somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভুমিকম্প কেন হয়? এর বৈজ্ঞানিক বা ধর্মীয় ব্যাখ্যা কি?

১৩ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাম্প্রতিক সময়টা ভূমিকম্প দিয়েই যাচ্ছে। একটার পর একটা
ভূমিকম্প জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই
ভূমিকম্প নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে। ভূমিকম্প কেন হয় তা
নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও এর ক্ষয়-ক্ষতি বা ধ্বংশলীলা সম্পর্কে
কারো প্রশ্ন থাকার কথা নয়। কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া
নেপালের দিকে তাকালেই তা সহজে বুঝা যায়। সরকারী হিসাবে
কয়েক হাজার মৃতের কথা বলা হলেও প্রকৃত সংখ্যাটা লাখের
উপরে। এখানে মৃতের সংখ্যা হিসেব করা হয়েছে শুধুমাত্র মৃত
উদ্ধারের উপর ভিত্তি করে। কিন্তু ধুলায় মিশে যাওয়া হাজার
হাজার বাড়ি-ঘরের মানুষগুলো কোথায় তার হিসেব কারো কাছে
নেই। এছাড়া আমরা ২০১০ সালের হাইতিতে ঘটে যাওয়া
ভূমিকম্পের কথাও স্মরণ করতে পারি যেখানে পোর্ট অ প্রিন্স
শহরটি মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। বলা হয়ে থাকে তিন লক্ষ
মানুষ জীবন হারিয়েছিল এ ভুমিকম্পে, ঘর ছাড়া হয়েছিল ১০ লক্ষ
মানুষ, আর যারা বেঁচে ছিল তাদের অধিকাংশই বরণ করেছিল
আজীবনের পঙ্গুত্ব। শুধু নেপাল বা হাইতি নয় পেছনে ফিরে
তাকালে এরকম অসংখ্য ঘটনা আমাদের সামনে পড়ে। একটি
প্রতিবেদনে পড়লাম সম্প্রতি ভূমিকম্পের মাত্রা বেড়ে গেছে।
কিন্তু এ ভুমিকম্পের কারন কি? কেনই বা ঘটে? তার জন্য বিজ্ঞান
বা ধর্মীয় কোন যুক্তি আছে কি না তা দেখার জন্যই আজকের এই
পোস্টটি।



নতুন নতুন টেকনোলোজি খবর, সফটওয়ার, এন্ডয়েড এপসসহ যাবতীয় টেকনোলজি টিপস পেতে এখান থেকে ঘুরে আসুন
আশা করি ভাল কিছু পাবেন ও ভাল লাগবে।




বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাঃ
জ্ঞানের বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া মতে “ভূ-অভ্যন্তরে শিলায়
পীরনের জন্য যে শক্তির সঞ্চয় ঘটে, সেই শক্তির হটাৎ মুক্তি ঘটলে
ভূ-পৃষ্ঠ ক্ষনিকের জন্য কেঁপে ওঠে এবং ভূ-ত্বকের কিছু অংশ
আন্দোলিত হয়। এই রূপ আকস্মিক ও ক্ষনস্থায়ী
কম্পনকে ভূমিকম্প (Earthquake) বলে। কম্পন-তরঙ্গ থেকে যে শক্তির
সৃষ্টি হয়, তা ভূমিকম্পের মধ্যমে প্রকাশ পায়। এই তরঙ্গ ভূ-গর্ভের
কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলে উৎপন্ন হয় এবং উৎসস্থল থেকে চতুর্দিকে
ছড়িয়ে পরে। পৃথিবীর অভ্যন্তরে যেখান থেকে ভূকম্প-তরঙ্গ উৎপন্ন
হয়, তাকে ভূমিকম্পের কেন্দ্র বলে। এই কেন্দ্র থেকে কম্পন ভিন্ন
ভিন্ন তরঙ্গের মাধ্যমে সব দিকে ছরিয়ে পড়ে। শিলার পীড়ন-
