somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষমা করবেন দেলোয়ার সাহেব! জীবনের শেষ ছবিটা তুলা হলনা আপনার সাথে

১৭ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৪ই মার্চ গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় যখন খন্দকার দেলোয়ার সাহেব সিংগাপুর আসেন চিকিৎসার জন্য তখন থেকেই হাসপাতাল এ যাওয়ার জন্য অধির আগ্রহে অপরক্ষায় ছিলাম উনাকে দেখার জন্য। অবশেষে ১২ই মার্চ শনিবার অফিস শেষ করে ছুটলাম হাসপাতালে
সিঙ্গাপুর কাদের কার্গো সার্ভিস এর মালিক কাদের ভাইকে ফোনদিলাম যে, আজ আমি মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে আসছি । কিন্তু কাদের ভাই যা বল্লেন তাতে মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল। শনিবার অনেকের ই আধাবেলা অফিস তাই নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিদর্শক এর কোটা পুরন হয়েগেছে, আজকে কোন ক্রমেই দেখা করা করা সম্ভ্যব নই। কি করাযায় কোন কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। অনেক চিন্তা ভাবনা শেষে অফিস এর এক সিঙ্গাপুরিয়ান কলিক এর কাছে ফোন দিলাম সে আমাকে সাহায্য করতে পারবে কিনা। বিস্তারিত শুনে সে অন্য একজন এর মোবাইল নাম্বার দিয়ে বল্ল উনার সাথে যোগাযোগ করার জন্য।
অনেক কাঠখড় পুরিয়ে অবশেষে সেই মূহুর্তটা এল এই জীবনের প্রথম দেখতে পেলাম প্রিয় মানুষটাকে। ৭-১০জন ছিলাম আমরা তাই প্রাণ ভরে দেখতেপেলাম। সবাই ছিল উনার চেনা মুখ শুধু আমি ছাড়া। এক পর্যায়ে আমার পরিচয় যানতে চাইলেন। সবাব বসত পরিচয় দিলাম আমি একজন প্রবাসী শ্রমিক। এই পরিচয়টা পেয়ে উনি আমাকে কাছে ডেকেনিয়ে অনেক প্রশ্ন করলেন। অনেক কথা বার্তা এবার বিদায়ের পালা, তখন বল্লাম স্যার পরবর্তিতে এসে আমি আপনার সাথে একটা ছবি উঠাতে চায় খুশিমনে উনি রাজি হলেন। উনাকে আমি নিমন্ত্রন করলাম আমাদের হোষ্টেল এ আসার জন্য, তা ও ওনি গ্রহন করলেন খুশি মনে। উত্তরে বল্লেন তোমরা আমদের দেশে সম্পদ অবশ্যয় যাব তোমাদের দেখতে। খুশি মনে বাসায় ফিরলাম। সকল বন্ধুদের বল্লাম দেলোয়ার সাহেব আমাদের হোষ্টেলে আসবে।
দিন যেন যাচ্ছেনা কবে সুস্থ্য হবেন এই মানুষটা যে কিনা প্রবাসী শ্রমিকদের এত ভালবাসেন।
কিন্তু সেই দিনটা আর এলনা উনি আসলেন না আমাদের হোষ্টলে দেখতে অভাগা শ্রমিকদের যারা মাথার গাম পায়ে ফেলে উপার্যন করে চলছে। ১৬ই মার্চ বুধবার ঠিক ৬টার দিকে সেই সংবাদটা এসে হৃদয়টাকে বিদির্ণ করে দিয়ে গেল। কাদের ভাই ফোনে জানালেন সেই মর্মান্তিক সংবাদটা। সাথে সাথে ছুটে গেলাম হসপিটালে। ১০-১২ লোক এসেছে পরিচিত যনদের খবর দেয়া হচ্ছে। আইসিও ১ এর বিতরে দেখতে গেলাম যেন শুয়ে আছেন শ্রমিক দের কিছু কথা শুনার জন্য। বাহিরে উনার মেয়ে পান্না আর ছেলে ডাব্লু অযোরে কাধতেছিল কিছুই বলার ভাষা ছিলনা।
এই দিকে অনেক মানুষের ভির করে ফেলছে । হসপিটাল এর সিকউরিটি মূল গেইট বন্ধ করে দিয়েছে। রাত ৮+ মরদেহ নিয়ে যাওয়া হল হিমাগারে। তরিৎ সিদ্ধান্ত হল পরদিন ১৭ তারিখ সকাল ৯টা উনার জানাযা দেয়া হবে আংগুলিয়া মসজিদ এর পাশে, সকল প্রবাসী দের নিয়ে।
একে একে সাবাই বিদায় নিল, একেবারেই মনটা যেতে চাচ্ছেনা হসপিটাল থেকে। প্রিয় মানুষটাকে একে ফেলে। সবাই চলে গেল রাত ৯:৩০+ বাসার উদ্যেশে চল্লাম।
সকাল ৭টায় অফিসে এসে কার্ডটা পান্চ করে চলে গেলাম আংগোলিয়া মসজিদে। আমার মত এমন প্রায় ২০০ লোক অপেক্ষা করতে ছিল ঐখানে। কিন্তু হসপিটাল থেকে দেহ আনতে অনেক দেরি হচ্ছে ৯+ অনেকেই চলে গেলেন। অফিসে ফোন করে কিছু লোকের সাথে আমি থেকে গেলাম।

ক্ষমা করে দিবেন স্যার আপনাকে নিয়ে যেতে পারলাম না আমাদের হোষ্টেলে, রাহতে পারলাম না শেষ ইচ্ছা টুকু।
তুলতে পারলাম না ছবিটা আপনার পাশে বসে।

শুধু দোয়া করি আল্লাহ আপনাকে বেহেস্ত নসিব করুক
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×