ব্রিটিশরা এই উপমহাদেশে এসেছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে, কিন্তু পরবর্তীতে তারা পুরো দেশটিই দখল করে নেয় এবং দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে শোষণ চালায়। ব্রিটিশ শাসনের ফলে উপমহাদেশে নানা দিক দিয়ে ক্ষতি হয়েছে, যার প্রভাব আজও বিদ্যমান। সংস্কৃতির দিক থেকে বাঙালি ও পাকিস্তানিদের মধ্যে রয়েছে বিশাল পার্থক্য।
যে কোনো জাতি বা জনগোষ্ঠী শোষণ ও পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি চায়, আর বাঙালির জন্য সেই মুক্তির দিন এসেছিল ১৯৭১ সালে। স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাকিস্তানের শোষণ থেকে মুক্ত হয়। পাকিস্তান আর কখনোই বাংলাদেশের ধান, চাল, কিংবা রাজস্ব শোষণ করতে পারেনি। তবে স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশকে নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে—ভারতের প্রতিনিয়ত হস্তক্ষেপ এবং বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতা ছিল নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই সময়ের ভারত ও বর্তমান ভারতের ভূমিকায় অনেক পার্থক্য। বর্তমানে ভারত বাংলাদেশকে একদিকে হুমকি থেকে রক্ষা করার অজুহাতে সহযোগিতা করে, অন্যদিকে নানা অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে শোষণ চালায়। বাংলাদেশকে এখন বুঝতে হবে, পুরোনো শত্রুদের প্রবেশাধিকার বন্ধ রাখতে হবে এবং নিজস্ব স্বার্থকে সবার ওপরে স্থান দিতে হবে।
বাংলাদেশের উচিত ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনে ২০৪টি দেশের সঙ্গে বহুমুখী সম্পর্ক গড়ে তোলা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সার্বিক সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব, যদি আমরা সঠিক কৌশল গ্রহণ করি। এভাবেই বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা, স্বার্থ এবং উন্নয়নকে টেকসই করতে পারে।
১. পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বা তাদের এদেশে প্রবেশের সুযোগ দিলে:
স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
পাকিস্তান পূর্বের মতো শোষণের সুযোগ খুঁজবে এবং দেশকে আবার তাদের মতো একটি উপনিবেশ বানিয়ে ফেলতে পারে।
২. স্বাধীনতা হারানোর ঝুঁকি:
একটি স্বাধীন দেশের মর্যাদা ও ক্ষমতা ক্ষুণ্ণ হবে।
বাঙালির নিজস্ব অধিকার, সংস্কৃতি, ও পরিচিতি হারিয়ে যাবে।
৩. দায়িত্বহীন শাসনব্যবস্থা:
দেশ আর বাঙালির নিয়ন্ত্রণে থাকবে না, শাসনব্যবস্থায় অন্যের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবে।
বাঙালির ওপর দমন-পীড়ন বেড়ে যাবে।
৪. ভয়াবহ যুদ্ধের সম্ভাবনা:
পাকিস্তান বা অন্য কোনো শক্তির প্রভাব প্রতিষ্ঠা করতে গেলে ভেতর থেকে বিরোধ এবং রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকবে।
১৯৭১ সালের মতো আরেকটি ভয়াবহ যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
৫. শত্রু কখনো আপন হয় না:
পাকিস্তান অতীতে শত্রু ছিল, ভবিষ্যতেও তাদের স্বার্থই মুখ্য থাকবে।
তাদের উদ্দেশ্য সবসময় নিজেদের সুবিধা আদায় করা, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করা নয়।
৬. দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রয়োজন:
স্বাধীনতা ও জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে শত্রুদের প্রবেশ বন্ধ রাখতে হবে।
নিজস্ব স্বার্থে কাজ করতে হবে, অন্যের হস্তক্ষেপ প্রতিহত করতে হবে।
৭. একটা জিনিস মনে রাখবেন, বাঙালির আধুনিক অস্ত্র ভাণ্ডার নেই। বাঙালির সাহস আছে অস্ত্র মুখে মৃত্যু ছাড়া কিছু করতে পারবেন না। পাকিস্তান এবং ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ রয়েছে।
এটাই সময় বাংলাদেশের জনগণকে সচেতন হয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করতে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