ক্ষমতা সহ্যসীমার বাহিরে চলে গেলে শিলায় ফাটল ধরে ও
শক্তির মুক্তি ঘটে। তাই প্রায়শই ভূমিকম্পের কেন্দ্র চ্যুতিরেখা
অংশে অবস্থান করে। সাধারনত ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৬ কিমি.-র মধ্যে এই
কেন্দ্র অবস্থান করে। তবে ৭০০ কিমি. গভীরে গুরুমণ্ডল (Mantle)
থেকেও ভূ-কম্পন উত্থিত হতে পারে”।
ধর্মীয় ব্যাখ্যাঃ
হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান ধর্ম সম্পর্কে আমার তেমন জ্ঞান নেই। ঐ
ধর্মগ্রন্থগুলোতে ভূমিকম্প নিয়ে কোন আলোচনা বা ব্যাখ্যা আছে
কি না জানি না। তাই আমি শুধু ইসলাম ধর্মের কয়েকটি উদ্ধৃতি
দিচ্ছি। যদিও ইসলামিক ব্যাখ্যাটা ১০০% দেয়ার মত জ্ঞানী নই
আমি। আমি শুধু আমার জানা পবিত্র ক্বোরআনের কয়েকটি
আয়াতের উদ্ধৃতি দেবো।
১। অতঃপর পাকড়াও করল তাদেরকে ভূমিকম্প। ফলে সকাল বেলায়
নিজ নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল। (আল আ’রাফঃ৭৮)
ﻓَﺄَﺧَﺬَﺗْﻬُﻢُ ﺍﻟﺮَّﺟْﻔَﺔُ ﻓَﺄَﺻْﺒَﺤُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺩَﺍﺭِﻫِﻢْ ﺟَﺎﺛِﻤِﻴﻦَ ﴿٧ : ٧٨ ﴾
২। অনন্তর পাকড়াও করল তাদেরকে ভূমিকম্প। ফলে তারা সকাল
বেলায় গৃহ মধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে রইল। (আল আ’রাফঃ ৯১)
ﻓَﺄَﺧَﺬَﺗْﻬُﻢُ ﺍﻟﺮَّﺟْﻔَﺔُ ﻓَﺄَﺻْﺒَﺤُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺩَﺍﺭِﻫِﻢْ ﺟَﺎﺛِﻤِﻴﻦَ ﴿٧ : ٩١ ﴾
৩। কিন্তু তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলল; অতঃপর তারা ভূমিকম্প
দ্বারা আক্রান্ত হল এবং নিজেদের গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে রইল। (আল
আনকাবুতঃ ৩৭)
ﻓَﻜَﺬَّﺑُﻮﻩُ ﻓَﺄَﺧَﺬَﺗْﻬُﻢُ ﺍﻟﺮَّﺟْﻔَﺔُ ﻓَﺄَﺻْﺒَﺤُﻮﺍ ﻓِﻲ ﺩَﺍﺭِﻫِﻢْ ﺟَﺎﺛِﻤِﻴﻦَ ﴿٢٩ : ٣٧ ﴾
৪। অবশেষে যখন আমার হুকুম এসে পৌঁছাল, তখন আমি উক্ত জনপদকে
উপরকে নীচে করে দিলাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর পাথর
বর্ষণ করলাম। (হুদঃ ৮২)
ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺟَﺎﺀَ ﺃَﻣْﺮُﻧَﺎ ﺟَﻌَﻠْﻨَﺎ ﻋَﺎﻟِﻴَﻬَﺎ ﺳَﺎﻓِﻠَﻬَﺎ ﻭَﺃَﻣْﻄَﺮْﻧَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺣِﺠَﺎﺭَﺓً ﻣِّﻦ ﺳِﺠِّﻴﻞٍ ﻣَّﻨﻀُﻮﺩٍ
‏[ ١١: ٨٢ ]
৫। অতঃপর আমি জনপদটিকে উল্টে দিলাম এবং তাদের উপর
কঙ্করের প্রস্থর বর্ষণ করলাম। (আল হিজরঃ৭৪)
ﻓَﺠَﻌَﻠْﻨَﺎ ﻋَﺎﻟِﻴَﻬَﺎ ﺳَﺎﻓِﻠَﻬَﺎ ﻭَﺃَﻣْﻄَﺮْﻧَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺣِﺠَﺎﺭَﺓً ﻣِّﻦ ﺳِﺠِّﻴﻞٍ ‏[ ١٥: ٧٤ ]
৬। তিনিই (আল্লাহ) জনপদকে শুন্যে উত্তোলন করে নিক্ষেপ
করেছেন। (আন নাজমঃ৫৩)
ﻭَﺍﻟْﻤُﺆْﺗَﻔِﻜَﺔَ ﺃَﻫْﻮَﻯٰ ‏[ ٥٣ : ٥٣ ]
৭। আর মূসা বেছে নিলেন নিজের সম্প্রদায় থেকে সত্তর জন লোক
