আজ বাগেরহাটে একজনকে 'ক্রসফায়ারে' দিল। আমার এক বন্ধুর আপন মামা। আমার সাথেও তার দেখা হয়েছে কয়েকবার। কথাও হয়েছে। বহুদিন বিভিন্ন মামলায় বিনা বিচারে জেল খেটেছে। ৩/৪ মাস আগে ছাড়া পেয়েছে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ঠিকাদারী করত।
যাই হোক, গতকাল রাতে বাসায় ফেরার পথে ডিবি পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু কোথায় নিয়ে যায় তার হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। রাতেই বাগেরহাটের বেশ কয়েকজন সাংবাদিক অনেক খোঁজাখুজির পর জানতে পারে এসপি অফিসে রাখা হয়েছে তাকে। সাংবাদিকরা তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করে কর্তৃপক্ষের কাছে। জিম্মাদারী নিতে চান কয়েকজন। বলেন কোন অঘটন ঘটালে দায়িত্ব নেবেন তারা। কিন্তু তাকে ছাড়েনি কর্তৃপক্ষ।
রাতেই খবর বের হয় দুজনকে 'ক্রসফায়ার' দেয়া হবে আজ। ভীষণ চিন্তায় পড়ে বন্ধুর আত্মীয়স্বজন। আমাকে জানায় সেকথা। আমি শান্তনা দেই তাকে। যেহেতু সাংবাদিকরা দেখেছে সেহেতু 'ক্রসফায়ার' হয়তো করবে না। কিছুটা আশ্বস্ত হলেও আশঙ্কার কথাই জানালো সে।
অবশেষে ভোররাতে 'ক্রসফায়ার'। সকালে গুলিবিদ্ধ লাশ। সাজানো নাটক। পুলিশ বলছে- সে নাকি চরমপন্থী দলের সদস্য। এভাবেই নিভে গেল একটি জীবন প্রদীপ। আমি ঘটনাটা জানতে পারি অফিসে বসে সকাল ১০টার দিকে টিভিতে। যা শুনেছিলাম গতকাল রাত ১২টায়। তারই বাস্তবায়ন। শুনেছিলাম দু'জনকে দেয়া হবে ক্রসফায়ারে। কিন্তু দেখলাম একজন। ভাবলাম হয়তো মুক্তি পেয়েছে বন্ধুর মামা। ফোন করলাম বন্ধুকে। বললো দেখনি টিভিতে?
এই আমাদের দেশ। সোনার বাংলাদেশ। প্রিয় মাতৃভূমি।
(সারাটা দিন খুবই খারাপ লাগল। কোন কাজে মন বসাতে পারিনি। আগেই লিখতে চেয়েছিলাম এটি। কিন্তু ভালো লাগেনি।)