পৃথিবীর বিন্দু পরিমান মায়ার সাথে জড়িয়ে থাকাটা একান্ত ই নিষেধ হিমুর জন্য। কাল্পনিক এক চরিত্র "হিমু",
অদৃশ্য স্বার্থপরতাই বহমান তার ব্যাক্তিত্বে যা বুজতে আমাদের অবেচতন মন বরাবর ই ব্যার্থ, আদৌ কি বাস্তবে বিন্দু পরিমান মায়া ত্যাগ করা সম্ভব? অথচ ছলে বলে কৌশলে হিমু কিন্তু ঠিক ই তার প্রতি এক অদৃশ্য মায়ায় আবদ্ধ করে রেখেছে তার ভক্তদের। কিন্তু কারো প্রতি বিন্দু পরিমান মায়ায় জড়াতে চায়নি কখনোই কতটা স্বার্থপর এই হিমু ছেলেটা তা আর বোঝাবার কিছু নেই,,
হুবুহু হিমুর এন্টি চরিত্রে রয়েছেন আমাদর "বাস্তবাদী কাল পুরুষ"
এর আবার মায়ার শেষ নেই পথে-ঘাটে, আকাশে-বাতাসে এমন কি ছোট পিপড়া থেকে বিশাল জড় পদার্থ পর্যন্ত তার মায়ার শিকড়ের বাইরে নেই। বাস্তবাদীর ব্যাক্তিত্ব জুড়ে কেবল ই নিঃস্বার্থ মায়ার প্রতিধ্বনি।বিছানার বালিশ থেকে শুরু করে ড্রেনের ময়লা পানি জুড়েও তার কি মায়া!!
-আহা এ যেন কোন এক মায়াবতীর নিজ হাতে গড়া প্রেম পুরুষ।
দরজায় ঠক ঠক আওয়াজেই জব তোলে বাস্তবাদী, কে? এই কে-, দরজা খোলাই আছে ভিতরে আসেন, বলতে না বলতেই-
দরজার ওপাশ থেকে এক নারী স্বরের প্রতিধ্বনি জি আমি "মায়া"
বলতে বলতেই- ভিতরে প্রবেশ ঘটলো এক মাঝ বয়সী রমনীর, সঙ্গে সঙ্গেই আগোছালো বাস্তবাদী টি শার্ট পড়ে অর্ধ উলঙ্গ দেহখানা ঢেকে ফেলার অবাধ্য চেষ্টা।
ইয়ে মানে!!! আপনাকে ঠিক চিন্তে পারলাম না প্রায় আমতা, আমতা করে বলেই ফেলল বাস্তবাদী।।
এ কথা শুনেই এক নীরব মুচকি হাসির প্রতিস্থাপন ঘটে "মায়ার' মুখ জুড়ে, আর ততক্ষণে তার আখি যুগলের মায়াতেই হারিয়ে অপলক দৃষ্টিপাত করে কাল্প্নিক চিন্তায় বাস্তবাদী। আরে আমি "মায়া" আন্টি তোমাকে যে ক্লাস সিক্সে এ পড়িয়েছি।
ওহ!!!!
বলেই অবাক দৃষ্টি পাতের ইতি ঘটলো বাস্তবাদীর।
এর মধ্যেই শুরু হল "মায়া" কে ঘিরে অদৃশ্য মায়া জাল বুনা, যা প্রায় রিতীমত "মায়া" কে ঘিরেই ফেলেছে দুরগন্ধময় মাদকতায়।
'মায়া' যেন বমি করেই দিবে এরকম অবস্থাতেই মুখ হাত দিয়ে চেপে রেখে ভাঙা গলায় বলে উঠলো-
এ কিসের গন্ধ!! এত বিছরি!! কেন???
ততক্ষনেই লেমন ফ্লেভারে রুম স্প্রে করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে বাস্তবাদী,
আজ প্রায় ২বছর যাবৎ বাস্তবাদীর রুমে প্রবেশ করলেই বিব্রোতকর অবস্থায় পড়েছে প্রতি নিয়ত অনেকেই। মায়া কেও শিকার হতে হল সেই এক ই কুয়াশাছন্ন মায়াবী মাদকতাময় দুর্গন্ধের।।
- আর হবেই না কেন?