আমার প্রতিশ্রুত সময়ের জন্য। তারপর যখন তাদেরকে ভূমিকম্প
পাকড়াও করল, তখন বললেন, হে আমার পরওয়ারদেগার, তুমি যদি
ইচ্ছা করতে, তবে তাদেরকে আগেই ধ্বংস করে দিতে এবং
আমাকেও। আমাদেরকে কি সে কর্মের কারণে ধ্বংস করছ, যা
আমার সম্প্রদায়ের নির্বোধ লোকেরা করেছে? এসবই তোমার
পরীক্ষা; তুমি যাকে ইচ্ছা এতে পথ ভ্রষ্ট করবে এবং যাকে ইচ্ছা
সরলপথে রাখবে। তুমি যে আমাদের রক্ষক-সুতরাং আমাদেরকে
ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের উপর করুনা কর। তাছাড়া তুমিই তো
সর্বাধিক ক্ষমাকারী। (আল আ’রাফঃ১৫৫)
ﻭَﺍﺧْﺘَﺎﺭَ ﻣُﻮﺳَﻰٰ ﻗَﻮْﻣَﻪُ ﺳَﺒْﻌِﻴﻦَ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﻟِّﻤِﻴﻘَﺎﺗِﻨَﺎ ۖ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﺧَﺬَﺗْﻬُﻢُ ﺍﻟﺮَّﺟْﻔَﺔُ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺏِّ ﻟَﻮْ ﺷِﺌْﺖَ
ﺃَﻫْﻠَﻜْﺘَﻬُﻢ ﻣِّﻦ ﻗَﺒْﻞُ ﻭَﺇِﻳَّﺎﻱَ ۖ ﺃَﺗُﻬْﻠِﻜُﻨَﺎ ﺑِﻤَﺎ ﻓَﻌَﻞَ ﺍﻟﺴُّﻔَﻬَﺎﺀُ ﻣِﻨَّﺎ ۖ ﺇِﻥْ ﻫِﻲَ ﺇِﻟَّﺎ ﻓِﺘْﻨَﺘُﻚَ ﺗُﻀِﻞُّ ﺑِﻬَﺎ
ﻣَﻦ ﺗَﺸَﺎﺀُ ﻭَﺗَﻬْﺪِﻱ ﻣَﻦ ﺗَﺸَﺎﺀُ ۖ ﺃَﻧﺖَ ﻭَﻟِﻴُّﻨَﺎ ﻓَﺎﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﻭَﺍﺭْﺣَﻤْﻨَﺎ ۖ ﻭَﺃَﻧﺖَ ﺧَﻴْﺮُ ﺍﻟْﻐَﺎﻓِﺮِﻳﻦَ ﴿٧ :
١٥٥﴾
৮। যেদিন (কেয়ামতের দিন) প্রকম্পিত করবে প্রকম্পিতকারী, (আন
নাজিয়াতঃ ৬)
ﻳَﻮْﻡَ ﺗَﺮْﺟُﻒُ ﺍﻟﺮَّﺍﺟِﻔَﺔُ ﴿ ٧٩ : ٦ ﴾
৯। যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী। এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে
চুরমার হয়ে যাবে। অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা। (আল
ওয়াক্বিয়াঃ৪-৬)
ﺇِﺫَﺍ ﺭُﺟَّﺖِ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽُ ﺭَﺟًّﺎ ‏[ ٥٦ : ٤ ]
ﻭَﺑُﺴَّﺖِ ﺍﻟْﺠِﺒَﺎﻝُ ﺑَﺴًّﺎ ‏[ ٥٦ : ٥ ]
ﻓَﻜَﺎﻧَﺖْ ﻫَﺒَﺎﺀً ﻣُّﻨﺒَﺜًّﺎ ‏[ ٥٦ : ٦ ]
১০। সেদিন আকাশ প্রকম্পিত হবে প্রবলভাবে। এবং পর্বতমালা হবে
চলমান, (আত তুরঃ৯-১০)
ﻳَﻮْﻡَ ﺗَﻤُﻮﺭُ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀُ ﻣَﻮْﺭًﺍ ‏[ ٥٢: ٩ ]
ﻭَﺗَﺴِﻴﺮُ ﺍﻟْﺠِﺒَﺎﻝُ ﺳَﻴْﺮًﺍ ‏[ ٥٢: ١٠ ]
১১। যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে, যখন সে তার বোঝা
বের করে দেবে এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ? সেদিন সে তার
বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে। (আয যিলযালঃ১-৪)
ﺇِﺫَﺍ ﺯُﻟْﺰِﻟَﺖِ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽُ ﺯِﻟْﺰَﺍﻟَﻬَﺎ ‏[ ٩٩ : ١ ]
ﻭَﺃَﺧْﺮَﺟَﺖِ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽُ ﺃَﺛْﻘَﺎﻟَﻬَﺎ ‏[ ٩٩ : ٢ ]
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﺈِﻧﺴَﺎﻥُ ﻣَﺎ ﻟَﻬَﺎ ‏[ ٩٩ : ٣ ]
