ছেলের নাম দুঃখ, মধ্যবিত্ত বাপ-মায়ের আমরণ লালিত শোক, পৃথিবীতে কি একটাও ভাল ছেলে নেই!!
ঘটনা-০) একটি মাত্র ছেলে সন্তানের আশা আল্লাহ পুরুণ করল না। পুত্রসন্তানের কথা চিন্তা করে আজ চার-চারটি কন্যা সন্তান। ভাবি, বাবা-মা হিসেবে আমাদের মত হতভাগা আর কেউ নাই।
ঘটনা-১) ভাবি জানেন, রহমত সাহেবের ছেলে নেশা-পানি তো করতোই, ইদানিং নাকি বাপকে পর্যন্ত মারে, নেশার টাকা দেয়না এজন্য মারে। এরকম ছেলে কোন মায়ের গর্ভে আল্লাহ যেন না দেয়। আসলে, একটা ছেলে মানুষ করা ভাগ্যের ব্যাপার।
ঘটনা-২) বাপ-মা হিসেবে একটাই আশা ছিল জীবনে, ছেলেটা যাতে মানুষের মত মানুষ হয়। ছোটবেলায় লেখাপড়ায় ভালই ছিল, বড় হয়ে রাজনীতিতে যেয়ে মাস্তানি শুরু করল, আজ ধর্ষন মামলার জেলে আটকা। এই জানোয়ারটার জন্য রাস্তা দিয়ে মাথা নিচু করে হাটি, সমাজে মুখ দেখানো দায়। বাপ-মা হিসেবে আত্তহত্যা করতে ইচ্ছা করে।
ঘটনা-৩) একটা কুলাংগার ছেলে জন্ম দিছ, সারাদিন বাবু হয়ে ঘুরে বেড়ায়, আর বাপের অন্ন ধংস করে। এই ছেলের জীবনে কিছুই হবে না। পড়া লেখা কইরা ঘোড়ার ডিম করছে। অমুকের ছেলে ওর সাথে পাশ দিয়ে এখন সংসারের হাল ধরছে। আমাদের জীবনে আল্লাহ একটু সুখ দিল না।
ঘটনা-৪) পড়া-লেখা শিখছ, দুই-দিনও হয় নাই চাকরি পাইছে। এখনি বিয়া করতে হবে। আর কয়েকটা দিন পর বিয়া কর। বাপ-মা হিসেবে আমাদের প্রতি কি ওর কোন দায়ীত্ব নাই। সারা জীবন টানা-হেছড়ার জীবন, এইভাবেই মরতে হবে। একটা ছেলেও মানুষ হইল না।
ঘটনা-৫) রহমত সাহেব, আপনার তো পোয়া বারো। ছেলেরে বিদেশে পাঠাইয়া খুব ভাল করছেন। বিদেশী টাকা, জমি কিতেছেন, বাড়িও করলেন। ধুর ভাই-কি যে বলেন, এত কষ্ট কইরা জমি জিরাত বিক্রি কইরা পোলারে বিদেশে (ইতালী, মালয়শিয়া) পাঠাইলাম, মাত্র ৭ বছর হইল, কিছু টাকা জমাও যাতে আমারা সবাই মিলে ভাল থাকি। তা না, গত বছর আইসা বিয়া কইরা গেল, আর নাকি থাকব না। আর ১০ টা বছর বিদেশে থাক, এখন মনে হইতেছে-বিয়া দেওটাই ভুল হইছে।
ঘটনা-৬) ভাই, আপনার পোলা-তো অনেক ভাল চাকুরি করে, বিয়াও দিছেন, আপনি একটা গর্বিত পিতা। আরে কি যে বলেন। নিজের পছন্দে বিয়া করছে, আমরা শশুর-শাশুড়ি জীবনে বউ-মার একটু সেবা পাইলাম না। ওরা তো নিজেরা ঢকা শহরে খুব ভালই আছে। বউয়ের কথায় ওঠেবসে, বছরে একবার আসে। এমন পোলা থাকা না থাকা সমান।
ঘটনা-৭) ছেলেরে পড়া-লেখা শিখাইয়া ডাক্তার/ইন্জিনিয়ার বানাইলাম, বিদেশে গেল। এখন নিজের মত সবকিছু করে, বাপ-মা হিসেবে আমাদের মতামতের কোন ধারধারে না। খালি, মাসে মাসে টাকা দিলেই কি আমাদের প্রতি দায়ীত্ব শেষ নাকি। বোনদের বিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কোন দায়ীত্ব পালন করছে নাকি। ওর মা তো নামাজে বইসা প্রতেক দিন কান্দে, ২- ৪ বছরে ছেলেরে একবার দেখতে পায়না। এত মানুষ দেশে এত কিছু করতেছে, এর নাকি দেশে কোন চাকরী নাই। পোলা, ২ টাকা ইনকাম করলেও কাছে থাকাটাই ভাল। এই যে আমরা এত মানসিক কষ্টে আছি, ওরা কি নিজ চোখে দেখতেছে। বাপ-মা হিসেবে কপালটাই খারাপ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:১২