রুম থেকে যেন ভ্যাপসা ঘেমে থাকা পচা দেয়ালের দুর্গন্ধ বের হচ্ছে, অথচ-
রুমের দেয়াল গুলো তো ফকফকা টাইলসে সজ্জিত প্রানবন্ত প্রতিচ্ছবি ধারন করে আছে।
তাহলে, এই দুর্গন্ধের উৎস কি? তা অনেকের ই আগ্রহের বিষয় হয়ে ওঠেছে রীতিমত।
বারান্দায় থাকা ফুলের টবএর প্রতি রয়েছে বাস্তবাদীর অবিচ্ছেদ্য মায়া। টব টা বেশ কারুকার্যময় হলেও এতে না আছে কোন উদ্ভিদের স্পন্দন না আছে মাটির আত্নভুবন!! পুরো টপ ভর্তি সিগারেটের ছাই আর থুথুর আবরন সে কি জঘন্য অবস্থা,
যেন- নোংরামীর এক শৈল্পিক ভাস্কর্য।
প্রায় ৩বছর যাবৎ বাস্তবাদী এই টব কে সিগারেটের ছাই আর থুথু ফেলার পাত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছে যা থেকে সৃষ্ট হওয়া দুর্গন্ধ তার রুম কে মায়াবী মাদকতায় জড়িয়ে নিয়েছে বলেই তার বিশ্বাস।
বাস্তবাদী বারংবার টব টা কে পরিষ্কার করা বা ফেলে দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়েছে। টপ এর প্রতি জন্মে ওঠা কোন এক অজানা মায়া আর সৃষ্ট দুর্গন্ধের মাদকীয় আসক্তির কারনে।
বড়ই নিঃস্বার্থ এক মায়াবনের পথিক এই বাস্তবাদী। জীবনে চলার প্রতিটি স্তরেই সে আটকে যায় মায়া জালে কেবল কোন নারীর মায়াতে তার কোন আসক্তি লক্ষ্যনীয় ছিল না।
তবে এই প্রথম মায়া আন্টির চোখের মায়াতে পড়েছে বাস্তবাদী।
আখি যুগলে যেন সদ্য ফোটা রক্তাত্ব জবার ছায়া, আর-
ব্রু জুড়ে খেলা করছে আলো আধারীর লুকোচুরি মায়া।
সে কি এক অদ্ভুত মায়াবী আখি, এতকাল কি এমনি কোন মায়ার অপেক্ষাতেই ছিলো বাস্তবাদী?
না, তা সে নিজেও জানে না। তবে বেশ বোধ করতে পারছে যে মায়ার মায়াবী আখিতে তার আসক্তি ভালোভাবেই ধরেছে ভাবতে ভাবতেই আকস্মিক কোন সৃষ্ট আওয়াজেই ঘুম ভাঙলো বাস্তবাদীর।।
কে যেন দরজাতে ঠক ঠক আওয়াজ করছে,
ঘুমাচ্ছন্ন চোখের রেশ মুছতে মুছতে একা একাই হাসছে বাস্তবাদী, আর ভাবছে কি এক আজব স্বপ্ন দেখল, আর নিজেকেই মনে মনে প্রশ্ন করছে আমি কি করে এত নোংরা ব্যাক্তিত্ব বহন করলাম?
তাও- স্বপনে!!
কিন্তু স্বপ্নে দেখা সব কিছু স্বপ্নতেই হারিয়ে গেলেও স্বপ্নময়ী সেই "মায়ার" মায়াবতী মুখ টা এখনো স্পষ্ট হয়ে আছে বাস্তবাদীর স্মৃতি তে।
চোখ বুজলেই শুনতে পায়-
সেই কণ্ঠস্বর, আমি মায়া!!
আর চোখের অন্তঃদৃষ্টিতে ভেসে ওঠে সেই মায়াবতীর মুখ খানা, আহা! সে কি এক অদ্ভুত আতকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা কাল্পনিক মায়া।
আজো সেই মায়াবতীর মায়াতে জড়িয়ে আছে বাস্তবাদী। কখনোই দেখা পায়নি সেই মায়াবতীর, আদৌ পাবে কিনা তা সে জানে না শুধু জানে মনের মাঝে বিধে থাকা একটি ভুল- কে ছিলো সেদিন দরজার ওপাশে?
কে নক করেছিলো আমার দরজার ওপাশ টা তে?
সত্যি ই কি কোন মায়াবতী ছিল?
কেন যে একটু খেয়াল করে দেখেনি কার সৃষ্ট আওয়াজে সেদিন ঘুম ভেঙ্গেছিল বাস্তবাদীর,
কেন দেখা হয় নি- তা নিতান্তই ভুল বলেই মেনে নিয়েছে সে, হয়তো আজীবন বাস্তবাদীর সাথে ভুল এর সৃষ্ট আফসোছ টাই থাকবে কিন্তু মায়াবতী বলে কেহ কখনোই আসবে না...
বাস্তবাদীরা এমন ই কাল্পনিকতার কোন কিছুই তাদের বাস্তব জীবনে ফিরে আসে না, তারপরও কাল্পনিক স্বপ্নে বিভোর হয়েই পথ চলে থাকে প্রতি টি বাস্তবাদী।।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