ﻳَﻮْﻣَﺌِﺬٍ ﺗُﺤَﺪِّﺙُ ﺃَﺧْﺒَﺎﺭَﻫَﺎ ‏[ ٩٩ : ٤ ]
১২। যেদিন পৃথিবী পর্বতমালা প্রকম্পিত হবে এবং পর্বতসমূহ হয়ে
যাবে বহমান বালুকাস্তুপ। (আল মুযযাম্মিলঃ১৪)
ﻳَﻮْﻡَ ﺗَﺮْﺟُﻒُ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽُ ﻭَﺍﻟْﺠِﺒَﺎﻝُ ﻭَﻛَﺎﻧَﺖِ ﺍﻟْﺠِﺒَﺎﻝُ ﻛَﺜِﻴﺒًﺎ ﻣَّﻬِﻴﻠًﺎ ﴿٧٣ : ١٤ ﴾
১৩। হে লোক সকল! তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর। নিশ্চয়
কেয়ামতের প্রকম্পন একটি ভয়ংকর ব্যাপার। (আল হাজ্জ্বঃ১)
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺭَﺑَّﻜُﻢْ ۚ ﺇِﻥَّ ﺯَﻟْﺰَﻟَﺔَ ﺍﻟﺴَّﺎﻋَﺔِ ﺷَﻲْﺀٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ ﴿٢٢ : ١ ﴾
উপরের আয়াতগুলোকে দুভাগে বিভক্ত করা যায়। ১-৭ পর্যন্ত
আয়াতগুলোতে বিভিন্ন সম্প্রদায়কে সৃষ্টিকর্তার আদেশ অমান্য
করার কারণে শাস্তির কথা রয়েছে। তম্মধ্যে ৪,৫,৬ নং আয়াতগুলো
একটি ঐতিহাসিক ঘঠনার বর্ণনা করে। তাহলো, আমরা জর্দানের
সেই Death Sea বা মৃত সাগরের নাম শুনেছি যাতে কোন মাছ
বাঁচতে পারে না এবং সাঁতার ছাড়া মানুষ শুয়ে থাকতে পারে
কিন্তু ডুবে না। ঐ এলাকাটি ছিল আল্লাহর প্রেরিত রাসূল হযরত
লূত (আঃ) এর। তাঁর সম্প্রদায়ের মধ্যে সমকামিতা ছিল অতি
সাধারণ একটি ব্যাপার। লূত (আঃ) তাঁদেরকে অনেক উপদেশ
দেয়ার পরও ঐ কাজ থেকে তাদেরকে ফেরাতে পারেন নি।
অবশেষে আল্লাহ লূত (আঃ) কে তাঁর অনুসারীদের নিয়ে রাত শেষ
হওয়ার আগেই জনপদ ছেড়ে চলে যাওয়ার আদেশ দিলেন। লূত (আঃ)
তাই করলেন এবং ঐ রাতেই আল্লাহ জনপদটিকে উল্ঠিয়ে দিলেন
যার ফলে নিচের খনিজ লবন ও অন্যান্য উপাদান উপরে উঠে আসে
এবং উপরের সবকিছু ভূ-গর্ভে চলে যায়। সৃষ্টি হয় আজকের Death Sea
বা মৃত সাগর (বিস্তারিত আলোচনা হাদিস আর সংশ্লিষ্ট
সূরাগুলোতে রয়েছে) । বিজ্ঞানীদের মতে ঐ সাগরের পানিতে
লবণের ঘনত্ব এত বেশি যে তাতে কোন প্রাণী বেঁচে থাকা
অসম্ভব।
৮-১৩ আয়াতগুলো কেয়ামতের দিনটি কী রকম হবে, পৃথিবীতে কী
ঘঠবে তার একটি বর্ণনা মাত্র। অর্থাৎ কেয়ামতের দিন যে সব
ঘঠনাবলী ঘঠবে তার অন্যতম একটি হলো ভূমিকম্প। পবিত্র ক্বোরআন
আর হাদীসের বর্ণনা মতে কেয়ামতের দিন প্রচন্ড ভূমিকম্প হবে যা
দেখে মানুষ ভীত-সন্ত্রস্থ হয়ে এদিক উদিক পালাতে শুরু করবে।
উক্ত আয়াতগুলো দ্বারা বুঝা যায় যে, ভূমিকম্প সৃষ্টিকর্তার
আদেশে সংঘঠিত একটা ঘঠনা। পবিত্র ক্বোরআনের মতে, পৃথিবীর
শুরু থেকেই আল্লাহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে অসংখ্য নবী-রাসূল
পাঠিয়েছেন এবং তাঁদের মাধ্যমে তাঁদের সম্প্রদায়কে আদেশ-
উপদেশ দিতেন। যারা নবী-রাসূলের বিরুদ্ধে গেছে, আল্লাহর
আদেশ অমান্য করেছে আল্লাহ তাদেরকে বিভিন্নভাবে শাস্তি
প্রদান করেছেন। বজ্রপাত, প্লাবন, ঘূর্ণিঝড়, প্রস্তরসহ বায়ু,
