somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছিট্মহলের অনেকেই এখন আর ভারতে যেতে চান না

২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছিট্মহলে রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল টাওয়ার ইত্যাদি উন্নয়নের বাস্তব গতি দেখে ভারতের নাগরিকত্ব নেয়া (ট্রাভেল পাসধারী) ৭৫ জন নাগরিক এখন আর ভারতে যেতে চান না।
এ কারণে গতকাল ৩য় দফায় তাদের ভারতে যাওয়ার কথা থাকলেও কেউ যাননি। ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বাগভান্ডর বিজিবি ক্যাম্পের নিকট আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ৯৬২-এর ১এস-এর পাশের রাস্তা দিয়ে দিয়ে তাদের ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। সে মোতাবেক ছিল প্রশাসনের সব প্রস্তুতি। কিন্তু বিকাল ৫টা পর্যন্ত কেউ আর আসেননি এ সীমান্ত চেকপোস্টে।

এর আগে ২৪শে নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় ৩০টি পরিবারে ১৫৭ জন এবং ২২শে নভেম্বর প্রথম দফায় ১৫টি পরিবারের ৭২ জনসহ মোট ২২৯ জন ভারতে যায়। এর মধ্যে সর্ববৃহৎ ছিটমহল দাশিয়ারছড়ার ২০৫ জন এবং ছোট গাড়লঝোড়ার ২৪ জন নাগরিক।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছির উদ্দিন মাহমুদ জানান, গতকাল সকল আয়োজন থাকলেও কেউ ভারতে যায়নি। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত ১২টি সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলের জনসংখ্যা ১ হাজার ৬৩০টি পরিবারে ৮ হাজার ১৩২ জন। এর মধ্যে ৭৩ পরিবারের ১৪৭ জন মুসলমান এবং ১৫৮ জন হিন্দুসহ মোট ৩০৫ জন ভারতে যাওয়ার মতামত দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ১৯ পরিবারের ৭০ জন এখন আর ভারতে যেতে চাচ্ছে না মর্মে আবেদন করেছেন। এদের অধিকাংশই হিন্দু পরিবার। একজনের মৃত্যু হয়েছে। ট্রাভেল পাসধারী বাঁধন ও হাজরা বেগম পূর্ব থেকেই ভারতে অবস্থান করছেন। অপর তিন জন কোন প্রকার যোগাযোগ রাখছেন না। ফলে ধারণা করা হচ্ছে এরা কেউ আর ভারতে যাবে না। তবে এরা ইচ্ছে করলে রিজার্ভ ডেট ২৯শে নভেম্বর ভারতে যেতে পারবে।

বিলুপ্ত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খান জানান, নাড়ীর টানে এসব মানুষ বাংলাদেশে থেকে যেতে চায়। মূলত বুঝতে না পেরে তারা ভারতে যাওয়ার আবেদন করে। বিশেষ করে ছিটমহল বিনিময় বিরোধী সংগঠন ইউনাইটেড কান্সিলের সভাপতি মিজানুর রহমানের প্ররোচনায় তারা আবেদন করে। এখন তারা ভুল বুঝতে পেরেছে। এ কারণে এখন তারা ভারতে যেতে চায় না। এমনকি মিজানুরের স্ত্রী আরজিনা ও শিশুপুত্র হিমালয়ও ভারতে যায়নি।
লিটন চন্দ্র আক্ষেপ করে বলেন, নাগরিকত্বের চয়েজ দেয়ার আগে কয়েক জন নেতা আমাদের এখানে প্রতিদিন ভারতীয় পত্র-পত্রিকা এনে ভারত সরকার কি কি সুযোগ সুবিধা দেবে তা পড়ে পড়ে শোনাতো। এতেও অনেকে আকৃষ্ট হয়েছে। ভারতীয় উত্তরবঙ্গ ও প্রতিদিন পত্রিকার বরাত দয়ে জানানো হয় ভারত সরকার ছিটবাসী প্রতি পরিবারকে একটি করে ফ্ল্যাটবাড়ি দেবে, ৫ বছরে যাতায়াতের জন্য ট্রাভেলস ডকুমেন্ট দেবে। ২ বছরের শুকনো খাবার, গবাদিপশুর খাবারসহ সর্বপ্রকার খাবার সরবরাহ করবে। এছাড়াও পরিবারপ্রতি এককালীন ৫ লাখ করে টাকা অনুদান দেবে। তাদের সাফ জবাব "এ্যাটি জন্মিছি এ্যাটি মরমো। হামরা ভারত যাবার নই। ওমরা গুলা জোর করি ভারত যাবার জন্য নাম নেকাইছে। এ্যালা বুঝছি ক্ষতি হইছে।"

জেলা প্রশাসক কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব প্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল মারুফ জানান, চলতি বছরের গত ৩১শে জুলাই মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের অভ্যন্তরে ১২টিসহ বাংলাদেশে ১১১টি ছিটমহল একীভূত হয়। গত ৬-১৬ই জুলাই এ জনপদগুলোতে দুদেশের যৌথ সমীক্ষা পরিচালিত হয়। যৌথ সমীক্ষায় হেড কাউন্টিং হালনাগাদ এবং অধিবাসীদের নাগরিকত্ব বিষয়ে মতামত গ্রহণ করা হয়। এ সময় কুড়িগ্রাম জেলায় অন্তর্ভুক্ত ১২টি ছিটমহলের ৩০৫, লালমনিরহাট জেলায় অন্তর্ভুক্ত ৫৯টি ছিটমহলের ১৯৭ এবং পঞ্চগড় জেলার ৩৬টি ছিটমহলের ৪৮৭ জন নিয়ে মোট ৯৮৯ জন ভারতের নাগরিকত্ব বহাল রেখে সে দেশে যাওয়ার জন্য মতামত প্রদান করেন। ১১ দিনব্যাপী যৌথ জনগণনা জরিপ চলাকালীন ভারত যেতে কুড়িগ্রামের ৩টি ছিটমহলের ৩০৫ জন মতামত প্রদান করেন। এদের মধ্যে ফুলবাড়ির দাশিয়ারছড়া থেকে ৫৮টি পরিবারের ২৮১ এবং ভূরুঙ্গামারীর ২টি ছিটের ৬ পরিবারের ২৪ জন সদস্য। ভারতের নাগরিকত্ব বহাল রাখার জন্য ৩০৫ জনের মধ্যে ২৮১ জন ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্য থেকে দাশিয়ারছড়ার ১৯টি পরিবারের ৭০ জন নাগরিক তাদের মত পাল্টিয়ে এ দেশে থাকতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বরাবর আবেদন করেছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৪
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×