৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগ নির্ঘুম। দাবি পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত শাহবাগ ঘুমাবে না বলেই শপথ নিয়েছেন সেখানকার প্রতিবাদীরা। যার শুরু সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলোতে। জামাত শিবির রাজপথে এখন যদিও ঝটিকা মিছিল করার চেষ্টা কারেও সুযোগ হারাচ্ছে, মিডিয়াতে তাদের অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা চোখে পড়ার মতো।
১২ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার, বিকেল চারটা। শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর। কয়েক সেকেন্ড আগেও যে স্থান ছিল মিছিল-স্লোগানে প্রকম্পিত, হুট করেই সেখানে নেমে এল রাজ্যের নিস্তব্ধতা। উপস্থিত লাখো মানুষের কারও মুখে কোনো কথা নেই। তবে প্রত্যেকের হাতগুলো ওপরে তোলা। যার নাম নিরব হুংকার।
কিছুক্ষণ আগে ফেইসবুকে দেখলাম একজন স্টেটাস দিল, “১৯৭১ সালে তরুণ রা লড়েছিল সমাজ পরিবর্তনের আশায় কিন্তু আজ তরুণ পরিবর্তনের জন্য লড়তে ভয় পায় তাই তারা লড়ে হুজুকে সেন্টিমেন্ট পূরণের আশায় যেটা হলেও লাভ নাই জাতির না হলেও লাভ নাই জাতির কারণ এটা হল বাস্তব স্বার্থ বিবর্জিত আবেগীয় একটা বিষয়।’’
প্রশ্ন ১: এই বাক্যে আপনি কী মনে করেন?
বাচ্চু বৈকি কাদের বলি দুজনই চিহ্নত রাজাকার। তাদের নাটকীয় রায়ে জনতা আজ পথেপ্রান্তরে যার কেন্দ্রবিন্দু শাহবাগ।রায় ঘোষনার আগে অলিখত অনেক কথায় আকাশে ভেসে বেড়াত যেমন- * রজাকারের বিচার সরকার করবেনা, এটি তাদের নির্বাচনি বিঞ্জাপন। * ট্রাইবোনান ১ এর প্রধান বিচারপতি নিজামুল হক নাটকের পর তো অনেকে জোরে সোরেই বলতে লাগলো।*আবার এও শোনা যাচ্ছিল, সরকার তাদের রায় বিলম্ব করে জনগণকে আশ্বাসে রেখে শেষ পর্যন্ত কিছুই করবেনা, অনেকে বলতে লাগলে বিচারই করতে পারবেনা।
হ্যা, আমরাও যখন আমার কাছের-দূরের মানুষদের সাথে দেশের চলমান রাজনীতী নিয়ে গল্প করতাম, কথা বলতাম তখন যে বিষটি বেরিয়ে আসত তা হলো- ::::মনে হয় না সরকার বিচার করতে পারবে, হয়তো লঘু রায় দিয়ে তাদের সঙ্গে আঁতাত করতে পারে, অন্যদিকে জনাব মহান এরশাদকে একমা্কত্র অপোজিশনে দাড় করাবে। একমাত্র বলছি কারন আওয়ামী লীগ সরকার যে ভাগে প্রধান বিরোধী দলের উপর নিপিড়ণের স্টিম রোলার নিয়ে যাচ্ছে তাতে জামাতের সাথে আঁতাত করতে পারলে বি এন পির তো নিকট ভবিষ্যত দেখছি না।:::এই কথাগুলো বিভিন্ন প্রসঙ্গে বিভিন্ন মাত্রায় আসতো। অনেকে বলতো ৯০ বা ৯৬ এ যেহেতো এখন তা আবার অস্বাভাবিক হবেই বা কেন? স্বাধীনতার সংগ্রামের আওয়ামি লীগের মত যদিও বর্তমান আওয়ামি লীগে অনেক পুরুনো মুখ আছে তবোও নৈতিকতায় তারা ০% কারো কারো ক্ষেত্রে নিগেটিভ হবে।
নাটকের ভুমিকাটা শুরু হলো বাচ্চু রাজাকারের ফাসিঁর রায় দিয়ে । অমারা বোকা জনতা না হলে ঐ দিনই তো আমাদের রাজ পথে যাওয়ার কথা ছিল সরকারের নাটক বর্জনের দাবী নিয়ে। চিহ্নত বড় বড় যুদ্ধাপরাধীরা এখন হাজতে সেথানে বাচ্চু এখন পলাতক তাই তার রায় সরার আগে। মিডিয়াতে জানতে পেলাম বাচ্চু নাকি পাকিস্তানে অবস্থান করছে। লাদেন কে যেখানে বছরের পর বছর তারা অশ্রয় দিল আর আমেরিকার মতো দেশও তার হদিস পায়নি সেখানে আমরা বাচ্চু রাজাকারকে নিয়ে আসবো, ফাসি দিব তা কি আপনি কল্পনা করেন?
বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘১২ ফেব্রুয়ারি -২০১৩’ কদের সিদ্দিকী তো বলেই ফেললো- কত বললাম যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার, আলবদর, দালাল, জামায়াত ত্যাগ করুন, কেউ শুনল না। আজ শাহবাগের গর্জনে তাদের কানে পানি গেছে, তাই আড়মোড়া ভেঙে জাগতে শুরু করেছে। আর সরকারপ্রধান বলেছেন, জনতার আওয়াজ সব শুনব, সব মানব।
'৯০-এর দিকে দেশের মানুষ পাকিস্তানের পক্ষের স্বাধীনতাবিরোধীদের চায় না। তারা তাদের দোষ স্বীকার করে নত হয়ে থাকলে কারও হয়তো কোনো আপত্তি থাকত না। কিন্তু এত মানুষ হত্যা করে, মা-বোনের ইজ্জত নষ্ট করে আবার শিনাজুরি_ এটা কেউ মেনে নেবে না। এরশাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের নামে শুরুতে আওয়ামী লীগ বিএনপি পাকিস্তানের কসাই জামায়াতকে রাস্তায় এনেছে।
অদক্ষ নেতৃত্ব এরশাদবিরোধী আন্দোলন সফল হওয়ার পর আবার খালেদা জিয়াকে সরাতে গিয়ে জামায়াতকে আওয়ামী লীগ কোলে তুলেছিলো। তাহলে এখন তা অসম্ভব কেন?
প্রশ্ন: ২: এ প্রসঙ্গে আপনি কি মনে করেন?
কিন্তু রায়্ এর পূর্বে আওয়ামী লীগ কি তা ঠাহর করতে পেরেছিলো যে দেশের জেলায় জেলায় হয়ে ওঠবে প্রজন্ম স্কয়ার। খুনের সর্বোচ্চ শাস্তী ফাসিঁ। আর কত খুন করলে তাক খুনি বলবেন আপনাদের এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে এ ব্যাপারে কি প্রস্ততুত ছিলেন?
সামহোয়ার ইন ব্লগ, সোনারবাংলা ব্লগ আর ফেইসবুক এ ঘাটাঘাটি করে শাহবাগ তরুণদের ব্যাপারে যে কোন কটুক্তি একবারেই পাই নি তা নয় যেমন কেউ বলেছে-* ১৯৭১ এর সাথে আজকের তরুণের পার্থক্য হলো সেই সময়ের তরুণের রাজনীতি চামচামির ছিলোনা আর মরতেও ভয় পেতো না কারণ শক্তি ছিলো জাতীয়তাবোধ, কিন্তু আজকের তরুণের রাজনীতি কলুষিত আর চামচামি ভরা তাই হুজুকের ফলে পিকনিক মুডে না আসলে তারা রাজপথে নামে না।
আরও পেয়েছি * পৃথিবীর বুকে আমরাই এক মাত্র জাতি যারা দেশের মানুষের স্বার্থের জন্য লড়ে মরে না কিন্তু আবেগের তাড়নায় জ্বলে জ্বলে মরে।
এ কথাটা কিন্তু মন্দ না ।আমাদের আবেগটা যেন এটু বেশিই । আরে মিয়াভাইয়েরা আবেগ বলেন আর যাই বলেন ৭-৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও তো দেশ এত কেপে ওঠেনা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে ব্যাগ্তিগত লাভ ক্ষতির ব্যালেন্সসিট মিলোক আর নাই মিলোক দায় মুক্তি তো হবে, সেটা কম কিসের । আমি জানি আমি এখন আমি যে কথাটা বলবো আপনি সামনে পেলে মারতে আসবেন। ধরুন আনার সামনে আপনার বাবা কে খুন করে মাকে ধর্ষন আর বোনকে তুলে নিযে গেল একটি দল। কিছুদিন পর তাদের ফাসিও যদি হয় আপনার স্বজনদের কেউ তো ফেরত আসবেনা। তাই বলে কি তাদের শাস্তী মওকোফ করে দিবেন। আপনি কি কিছুই করবেনা। আনার পক্ষে আপনার প্রতিবেশী অন্দোলণে যোগ দিলে তাকেও কি আবেগের বশবর্তী বলে ওঠবেন?
প্রশ্ন: ৩- যারা শাহবাগকে আবেগ বলছেন তাদের বলছি এখন আপনি কি জবাব দিবেন?
মেনে নিলাম আবেগ, সবকিছুই হুজুগে সেন্টিমেন, কিন্তু এই ইমোশন তো আজ ফেইবুকে থেকে পথে বেরিয়ে এলো। কারো ব্যাক্তিগত লাভ হউক আর নাই হউক কি ভাবে রাজপথ দখলে নিত হয়, কি ভাবে সরকারকে ঘায়েল করতে হয়, বধ্যকরা হয় ট্রাইবোনা এর প্রটোকল পরিবর্তন করতে তা তো আমরা শিথেছি। কাল না হয় পরশু এই গন জাগরন বিপ্লবে পরিনত হবে। জাগরন তৈরি হবে, আজ দেশকে যারা লুটে পুটে হজম করে নিচ্ছে, যাদের পা আজ মাটিতে নেই য সাধারনের খালি পেটে, যারা আজ শুধু গুম-হত্যাই নয় সাধারন বিশ্বজিতদে খেয়ে মিডিয়াতে বীর সেজেছে, পদ্মা সেতু- শেয়ার বাজার-হলমার্ক-ডেসটিনি নায়কদের বিরুদ্ধে।
আমাদের নিজ আধিকারের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হওযার সময় এসেছে, কমিশন বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, টাকা প্রাচাররের বিরুদ্ধে। যারা নিজেদের স্বার্থে জামাতকে পালা বলদ করে ভাগাভাগি করে তাদের বিরুদ্ধে।
প্রশ্ন ৪: আপনি কি তা চান না?
গন জাগরনের জয় হোক! তারুণ্যের জাগরণ সফল হোক। শুধু যুদ্ধাপরাধীর বিচার কার্যই নয় পরে ও এই গণজাগরণ অব্যাহত থাকুক এই প্রত্যাশায় আছি।
তারিফ।।।