জীবানুযুক্ত বায়ু, ভূমিকম্প, মহামারি রোগ, দুর্ভিক্ষ সহ অসংখ্য
শাস্তির কথা পবিত্র ক্বোরআনে রয়েছে। এছাড়া কাউকে আবার
পানিতে ডুবিয়ে মারা হয়েছে। যেমন বর্তমানে মিশরের জাদুঘরে
রক্ষিত ফেরাউন তার একটি জলন্ত উদাহরন। আল্লাহ ফেরাউন ও
তার বাহিনীকে নীলনদে ডুবিয়ে মেরেছিল। এ ব্যাপারে সূরা
ইউনূস, সূরা আল আ’রাফ, সূরা ত্বোহা সহ পবিত্র ক্বোরআনের
বিভিন্ন জায়গায় এবং হাদীসে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। এসব
শাস্তি যেমন অপরাধের জন্য সাজা তেমনি পরবর্তী সম্প্রদায়ের
জন্য শিক্ষা, যাতে তারা সৃষ্টিকর্তাকে চিনতে পারে। ক্বোরআন
আর হাদীস ব্যাখ্যামতে পাপাচারের কারণে আল্লাহ কোন
জনবসতিতে এ ধরনের শাস্তি প্রদান করে থাকেন।
তুলনামূলক ব্যাখ্যাঃ
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আর পবিত্র ক্বোরআনের আলোচনায় কোন মত
পার্থক্য নেই। বিজ্ঞান ভূমিকম্প কিভাবে ঘঠে, ভূমিকম্পের সময়
ভূগর্ভের অবস্থা এবং এর ফলাফল কী হয় তা নিয়ে আলোচনা
করেছে। এটি ক্বোরআনের বিরুদ্ধে নয়। মৃত্যুর পর মানুষের কি
শাস্তি হবে বা কেয়ামতের দিন কী ঘঠবে তার সামান্যতম নমুনা
আল্লাহ পৃথিবীতে দেখান যাতে মানুষ ঐ দিন সম্পর্কে অনুমান
করতে পারে এবং সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করে। ভূমিকম্প তেমনই
একটি ঘঠনা। এ ব্যাপারে ক্বোরআন বলে “নিশ্চয় এতে
চিন্তাশীলদের/জ্ঞানীদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে ” (সূরা
আল হিজরঃ৭৫)। অর্থাৎ মানুষের জন্য সৃষ্টিকর্তা অনেক নিদর্শন
রেখেছেন যাতে তারা সৃষ্টিকর্তার প্রতি ঈমান আনে। এ
ব্যাপারে পবিত্র ক্বোরআন বলে “নিশ্চয় নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে
মুমিনদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে ” (আল জাসিয়া:৩)।
সুতরাং বলা যায় ভূমিকম্প সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে একটি শাস্তি,
ভয়, একটি নিদর্শন। এত কিছুর পরও যারা বিশ্বাস করবে না তাদের
জন্য ক্বোরআন বলছে-“ তিনি (আল্লাহ) তোমাদের জন্যে
পৃথিবীকে সুগম করেছেন, অতএব, তোমরা তার কাঁধে বিচরণ কর
এবং তাঁর দেয়া রিযিক আহার কর। তাঁরই কাছে পুনরুজ্জীবন
হবে। তোমরা কি ভাবনামুক্ত হয়ে গেছ যে, আকাশে যিনি
আছেন তিনি পৃথিবীকে দিয়ে তোমাদের গ্রাস করাবেন না,
যখন তা কাঁপতে থাকবে? ” (সূরা আল মূলকঃ আয়াত-১৫-১৬)।


নতুন নতুন টেকনোলোজি খবর, সফটওয়ার, এন্ডয়েড এপসসহ যাবতীয় টেকনোলজি টিপস পেতে এখান থেকে ঘুরে আসুন
আশা করি ভাল কিছু পাবেন ও ভাল লাগবে।


.
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১৫ সকাল ৯:২০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×