা করেছেন! সুতরাং বুঝতে অসুবিধে হয়নি, এরা কারা।
দ্বিতীয়ত, আমার বিশ্বাস এটাও কারো বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয় যে, আসল কথা অশস্নীলতা নয়, আসল কথা হচ্ছে অাঁতে ঘা, যে সত্য তারা মনে-মগজে প্রতিপালন করে তাই-ই যদি কেউ স্পষ্ট করে বলে তাহলে তার বিরম্নদ্ধে লেগে গেলেই হলো। যেভাবে পারা যায়, তাকে নোংরায় ডুবিয়ে হোক, তরবারি/ছুরিতে রগ কেটে হোক কিংবা তাকে গুলি করে হত্যা করেই হোক। এটা ইমরম্নল কায়েসের যুগ থেকে এ পর্যনত্দ সব সময়ই সত্য।
কিন্তু আমার প্রশ্ন বস্নগ-কতর্ৃপৰের কাছে, তারা কেন এই কাজটি করলেন? আমি এ প্রশ্ন করবো না যে, 'ওদের' নোংরামি কেন মুছা হলো না, কারণ এক) ওরা ওদের মতো করে নিজেদের বক্তব্য প্রকাশ করেছে, যার স্বাধীনতা তাদের আছে, এই স্বাধীনতা রৰার্থে আমি যে কোনও কিছু করতে রাজি; দুই) ওরা এতে নিজেরাই পাঁকে পড়েছে, আমাকে টেনে নামাতে চেয়ে, সেই পাকে নিজেরাই পড়েছে বলে বিশ্বাস করি, তিন) এটাই 'ওদের' চরিত্র, তাই বলার বিশেষ কিছু নেইও।
কিন্তু স্বাধীন মত প্রকাশের কথা বলে কেন উপন্যাসের অধ্যায় দু'টি মুছে দেওয়া হলো সেটা জানার অধিকার নিশ্চয়ই আমার আছে। আমি কতর্ৃপৰের কাছে এর একটা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাইবো। যদি তারা তা দেন তাহলে যে ব্যাখ্যাই তারা দেন না কেন তার পাল্টা আমার বক্তব্যও তাদেরকে শুনতে হবে। কিন্তু যদি কতর্ৃপৰ কোনও ব্যাখ্যা না দেন তাহলে হয়তো আমার তেমন কিছুই করার থাকবে না, সেৰেত্রে এই বস্নগ-এর দেউলিয়াত্ব ঘোষণা ছাড়া, কারণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার এই যুগে যারা একটি উপন্যাসের দু'টি অধ্যায়কেই এতো ভয় পায়, যাদের ধর্ম-বিশ্বাস এতোটাই ঠুনকো যে নেড়ে দিলেই ঝরে যায়, সেখানে তো বলার মতো কিছুই থাকে না।
প্রিয় বস্নগ-বন্ধুদের কাছে আমার একটি কৈফিয়ৎ দেওয়ার আছে, উপন্যাসের অধ্যায় দু'টিকে একেকজন একেকভাবে নিয়েছেন, সেটাই স্বাভাবিক। এটা যদিও ফিকসন, কিন্তু এর মধ্যে যে সত্য কতোখানি তার প্রমাণ এই মুছে ফেলা। কিন্তু এর চেয়েও বড় সত্য হচ্ছে, আমি এই উপন্যাসখানি লেখার আগে অনত্দত শ'খানেক মাদ্রাসা ছাত্র-শিৰক ও কতর্ৃপৰের সঙ্গে কথ বলেছি, এ সম্পর্কিত অনত্দত কয়েক শ' সংবাদ-কিপিং সংগ্রহ করেছি, কোরআন ও হাদীস থেকে যে সকল উদ্ধৃতি দিয়েছি তার কোনওটাই আমার সৃষ্টি নয়, বিভিন্ন বই থেকে নেওয়া। তাই একে কেউ যদি আমার ব্যক্তিগত মতামত বলে ভুল করেন সেটা ভুলই হবে, হঁ্যা বর্ণার দায়-দায়িত্ব আমারই কিন্তু সেটাও লেখক কিংবা বুদ্ধিমান পাঠক মাত্রেই জানেন, চরিত্র-চিত্রনে লেখক অসহায়, সেখানে তার নিজের মতবাদ জাহির করতে গেলে চরিত্র নির্মাণ হয় না, চরিত্র ভেঙে চুরমার হয়। আমি সাইফুরের ৰেত্রে যে কাজটি করতে পারিনি। দুঃখজনক সত্যি হচ্ছে, এই বালকের কষ্টটা আপনারা উপলব্ধি করলেন না, তাকে আপনারা নির্বাসন দণ্ডই দিলেন? হাহ্ এর নাম মুক্তবুদ্ধি?
বস্নগ কতর্ৃপৰের এই আচরণের যারা প্রতিবাদ করেছেন আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তবে কতর্ৃপৰ যদি আমাকে কোনও ব্যাখ্যা না দেন সেৰেত্রে এই বস্নগকে আর মুক্তবুদ্ধির চর্চাস্থল তো বলা যাবে না এবং সেৰেত্রে সিদ্ধানত্দও আপনাদের।
আমরা নিজেদের আধুনিক মনে করছি, লন্ডন-প্যারিস চরে বেড়াচ্ছি, অথচ আমাদের মানসিক গড়ন পড়ে আছে মধ্যযুগে, যে যুগে একটি বালক বলাৎকারের শিকার হলেও সে পায়না কোনও সহানুভ্থতি, তাকে সমাজের পেছনে লুকিয়ে ফেলার সেই ছলটি এখনও সমানভাবেই বর্তমান।
আমার আরও একটি প্রশ্ন, কতর্ৃপৰ আসলে কার সুরে বা নির্দেশে এই কাজটি করেছেন? কি সেই মহাশক্তি যার কাছে মুক্তবুদ্ধিকে এরকম বলি দেওয়া? জানতে ইচ্ছে করে। ভেবেছিলাম যেহেতু আমরা কম্পিউটার ব্যবহার করে ইন্টারনেট-এ ঢোকার মতো বুদ্ধি অর্জন করেছি সেহেতু পশ্চাৎপদতা আর পুরোনোকে আমরা বর্জন করারও ৰমতা লাভ করেছি। আমার ধারণা যে সর্বৈব ভুল, তা বস্নগ কতর্ৃপৰ প্রমাণ করেছেন। আমরা এখনও ভাবছি, উটে চড়ে চাঁদে পেঁৗছুতে, হতে পারে উটের পিঠে বসা লোকটির হাতে একটি কম্পিউটার এবং সেখানে তিনি এই বস্নগটিই সার্ফ করছেন_ কিন্তু এই ভাবনাটি ভাবতে সত্যিই আমার কষ্ট হচ্ছে।
তবে একথাও সত্যি যে, বস্নগ কতর্ৃপৰের এই কাজটি আমাকে আরও জেদি করে দিয়েছে, সত্যপ্রকাশে আরও সাহসী করে দিয়েছে, যা লিখতে চাইনি, তাও এখন লিখতে হবে বলে মনে হচ্ছে।
ভালো থাকুন, হয়তো আবারও দেখা হবে, সে পর্যনত্দ; সত্যপ্রকাশে দ্বিধা-দ্বন্দ্বহীন হোন।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×