somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘবাজি সমগ্র-১

১০ ই জুন, ২০১০ সকাল ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুনেছি কেউ কেউ মরে যাচ্ছে....

শুনেছি কেউ কেউ মরে যাচ্ছে
আগাম অন্তেস্টক্রিয়ার দাওয়াত বিলি হচ্ছে পানশালায়।
আমরা শহর-ফুল-এবং সন্ধ্যার মরে যাওয়া দেখেছি,
দেখেছি মৃত্য রটে যাওয়া ঘন্টি হাহাকারে উড়ে গেছে!

মহাশুন্যতার বারান্দায় বেহালা বাজায় যে সব ফেরেস্তা
তারা নক্ষত্রের এলায়িত ঘুমে খোদায় করেছে মৃতদের নাম।
তাদের স্বাস্থ্য পান করে মাতাল হয়েছি সবাই অথবা
নিজেরাও মৃত হবো ভেবে, বিষাদের তলদেশে ঋদ্ধ ঘাস
সবুজের বিপরিতে ক্রমশ দুরবর্তি......


এক ঝাঁক অন্ধ শালুক অপহৃত রেনুর সন্ধানে তোমাকেই খুঁজে নেবে

এক ঝাঁক অন্ধ শালুক অপহৃত রেনুর সন্ধানে তোমাকেই খুঁজে নেবে
চলনবিলে অধিকার ছেড়ে যে গজাড় শিশ্নের বিশালত্ত নিয়ে
ডুবে গেছে দোঁয়াশের ব্যান্জনায়, তার প্রতিটি অনাগত পোনার খোরাক হবে তুমি।
হাওয়ার উজান থমকে গেছে ডিংগির পেটে, জলের ঘুমে নিভন্ত হাওয়া
জন্মের তালাশ তোমাতেই। তুমি ভাটফুলের নামতা জানো না, শেখোনি
কাদার গান, অবোধ্য শাপলার হেয়ালি; তুমি কিছুই জানো না!
এক ঝাঁক অন্ধ শালুক অপহৃত রেনুর সন্ধানে তোমাকেই খুঁজে নেবে!!

!!

!

বিকল গাড়ির ব্যাক সিটে
মৈথুনরত খরগোস।
যে গাড়ির গন্তব্য
পৌঢ় ফুলের খোঁয়াড়!
দুটো নম্র পাখা ভিউ মিররে
উড়াল লিখে রাখে..
বির্যরহিত খরগোস
উড্ডয়নের খটকা নিয়ে
নেমে যায় নার্সারির মোড়ে।

!!

মজুমদারের ঝোলায়
রোদের ফতুয়া পরা রাস্তা হারিয়ে গেছে বেমালুম!
তার কব্জির শীরায় ধাবমান জলযান
খেই হারিয়ে ভিড়ে গেছে হৃৎকম্পনের খিড়কিতে।
হন্যে শব্দেরা তোবড়ানো টুপির মন্দিরে
নতজানু প্রার্থনায়, উলের ধাঁধায় বোহেমিয়ান বাক্যেরা!

মজুমদারের ঝোলায়
কয়েক দশকের নান্দনিক আংগুল
বিদ্ধ আপেলের খোরাক......


বেগুনি মাছেরা নিথর মানুষ বনে ঢুকে গেছে আলগোছে

বেগুনি মাছেরা নিথর মানুষ বনে ঢুকে গেছে আলগোছে
যারা জলের রং দেখে নীল বা লাল, তাদের খোলা চোখে
মাছেদের বৈঠক, কম্পনের ছাঁচ থেকে মাছেরা বার্তা পাঠায়
সেই সব সম্ভাব্য মানুষদের কাছে, যারা গর্ভের জলে দাবার ছক কেটে
মগ্ন বেশ, অথবা যারা শ্যাওলার পদাবলী ফেরি করে ফেরে না আর
তাদের ফুসফুসে বেগুনি মাছ ক্রমশ নীল বা লাল
হয়ে রেখে যায় ডিমের খবর। কিছু রংহীন মাছ শবাগারে চলে যায়
তারা দেখে কালো ও ধুসরের মৈথুনে ফুটছে পদ্মের যোনী
তারা সম্ভাব্য মানুষের ফুসফুসে জমে থাকা নীল বা লাল ডিম
খেয়ে ফেলে। রংহীন মাছেরা জানে আপাতঃ সব রং এর জন্ম

শুন্যে..............


