somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কপি এ্যান্ড পেস্ট্‌ (বাস্তব জীবনের সত্য কাহিনী).

১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আম্মু আম্মু জানো, আমি নিজ চোখে দেখলাম দাদী রান্না ঘর থেকে প্লেটে করে কলিজা নিয়ে দাদাকে খেতে দিল।

এবারে কোরবানীর ঈদ করতে কিছুটা জোর করে বাস্তব তার মা-বাবাকে শহরের বাসায় এনেছে। কারন বউ তার গ্রামের বাড়ীতে ঈদ করতে যাবেনা। তাছাড়া এবারে নাকি গ্রামে প্রচুর শীত পড়েছে।

তার মা-বাবা আসার পর। বউয়ের অত্যাচার তার উপর যেন আগের চেয়ে একটু বেড়ে গেছে। বিয়ের এক বছর তারা দু জন বেশ ভালই ছিল। তার পর থেকে শুরু হয় কারনে-অকারনে ছোট খাট কথা নিয়ে ঝগড়া করা অপমান করা। তার পরেও সে সব কিছু এতদিন সহ্য করেছে। ধর্য্য ধরেছে, শুধু ছেলে- মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে। আর আজতো আরো কিছু বলবেনা কারন মা- বাবা তার ঘরে। শুধু আল্লার কাছে মনে মনে প্রর্থনা করে আল্লাহ্‌ যেন তাকে আরো ধর্য্য ধারন করার ক্ষমতা দেয়।
তার মা-বাবা ও যানে বউয়ের স্বভাব। তাই তো তারা কখনও আসতে চায় না। কিন্তু এই বউ আবার যখন গ্রামের বাড়ীতে শুশুর-শাশুরীর কাছে যায়।তখন সে এত ভালো মানুষ হয় কিছু পাবার আসায় তার পরও তারা তাকে কোন অবহেলা বা অপমান করেনা। বরং যে কয় দিন সে থাকে তাদের সাধ্যমত তাকে খাওয়ায়ে পড়ায়ে আনন্দের মাঝে রাখে। তার পর ও সে বায়না ধরে এটা নিবে ওটা নিব। সেই সাথে আবার আসার সময় গাট্টি বেঁধে নিয়ে আসবে এবং বলবে এই গুলিতো আর শহরে পাওয়া যায় না।
ঈদের দিন। নামাজ পড়ে আসতেই বাস্তবের বউ বলে, কিছুটা বিরক্ত কন্ঠে এ্যাই শোন। যেখানে কোরবানীর গরু জবাই হবে সেখানে তোমার বাবা কে সাথে করে নিয়ে যাবে, বুড়া মানুষ সে ঘরে বসে কি করবে । ওখানে গেলে তোমার সাথে সেও কিছু তোমাকে সাহায্য করতে পারবে। তার বাবা ও বলে বউয়ের কথা বলার ধরন দেখে বউমা ঠিকই বলেছে। চলো দেখি তোমাদের শহরে কিভাবে কোরবানী হয়। তখন বাস্তবের মাও বলে..
শোন বাপ-বেটা তারাতাড়ি চলে আসবে।আমি সব মসলা রেডী করে রাখছি, সেই সাথে চুন আর পানি গরম সব রেডী রাখবো। বউতো আবার নাড়ী-ভুড়ী খুব পছন্দ করে । কিন্তু সে তো জানেনা তা কিভাবে পরিস্কার করতে হয়। পথে যেতে যেতে বাস্তবের ছোট কালের কথা মনে পরে যায়। বাবা তাকে পাশে বসায়ে রাখতো আর যখন মাংস কাটা শেষ হয়ে যেত তখন কিছু মাংস আর কলিজার ভাগটা আমার হাতে দিয়ে বাবা আমাকে তারাতাড়ি বাসায় পাঠিয়ে দিত। আমি আর বাবা কলিজা খুব পছন্দ করতাম। তাই মা তারাতাড়ি রান্না করে আমাদের খেতে দিতেন। আর প্রথমে দিকে কোরবানীর মাংস খাওয়ার মজা এবং অন্যদের সাথে গর্ব করা তার মজাও আলাদা।

