somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ কি মানসিক রোগী বানানোর কারখানা!!!!!

১৮ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশ তো মানসিক রোগী বানানোর কারখানা। গতকাল শুনলাম একটি মেয়ে বলছিলো, কিভাবে তার মা-ভাই-বাবা সবাই তাকে ছোট বেলা থেকে বডি শেমিং করত, কালো আর অসুন্দর বলত (Facebook Link)। সতেরও বছর বয়সে বিয়ে দিয়ে দিছে কারণ পরে বিয়ে হবে না। আজ পরিনত বয়সেও সেই সকল চাপা কষ্ট নিয়ে মেয়েটা কাঁদছে, পুরাই ট্রমাটাইজড। নিজ ভাইয়ের সাথে খাবারেও বৈশম্য করেছে। এখন আবার সম্পত্তির ভাগ দিতেও চাচ্ছে না। এই মেয়েটা তার নিজের পরিবারের কাছেই অনিরাপদ ছিল। খুব পরিচিত মনে হয়, তাই না! এটাই বাংলাদেশের বেশির ভাগ পরিবারের স্বাভাবিক চিত্র।

সাধারণত যে মেয়েটা নিজের বাবা-ভাই এর দ্বারা এবিউজড হয় এবং বাবা-ভাই কে ঘৃনা করে; সে মেয়ে পৃথীবিতে কোন পুরুষকে বিশ্বাস করবে না। সে টক্সিক হবেই, নিজের স্বামীকেও অবিশ্বাস করবে, এটাই স্বাভাবিক। এই মেয়েটাও একদিন মা হবে এবং তার মেয়েও তার কাছ থেকে শিখবে, যে স্বামীকে অবিশ্বাস করতে হয়। সম্মান এবং শ্রদ্ধার সম্পর্কের বদলে যেন অবিশ্বাস এবং নিয়ন্ত্রণ করার ব্যপারটি পারিবারিক ভাবেই প্রতিষ্ঠিত একটা জিনিস। সবাই ধরে নেয়--মেয়ে মানুষ একটু এমনই, অথচ এটা হয়েছে তাদেরকে শত শত বছর ধরে অনিরাপদ করে রাখার কারনে। এটা পুরো দুনিয়া জুড়ে হয়েছে, হাজার বছর ধরে। এই মানসিক রোগী তৈরীর দায়ভার কার? আপনার আমার মত পুরুষদের এবং পুরুষ শাসিত সমাজের। এদিকে গতকাল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবন্তিকা নামের আরেকটা মেয়ে আত্ত্বহননের পথ বেঁছে নিল, আপনারা তো জানেনই কেন। DU Prof. Kamrul Hassan Mamun এর পোষ্ট থেকে জানলাম (Facebook Link), একই বিশ্ববিদয়ালয়ের ফিল্ম & টেলিভিশন বিভাগের আরেকটি মেয়ে নিজের শিক্ষক দ্বারা সকল ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন এবং বলছেন যে ওনার সাহস থাকলে অবন্তিকার মত উনিও সুইসাইড করতেন। তিনিও বলেছেন যে, উনিও প্রায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। শেষ হয়ে গেছেন।

আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, মেয়েদের এই সকল ট্রমা। অনিরাপদ পরিবার, সমাজের আচরণ কিভাবে পরবর্তীতে তার সংসার জীবনেও কত বেশি প্রভাব ফেলে। এই পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থার প্রতি নারীদের কিভাবে বিশ্বাস তৈরী হবে? আজকের সমাজে যে সকল নারীদের আমরা দেখি পুরুষ বিদ্দেশী মনোভাব, স্বামীকে নিয়ন্ত্রন করার প্রচেষ্টা, সবাই কম বেশি এই সকল বৈশম্য, হেনস্তা, অবজ্ঞা, দুর্দশা, এবং তাচ্ছিল্যর শিকার। এই মেয়েগুলিই পরবর্তী জীবনে একটা ভাল কথার ভেতরও খারাপ কিছু খোঁজার চেষ্টে করবে, কারন এভাবেই তার অবিশ্বাসী মন কাজ করবে, এটাই সাইকোলজি। আপনি একটা মেয়েকে ভাল কিছু বলার জন্য এগিয়ে আসবেন, সে ভেবেই বসবে আপনি তাকে হেনস্তা করবেন অথবা খারাপ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকাবেন অথবা আপনার অন্য কোন মতলব আছে। ভাল পুরুষ গুলিও তো এই ট্রমাটাইজড ইনসিকুর মেয়েদের কাছে পরে জিম্মি হয়ে যায়। মেয়ে শিশু এই বৈশম্যের ভেতর বেড়ে ওঠার কারনে আজ সমাজে সুস্থ কোন মেয়ে মানুষ দেখতে পাওয়াই ভাগ্যের ব্যাপার, যার সাথে আপনি ১০ মিনিট খোলা মনে যুক্তি দিয়ে কথা বলতে পারবেন, অথচ সে কষ্ট পাবে না। সবকিছু নিজের দিকে টেনে নিয়ে ভাববে না যে তাকেই সবকিছু বলা হচ্ছে। কোন সন্দেহ ছাড়াই বা মনে কষ্ট না নিয়ে মেয়েলি ইগো না দেখিয়ে অন্যের মতামত গ্রহন করার সামর্থ্য খুব কম বাংলাদেশী মেয়ের আছে, এজন্যই বললাম। অনেকেই তো সহজেই আত্তনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে, একটা সিকুর এবং নিজের নিয়ন্ত্রণাধিন পরিবেশে থাকার জন্য ডেসপারেট হয়ে যায়। কন্ট্রল ফ্রিক, সুইসাইডাল, সেলফ হার্ম থেকে শুরু করে সব সময় আপনাকে হুমকির এর উপর রাখাতে চায়, কারন পুরো পৃথীবিটাই তাদের জন্য যুদ্ধক্ষেত্র। কাল্পনিক এবং বাস্তব সংঘাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য এই সকল মেয়েরা নিজ ঘর, বাস্তায়, অফিসে সব জায়গার সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকে। তার মানে তার মস্তিস্কের এমিগডুলা অংশ সব সময় সজাগ, যা শুধু মাত্র সত্যিকারে বিপদের সময় সচল হওয়ার কথা। ভয় এবং আত্তরক্ষার জন্য সর্বদা সজাগ হয়ে কোন মানুষ স্বাভাবিক ভাবে বাঁচতে পারে না। এদেরকে আপনি কোন দিন বোঝাতে পারবেন না যে, এই জায়গাটা তোমার জন্য নিরাপদ বা আমি তোমার জন্য নিরাপদ। কারণ তাদের মনে বছরের পর বছর ধরে অনিরাপদ পরিবেশে যে গভির ক্ষত তৈরী হয়েছে তা কখনই দুর করা সম্ভব নয়। এই সকল মানসিক রোগী তৈরীর দায়ভার কার, বাংলাদেশের পুরুষের? পরিবারের? সমাজের?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০২৪ সকাল ৮:১৮
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×