নিভন্ত বাড়িদের গাঁথা

সুহৃদ, আমাদের জনপদে এই নভেম্বরের শেষে
কুয়াশারা গর্ভিনী হয়, শিশু-পথ নির্বিকার চলে যায় অজগর ঘুমে
হাওয়াদের সৎকারে ক্রমশ কালো দেয়াল,
পলেস্তারার শোয়েটার বুনে যায় বিষন্ন কুকুর।

সুহৃদ, আমাদের নিভন্ত বাড়িদের শীরায় কোন প্রবাহ নেই
ত্রস্ত পৌর ইঁদুর ফেলে গেছে তামাদি করের নোটিশ
কড়িবর্গায় শব্দের ফসিল যে পোকাদের দখলে ছিল
তারা আজ বিগত, ঘুলঘুলির স্মৃতিহীন চড়াই, যার ঠোঁটে
ছিল জোড়া ধানের আখ্যান, তার চোখ ধুসর ভিষন!

ছায়াকথন

মৃত কুকুরের পিঠে সওয়ার যে সকল ছায়া
গলে গলে মিশে গেছে মাংশের আফিমে
তারা জানে; পরিনত দুপুরের দাগ
পেরিয়ে যাবে বিদেহী সরাইখানা,
আর ধর্ষকামী হাইওয়ের ঠোঁটে জমে থাকা সুর্যরতি
নেমে যাবে গাছেদের চোখে!

ম্রিয়মান তুষারে ডুবে আছে যে সকল ছায়া
ঝরে ঝরে চলে গেছে ওভারকোটের ঠিকানায়!
তারা জানে ডিসেম্বরের হাতমোজায়,
জমে আছে বরফকলের হুইল....................

কিউরেটর

অলীক! অলীক! বলে চিৎকার করেছিল যে উন্মাদ
নক্ষত্রের অধগতিতে ধরা পড়েছিল সে
মিউজিয়াম প্রকস্ঠে একেকটা জন্ম
হেঁটে ফিরে গেছে জীবাশ্মের কাছে!
কিউরেটর নিস্পৃহ হাতে ছেঁটে দেন দর্শন সূচি
ভিজিটর লিস্টে যে সকল গতায়ূ চোখ
গেঁথে রেখেছিল নিউরনলীপি, তারা ঝরে গেছে।

অলীক! অলীক! বলে চিৎকার করেছিল যে উন্মাদ
তার প্রকস্ঠে পিছু হেঁটে গেছে কয়েকটি আলোকবর্ষ
হিমাংকের নিচে জমানা উত্তাপ, দ্রবিভুত কফি মগে,
খেয়ালি চুমুকে কিউরেটর মেপে নিলেন
ছায়াপথের গভিরতা, মহাজাগতিক ক্যাফেইন।

তারপর চলে গেলেন তিনি, চাবিহীন!!


আমরা কি আর্ত ছিলাম?

আমরা কি আর্ত ছিলাম?
প্রিয় সহদরেরা শৈবাল দামে ,
সোঁদা গন্ধ হয়ে মিশে গিয়েছিল কি?
জলজ পদাবলি ঠুকরে নিয়েছিল কোন প্রত্নপাখি!
আহারে হাড়ের বাক্স! হাওয়ার মীথ নিয়ে
খুঁজে পেয়েছিল কি প্রশ্বাসের দেয়াল!

আমরা কি আর্ত ছিলাম?
জাদুকরী বনিকের ঝোলায়
একে একে ঢুকে গেছি সব, অবলীলায়!
আত্মজ ধানের শ্লোক, বরেন্দ্রী বিকেল
সব...সব বিকিয়েছে শূণ্য দামে!

প্রতিদিন একটি খুনের স্বপ্ন!

কেউ লোমকূপে পুষে রাখে স্বদন্তের আখ্যান
কারো আস্তিনের ভাঁজে প্রেয়সি হেমলক সুন্দর বেড়ে ওঠে
যৌথখামার জুড়ে কর্ষিত বারুদবন, সালফার ঘ্রানে
বেঁচে ওঠে কার্তুজ শিশু! আর প্রাজ্ঞ ছুরিকা
শীতঘুমে আমুল-বিদ্ধের জ্বরে পুড়ে ধারালো হয়!

কেউ লোহিত শাস্ত্রে বুনে দেয় কেউটে ফনা
কারো মধ্যরাতের সংগম ঝলসে ওঠে গিলোটিন বিভ্রমে
কারো অনিদ্র মগজে নিয়ত জ্বলে....
প্রতিদিন একটি খুনের স্বপ্ন!

একদা নারীগণ.....

একদা নারীগণ
পাহাড়ের সমার্থক ছিলেন
তাঁদের পাঁজর-লগ্ন কাঁকর
হীরের অধ্যাস নিয়ে কাটিয়েছিল
প্রস্তরকাল, গুহাবাসী ব্যাধ তাঁদের
উরুসন্ধির অটলে এঁকেছিল
ম্যামথ খুনের নকশা, আগুনের প্রতিলিপি!

অদ্রি নারীগণ
অরণ্যের প্রতিশব্দ ছিলেন
তাঁদের মদির খোঁড়লে
জমা ছিল বনবেড়ালের চাপল্য,
সহস্র পিঁপড়ের নিরাপদ ভাঁড়ার ছিল বাহুমূলে,
বাকলের তলদেশে হিমঘুমের সূত্র।

একদা নারীগণ মেনে ছিলেন
গাঁইতি-কুঠারের বৈকল্য!!

সাম্প্রতিক আগাছা


ঢেউয়েরা বুড়ো হবে
একান্ত দাঁড় বুনে যাবে তার শ্লোক
গলুইয়ে বিছানো গোপন সন্যাস
নিয়ে যাবে ঋতুবতী হারিকেন,
কেউ টেনে যাবে ব্যাখ্যা দায়তি গূন
কতদুর...কতদুর
সারেং বদলের ঘাট।


এই আসক্ত টেবিল, অবনত গ্লাস
অথবা...
আত্মপাঠে মশগুল মথের বিলুপ্তি
অথবা...
ওইট্রেস এর কাঁচুলির ফাঁদ
অথবা....
আদি বৃক্ষ ও নব্য নদীর দিনযাপনের সুত্র
আরো এক পেগ দ্রবিভুত আঁধারের উপলক্ষ্ হয়।

বেড়াল ভেন্যু
শহরের সকল বেড়াল এপ্রিলকে জেনেছিল নির্মমতম মাস
মধ্যরাতে পৌরসভার ঘড়ির নির্যাস ফিকে হয়ে এলে
দলে দলে ওরা আসে; চোখচেরা লাল, ধাঁধানো হলুদ, নিস্পৃহ ধুসর
ফুরফুরে শাদা এমনকি স্নিগ্ধ জলপাইও।

ইঁদুর উৎসবের রিমোট ফেলে আসে হুলো,
লেজের সন্ধিতে আধফোটা কাম নিয়ে আসে ডোরাকাটা তরুন,
প্রিয় র‌্যাবিজ দাঁতের পরিচর্যা ছেড়ে আসে মাতাল ধেড়ে...
আসে ভিনগাঁয়ের বাহারি লেজের সিয়ামিজ!

ট্যাপের প্রপাত গলিপথে ঝরায় আদ্র মিউ মিউ
ড্রেনের মোহনায় মার্বেল চোখের ফাঁদ থেকে
খসে পড়ে মৎস্য ঘ্রান, এমনকি
রেস্তঁরার মোহন নিতম্বের কুহক পর্যন্ত!

এপ্রিলের পেটে জড়ো হতে হতে ওরা জেনেছিল
লোমের আলস্যে ডোবানো নাক জাগবে না আর!!


নিরানব্বুই থেকে দু'হাজার: প্রাচীন আগাছা সমস্টি থেকে কয়েকছত্র!



অবশেষে আমার অবশিস্ট নিয়ে বেরিয়ে আসি
উপলব্ধির চোয়াল ভেংগে ভোকাট্টা বোধ; একদা মানুষ ছিলাম!
নিরন্ন করতলের গলি-ঘুপচির শোক-সন্তপ্ত পোকাদের বোঝাই,
ধানের ভেতর ভবিস্যতের ঘ্রান গেঁথে যাবে আমাদের নখে।
অত:পর ঘুরে আসি গনিকা সমৃদ্ধ নগরী, ছুয়ে আসি
বিষন্ন নিয়নের নিচে অভিজোযিত স্বজাতি
এবং সমবেত হই শহীদ মিনার কিংবা স্মৃতিসৌধে
যেখানে বেজন্মা মাশরুমের প্রতিশব্দ আমরাই!!



পরক্ষে যাবো উদ্বাস্তের মতো
ভাববিলগ্ন অথবা দিকভ্রান্ত হয়ে, বাতিহীন পোস্টের শীরদাঁড়া
থেঁতলে, গলিটাকে তুবড়ে আরেকটু বাতিল করে
আগুন চাইব অনাগত হাতের কাছে।



যখন কেউ ভাঙ্গছিল
যখন কেউ কাঁদছিল
যখন কেউ মরে যাচ্ছিল...

তখন

চারপেয়ে পুরোহিত একজোড়া হাত বন্ধক রেখে খুলে দেয় ওপারের মুখ

ওপারেও কেউ ভাঙ্গছিল
ওপারেও কেউ কাঁদছিল
ওপারেও কেউ মরে যাচ্ছিল....



ভাংগাচোরা শরীরে দিনকালের খাল কাটে অনুরুদ্ধ শ্রমিক
মেঘ কিংবা জলের গন্ধে উপবাসি থাকে মৃত্তিকা বালক, আর
সেই খাল বেয়ে ধেয়ে আসে স্বরচিত ডিংগি.....



মন্থরতা বোঝাই শেষ ট্রেন
ঘুমটি ঘরের উপেক্ষা নিয়ে চলে গেল
আমনুরা নাকি রহনপুর নাকি আরো দুরে
কবে কার হুইসেল বেজে গেল খুব করুন
আমাদের বধির কানে!!


'৯৮-'০০


নিরানব্বুই থেকে দু'হাজার: শিরনামহীন খসড়া থেকে.....



অপলা নাকি অপর্নাদের
দুর্গা নাকের নিচে মিঠে মিঠে ঘাম
হিংসুটে রুমাল শুষে নেয়,
উর্বরা ঘামের কারসাজি, ঘাসফুলের বিবর্তন নাকফুলে
মার্বেল হারানো বালকেরা মন খারাপের মাঠে চষে বেড়ায়
একটা দুটো নাকফুল......

(শেষ হয়ে ওঠেনি...)



সিঁড়ি ঘরে
পায়ে পায়ে নেমে গেছে
সন্তর্পনে
নোনা চুমুর সাথে
বিরহী চড়ুইকাল।



আমাদের শহরে ব্যর্থ দেবদূতেরা
বিষন্নতার স্বেতপত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায় পাড়ায় পাড়ায়
আর শোকের কালো পতাকা ইস্কুল-কলেজ-অফিস-মুদিদোকান
মহল্লার ক্লাব ঘরের মাথায় বাদুড়ের মতো ঝুলে থাকে।
দেয়ালে দেয়ালে কান্নার ব্রাশ চালায়, ওদের ধ্বসে পড়া ডানার
মৃত সব পালক নিরানন্দের চিঠি হয়ে উড়ে যায়
আমাদের ঠিকানায়....

(শেষ হয়ে ওঠেনি...)

১৯৯৯-২০০০


রৌদ্রবনিক

হে প্রার্থিত রৌদ্রবনিক!