এরপর ঘরে ফিরলে আবার তারা ব্যস্ত হয় মাংস বন্টন নিয়ে।তার মা রান্না ঘরে। সব কাজ শেষ করে,তার বৃদ্ধ বাবা যেন ক্লান্ত হয়ে যায়,সেটা তার মা বুঝতে পারে।তাই সে বলে যাও বাপ-বেটা একটু বিশ্রাম নাও আমি কিছু মাংস আর কলিজা আগেই রান্নার চুলায় বসায়ে দিয়েছি তা হয়ে গেলে তোমাদের খেতে দিব।
এক সময় তা হয়ে যায়।তখন সে একটা প্লেটে করে কলিজা গুলি আর কিছু মাংস নিয়ে তাদের ঘরে যায়।তখন ঘরে বাস্তব ছিলনা।দেখতে পায় দাদা আর নাতী ঘুমাচ্ছে, বলে উঠো উঠো তোমরা সবাই মিলে কলিজা আর মাংস গুলো খেয়ে পানি খাও।পরে ভাত হলে খেতে দিব।আমি রান্না ঘরে গেলাম,অনেক কাজ বাকি আছে। যাবার সময় সে পাশ্বের রুমে দেখতে পায় ছেলের বৌ আর নাত্নী টিভি দেখছে,মনে হয় ঈদের প্রোগ্র্যাম।তাই সে তাদের কিছু না বলে আবার রান্না ঘরে চলে আসে। ঠিক ঐ সময় দাদীর হাতে প্লেট দেখেছিল, বাস্তবের মেয়ে প্রিয়া । তাই পাশের ঘরে গিয়ে সে দেখে আসে । তারপর সেখান থেকেই বলতে থাকে আম্মু আম্মু জানো, আমি নিজ চোখে দেখলাম দাদী রান্না ঘর থেকে প্লেটে করে কলিজা নিয়ে দাদাকে খেতে দিয়েছে।
ব্যাস, এইটুকু শুরু হয়ে গেল...............। ঈদের দিনের সব আনন্দই মাটি। আমার অনুমতি ছাড়া,কে বলেছে মাংস ধরতে। আমার বাড়িতে এসে দুদিনেই মাতবরি । এই জন্য তো আমি গাঁইয়াদের পছন্দ করিনা। আর যেতে ও ইচ্ছা করেনা। ছেলে-মেয়েদের ও যেতে দিবনা। কে বলেছে সব কিছু নিজের ইচ্ছা মত করতে। আমি আর ঐ মাংস ছুয়ে দেখবো না। খাবার তো দুরের কথা। আর রান্না ঘরে ও যাব না। এই কথা গুলি এক নিঃশ্বাসে বলে ফেলে বাস্তবের বউ। তখন তার শাশুড়ী দিশে-মিশে না পেয়ে, বলে বউমা আমার ভুল হয়ে গেছে,আমি ঐ ভাবে কিছু করি নাই। ভাবলাম ওদের ক্ষিদে লেগেছে তাই একটু খেতে দিয়েছি। বউ বলে খেতে দিয়েছেন, না ! বাড়ীতে আসন নিতে চান ?

এরপর সে কেঁদে চলে যায় রান্না ঘরে। ভাবে সেই ভোর থেকে নামাজ পড়ে এখন পর্যন্ত মসলা থেকে শুরু করে একটার পর একটা যোগারে এই রান্না ঘরেই পড়ে আছি। এই বুড়া বয়সে, নিজ সংসারে আজও রান্না করে খেতে হয়। ছেলের বাসায় এসেছি, একটু আরাম করবো, ঘুরবো-ফিরবো সেতো আর কপালে হবে না। বউ একবার বললো না আমার আরামের কথা। অথচ সে টিভির ঘরে অনুষ্ঠান দেখা নিয়ে ব্যস্ত। এই ঢেঁকির কোন সুখ নাই।

এই সময় বাস্তব অসহায়ের মত সব কিছু দেখছিল। কিছুই বলার সদ সাহস তার নাই। কারন সে জানে,আগুন তাতে আরো বেড়ে যাবে।চুপ থাকায় ভালো। কিন্তু বাস্তবের ছেলে তানভির চুপ থাকলো না, দাদিকে কাছে টেনে নিয়ে বললো...দাদি তুমি কেঁদো না,দুঃখ ও করো না, আমার মা এমনি বাবাকে কত কি বলে। বাবা এখন আর কিছু বলেনা,বোবা হয়েগেছে। শুধু বলে আমাদেরকে নাকি অনেক এবং খুব বেশী ভালোবাসে। আর আমার ছোট বোন চিপকি, প্রিয়া। ওতো মার কার্বন কপি। তবে দাদি, আমিও মার সব কিছু কপি করে রাখছি। আর বাবা আমাকে কোম্পিউটারে কপি এ্যান্ড পেস্ট্‌ করা শিখায়েছে। আমি বড় হলে যখন বিয়ে করবো। তখন তোমরা দেখে নিও আমার কপি করা থেকে আমি নই আমার বউই মার উপরে সব কিছু পেস্ট্‌ করে দিবে।

আবার এমন ও হয়।
Click This Link

কেউ দয়া করে পোষ্ট টিকে ভিন্ন ধারায় প্রবাহিত করার অপচেষ্টা না করলে খুশি হব এবং কৃতজ্ঞ থাকব!!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ৯:৪৮
৩২টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×