ভালোবাসার জন্মের আগে তৈরি হয় তার ভ্রূণ আর এই ভ্রূণ তৈরি হয় প্রাকৃতিকভাবে (প্রকৃ্তিগতভাবে)! তারপর এই ভ্রূণের বৃ্দ্ধি অতঃপর তার পরিপূর্ণ জন্মলাভ হবে কি হবে না তা কোনকিছুর উপরই নির্ভর করেনা। সোজা বাংলায় বলতে গেলে ভ্রূণটি জন্মাবে নাকি জন্মের পূর্বেই মৃত্যুবরন করবে তা আপনি-আমি নির্ধারন করবার কেউ নই। ভালোবাসা স্রেফ হয়ে যায়- সেই সাথে এর জন্ম অথবা মৃত্যুও! ভালোবাসা হচ্ছে বহমান নদী কিংবা প্রবাহমান সমীরন! জোর করে এটা তৈরি করাও যেমন দুঃসাধ্য তেমনি ভেঙ্গে ফেলাও। এটি তো কোন দালান-কোঠা কিংবা হাতঘড়ি/রোদচশমা নয় যে চাইলাম আর অমনি ভেঙ্গে ফেললাম। ভালোবাসায় কোন ভন্ডমি থাকেনা। ভালোবাসার কোন রকমফের নেইও! ওই যে বলে- প্রকৃ্ত ভালোবাসা, পরকিয়া, বিবাহ-বহির্ভূত ভালোবাসা, ঠুনকো ভালোবাসা, ভাইয়ের মত ভালোবাসা, বোনের মত, সন্মানের ভালোবাসা ইত্যাদি ইত্যদি! এগুলো আমরা বানাই! আমি বানাই, আপনি বানান, আমাদের পূর্ব-পুরুষেরা বানিয়েছে। ওরা কেন বানিয়েছে? আমরা কেন বানাই এই সব নাম? কেন বানাই? কেন দিই এইসব নাম? ভয়ে? কার ভয়ে? আপনার নিজের ভয়ে?আমার ভয়ে? দেখুন, সোজা-সাপ্টা কথা, ভালোবাসা আপনার মানব-জনমের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি, এটা মহার্ঘ্য! এটা তৈরি হয়-ধীরে অথবা দ্রুত। প্রভাবক হয়ত থাকে যেমনঃ যৌনতা, সৌন্দর্য, একাকিত্ব, শুন্যতা, ব্যক্তিত্ব, অর্থ-বিত্ত, জ্ঞান, প্রজ্ঞা। আবার নাও থাকতে পারে এটি- হতে পারে অকারণ ভালোবাসা অথবা শুধুই ভালোবাসার ঘাটতি-পূরনে ভালোবাসা।কোনটাই নষ্ট নয়, দোষের নয়। ‘ভালোবাসা-অবদমনে’ অথবা একে ‘শুদ্ধ-করবার জন্যে আচ্ছাদিত’ করবার আমাদের প্রচেষ্টা অনেক পুরোনো। মানব-সমাজ হয়ত ভালোবাসার নানা রকম নামকরন ‘নমেনক্লেচার’ অথবা ধরন বের করে এটিকে শুদ্ধ-করবার জন্যে আচ্ছাদন করবার পদ্ধতি বের করেছে কিন্তু এটিকে অবদমন করতে পারেনি বোধ করি। কারন ‘ভালোবাসা’ ব্যপারটিই অবশম্ভাবি এবং সবচেয়ে দরকারি উপাদান এই মানব-সম্প্রদায়টিকে টিকিয়ে রাখবার জন্যে।ঠিক একইভাবে এটির অনাবশ্যক আবহ কিংবা তৈরি করতে চাওয়াও দুঃসাধ্য। এটা শৈবাল জন্মানোর মত করে জন্মায়- জলাশয়ে, পুকুরপাড়ে কিংবা কুয়োর ধারে! (আর এটা বলা বাতুলতা যে জলাশয় অত্যন্ত দ্রুতভাবে কমে যাচ্ছে আমাদের এই ঢাকায় কিংবা ম্যানহাটনে)! যাকগে আমার মূল কথায় ফিরে আসি, রূপোর পাত্রে জল রেখে শৈবাল তৈরির প্রচেষ্টা শুধু হাস্যকর নয় কষ্টকরও বটে। দেখুন, মাটি যেমন প্রাকৃ্তিকভাবেই স্তরীভূত থাকতে থাকতে একসময় কঠিন শিলায় পরিনত হয় ভালোবাসাও তেমনি প্রাকৃ্তিকভাবেই ঘটে। আপনি চাইলেও জোর করে মাটিকে পাথরে/ কঠিন শিলায় রূপান্তর করতে পারবেন না তেমনি ভালোবাসা যদি না জন্মে কারো প্রতি তাহলে জোর করে সেটা জন্মাতেও পারবেননা। তবে হ্যাঁ, মাটিকে পুড়ে শক্ত ইট বানাতে পারবেন নিশ্চয়ই। তবে সত্যি বলতে কি প্রকৃ্তির সেই মহান সৌন্দর্যমন্ডিত দৃষ্টিনন্দন সুগঠিত শিলা- পারবেন কি সৃষ্টি করতে? আসলে ভালোবাসা শুধুমাত্র মানব-অস্তিত্বের প্রধানতম কারনই নয় এটা মনবসভ্যতা, সংস্কৃতি, নন্দনতত্ত্ব, ধর্ম, মতবাদ এমনকি এই আজকের আধুনিক অথবা উত্তর-আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং এর ক্রমবিকাশের পথেও একটি মহান চালিকাশক্তি।
Reference:
May be this writing has a partial shadow of Sigmund Freud 's Civilization and Its Discontents and Herbert Marcuse's Eros and Civilization. But the narration and analogy is undoubtedly mine without any plagiarism. The lines were being synchronized in my mind and I just wrote down
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৫