ফুট পেট্রোল ডিউটি ছিল,ফজরের ওয়াক্তে হঠাৎ চোখে পড়ল হাসপাতালে দিকে ছুটে যাচ্ছে দুটো হোন্ডা,চালক সহ ছয়জন।এক ঘন্টাপর জানতে পারলাম ওরা ছিল মুমূর্ষু রোগী।ইতোপূর্বেই থানায় পৌঁছে গিয়াছে সংবাদ,
ডিউটি শেষ করে ব্যারাক এর কাছাকাছি পৌছে গেছি,আওয়াজ পেলাম মোবাইল টিমের সাথে এক যায়গায় যেতে হবে,পুলিশ ডিপার্টমেন্টে না নামের কোন শব্দ নেই,চেপে বসলাম গাড়িতে। গন্তব্য ভূয়াছড়ি ,ধানের ক্ষেত সরু রাস্তা দুর্গম গিরি আনসার ক্যম্প্ হয়ে প্রচন্ড ঠান্ডায় কেপে কেপে পৌছে গেলাম ভূয়াছড়ি ।এলাকার একজন মেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে গেলাম ঘটনা স্থলে---- গিয়ে দেখলাম বাঙালি পাড়ার আনসার পোষ্ট এর সামনে রক্তাক্ত দেহ নিয়ে মাটিতে পরে আছে জরাজীর্ণ একটা জিন্দালাশ হাত পা গরু ডিগালি দেওয়ার রশি দিয়ে বাধা।গলগলিয়ে রক্ত বেরুচ্ছে আর গলাকাটা মুরগীর মতো কাতরাচ্ছে,গন্যমান্য মুরুব্বীদে
মুখ জানতে পেলাম তার পরিচয়,পরিচয়ে সে উপজাতি।
এলাকাবাসীর দাবী সে ডাকাত দলের সদস্য সে বেশ কজনকে কোপাইয়া রক্তাক্ত করেছে রোগী গুলো এখন হাসপাতালে।কিন্তু তার মুখে জানতে পারলাম ভিন্ন কথা--মদ খেয়ে পথ ভুলে অনিচ্ছাকৃত ভাবে চলে এসেছে বাঙালি পাড়ার ভিতর।প্রকাশ থাকে যে এই গ্রামে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র আনসার পোষ্ট রয়েছে।এই ডাকাত দলের সদস্যটি যে রামদা দিয়ে মানুষ কোপিয়েছে সেই রামদাটি উদ্ধার হয়েছে,এই রামদায় রক্তের কোন আলামত মেশানো নাই। টিম লিডার এর আদেশে সম্মিলিত চেষ্টায় রোগীকে পুলিশ ভ্যানে উঠানো হল,সারাদেহ রক্তে রাঙ্গানো তার ঠোঁট মুখ অন্তর দেহ ভয়ে এবং শীতে ঠকঠক করে কাঁপছে গ্রামের মানুষ গুলোর কাছে তার জন্য শীতের ছেড়া কাপড় চাইলাম,কেউ দিলো না!নিজের দেহে তালাশ করেও তার জন্য খুঁজে পাই নাই কোন শীতের কাপড়।সরকারী ভাবে পাওয়া একমাত্র ডিপ গ্রে জ্যাকেটটি ছাড়া অন্যকোন শীতের কাপড় আমার গায়ে ছিল না তাই দেইনি,অবশেষে কিছুটা মানবিক ধাচের মানুষের কাছ থেকে দুই টা ছোট এবং পাতলা চটের বস্তা হাওলাত করে-রক্তাক্ত দেহটি কে প্যাচায়ে রওয়ানা দিলাম হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।
বস্তাটির রং সবুজ দেহটির রং লাল
সবুজের বুকে লাল সে তো থাকবেই চিরকাল.......
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫২