সারা দিন টয়লেট আসা-যাওয়া ,স্যালাইন খাওয়া এবং কিভাবে পেটের সমস্যা/ ফুড পয়জন হলো তার কারন অনুসন্ধান করা ছাড়া মাথায় অন্য কিছু কাজ করছিল না ।এভাবে সারাদিন কেটে গেলো ।
রাতে মা ফোন দিলেন, আমি কেমন আছি সব কিছু জানার (যাতে মা টেনশন না করে সব কিছু ভালো বলে আশ্বত্ব করলাম) ।
মা-বাবা দুই জন গ্রামে থাকে । বাবা সাত বছর আগে শিক্ষকতা থেকে আবসর নিয়েছে ।জীবিকার বাস্তবতার কারনে আমরা তিন ভাই কেউ গ্রামে থাকি না ।
মা বললেন বাসার মোবাইলে ব্যালেন্স নাই, রাত হয়ে গেছে কাউকে পাচ্ছি না যে রিচার্জ করার জন্য পাঠাবো । তোমার আশপাশে রিচার্জের দোকান থাকলে রিচার্জ করে দিয়ো, রাতে হয়তো জরুরী প্রয়োজন হতে পারে । আমি বললাম এখুনি দিচ্ছি । এরপর ইজিতে লগইন (ইজি.com.bd) আমার এটিএম কার্ড থেকে রিচার্জ করে দিলাম । আগে কখনো ইজিতে রিচার্জ না করলেও এক পরিচিত ভাই একদিন ফোন করে বলেছিল যে, আমার এবং তোমার ভাবির নাম্বারে রিচার্জ করেছি আমারটাই রিচার্জ হয়েছে , তোমার ভাবির নম্বারে এখন হয় নাই, হটলাইনে ফোন দিচ্ছি রিসিপ করছে না । যাই হোক ভাইয়ের কাছে সেদিন অনেক প্রশংষা পাইয়েছিলাম, ভাইকে বুঝানোর ব্যার্থ চেষ্টা করলাম যে রিচার্জ যদি না হত আপনার টাকা রিফান্ড হত (এখন হয়তো অনেকে এড ভেবে গালি দিলেতে চাইলে অগ্রিম মাফ চেয়ে নিচ্ছি)।
মা সাথে সাথে আবার ফোন দিলেন , কনফার্মেশন করলেন যে রিচার্জ হইছে, আমি এতো কষ্ট করে তারাতারি করার কি প্রয়োজন ছিলো এ জাতীয় কথা । যাইহোক মা যে খুব খুশি হইছে তার কথায় বুঝতে পারছিলাম ।
কোন অলৌকিক কারনে হোক আর কাকতালীয় ভাবে হোক মা হয়তো বুঝতে পারছে আমি কোন সমস্যায় আছি , বিভিন্ন প্রশ্ন করতে করতে হঠাৎ প্রশ্ন রাতে কি দিয়ে ভাত খাইছি ?? আগে মায়ের কাছে পরোক্ষ উত্তর দিলে ও, আমি মায়ের কাছে কখনো মিথ্যা বলি না, এবার আর উত্তর না দিয়ে যাই কোই , আসল কথাটা বলে ফেললাম যে,পেটের সমস্যা রাতে ভাত খাই নাই, চিড়া ভিজাইয়ে গুর দিয়ে খেয়েছি(কোন লজিক আছে কিনা জানি না ,ছোট বেলায় মায়ে কাছে শিখছিলাম পেটের সমস্যা হলে ভাতের পরিবর্তে চিড়া খেতে ) । এর শুরু হলো কতবার টয়লেটে গিয়াছি, কিভাবে সমস্যা হলো ইত্যাদি ...। তোর সমস্যা তুই আগে জানাইলি না কেন !কেন রিচার্জ করতে গেলি..( মায়ের কথার অপরাধীর সুর ) ।
মাকে আর বুঝানোর কোন চেষ্টা করলাম না যে, আমি শুয়ে শুয়ে রিচার্জ করে দিয়েছি। আমি জানি বুঝানোর চেষ্টা করে ও কোন লাভ হবে না, সুবোধ ছেলের মত সব কিছু শুনে যেত লাগলাম , আর মনে মনে নিজেকে তথাকথিত আজকের ঈশ্বর চন্দ্রবিদ্যাসাগর(ছোটবেলায় ঈশ্বর চন্দ্রবিদ্যাসাগরের মাঝরাতে মায়ের চিঠি পেয়ে নদী সাতরায়ে পার হয়ে মায়ের কাছে আসার গল্প মনে পড়ে) এর মতো ভাবতেই মনের আজান্তেই হেসে ফেললাম ..।
সকালে মা আবার ফোন দিলেন ,এখন কি অবস্তা ? আমি মাকে বলালম ভালো হয়ে গেছি আর টয়লেটে যাওয়ার লাগছে না , এখন অফিস যওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি । একথা শুনার পড়ে গত কালের চেয়ে হাজার গুন অতংকিত কন্ঠে বললেন আজকে অবরোধ তোর অফিস না গেলে হয় না , খবরে শুনছি গাড়িতে বোমা দিয়ে নিরহ মানুষদের পুরে মারছে । এবার মায়ের কাছে মিথ্যা বলে ফেললাম যে, মা অফিস কাছে গাড়িতে উঠবো না, হেটে হেটে যাবো । মনে মনে ভাবলাম সারা বছর যদি হরতাল /অবরোধ থাকে তা হলে কি আমরা হাত পা গুটাইয়া বসে থাকবো , আমাদের মত সাধারন মানুষ শত কষ্ট/ সীমাবদ্ধতার মধ্য কাজ করছে বলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল থেকে উন্নত রাষ্ট্রে দিকে যাচ্ছে । আর এসব জাতীয় বীররা স্বাভাবিক মৃতৃর নিশ্চয়তা তো পাচ্ছে না , এদেরকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে কাবাব বানাইয়ে কবরের টিকিটের ব্যাবস্থা করা হচ্ছে ।
ফাকিস্তান বা আফগানীস্খানে আত্তঘাতী হামলা চালানো হয় ,কারন স্পঠ যে বেচে থাকলে ফাসিতে ঝুলে মরতে হবে, প্রশাষনের হাতে তাকে ধরা পরতেই হবে । আমি ঝামেলা এরানোর জন্য এটুকুই বলবো, আমাদের দেশে সম্পূর্ন বিপরীত, তাই আত্তঘাতী হামলার কোন প্রয়োজন না, দিন দুপুরে মানুষকে জবাই করবে,জীবন্ত পুরে মারবে, এবং এসব লাইফ টেলিকাস্ট করলে ও দায়িত্ব প্রাপ্তরা বলবে য়ুয়ার লুকিং ফর শত্রুজ....... ।