রোদের কাফেলা নিয়ে আসুন আমাদের শহরে
আমাদের খোজা ল্যাম্পপোস্টে নিয়ত ফোটে অন্ধ গোলাপ
আর পানশালার সমুহ বাতির রসদ আমাদেরই রক্ত
পৌরসভার নিরাসক্ত নালায় আমরাই অনিবার্য জ্বালানী!

আমাদের ফ্যাকাসে প্রেয়সীদের চামড়ার নিচে
উদগ্র কোমলতা, আমাদের ভাঁড়ার বোঝায় থরে থরে শর্করা,
সালোক-সংশ্লেষের বিভ্রমে বুঁদ সবুজ, বিকলাংগ শিশু দাস,
নগর-পিতার লিংগের চাইতেও দামি ছড়ি, উপাসনালয়ের বধির গ্রন্থ, বিপনী বিতান........সব, সব তুলে দেব আপনার ভ্যানে!

শুধু আপনি, এক ফোঁটা রোদ, আমাদের বিমর্ষ মনুমেন্টের
অস্ফুট চোখে একবার যদি গড়িয়ে দিতেন!!

শূঁড়িখানা

প্রিয়তম শূঁড়িখানা আমার!
সেই সব করুন ছায়াদের প্রবাহন
থমকে যায় গেলাশের ঢালে;
তলানির অবশিস্ট জানে অনুদিত তৃষ্ণার খেদ!
প্রহৃত সন্ধ্যা ঢলে পড়লে তোমার নাভিমূলে;
নক্ষত্রের তারল্য ফেনায়িত ঘুমায়.....
পানপাত্রে।

আর বিনয়ী মাছিবৃন্দ চৌকস খুব
তুরুপের তাস বাটে, মুদ্রাশুন্যদের প্রবল হাহাকারে
বিদ্ধ হয় নিরাবেগ টুথপিক!
নর্তক মেঝের টুইস্ট, ডেকে আনে কোন অতল!

গোথিক

আমরা কতিপয় সরিসৃপ
বুকে হেঁটে বয়ে গেছি গোথিক নালায়
আর সেই সব পবিত্র ক্লেদের চাষিরা
আমাদের ঋদ্ধ আঁশের বিনিময়ে ভরে তুলছে ভাগাড়।
মৃত বেড়ালের চোখে সওয়ার হয়ে এসে ছিল
বালখিল্যের মোচড়ানো পুতুল;
বিগত ওমের তালাশে।
কতোকাল পাখিহীন আমরা ! শোকেসে গুলতির ফসিল;
আর সেই সব ভাগ্যরেখার উল্কি, বয়ে গেছে আলস্যে
আমাদেরই অবশিস্ট সর্পীলে....

মৃতেরা হেসে উঠলেন

ফেরী ঘাটে মৃতেরা জড়ো হলেন, চা খেলেন
আর নিস্কাম গোর-খোদকদের সাথে তাস খেলে কাটিয়ে দিলেন
অবোধ্য নদীর চাঁদ সহবাসের বীর্যকাল।
গুটি কয়েক ফেরেস্তা আত্মরতির মর্গে নিবিষ্ট
আর পয়গম্বরগন মাছেদের খোরাক হলে
মৃতেরা হেসে ওঠেন....
অন্ধ ছুতার কফিনের চোখে গেঁথে দেয় আংগুল
ডালা বদ্ধ বিষাদেরা ভোরটেক্স গুহায়
কর্নিয়ার উড়াল চিত্রে হামা দিলে



মৃতেরা হেসে ওঠেন......

বিষাদের দেউড়ি শীষ দিয়ে উড়ে গেছে!

আজকাল আমার অনুগত প্যান্টের পকেটে
যে ধুলো গুলো ঘুমিয়ে থাকে;
ধ্বসে পড়া দুপুর আর দোয়েল ঘ্রানে তারা আড়মোড়া ভেংগে দেখে
বিষাদের দেউড়ি শীষ দিয়ে উড়ে গেছে,
কড়ি-বর্গায় পোকাদের প্রাচীন বসত পেরেক বোনা শেঁকড় উপড়ে
তুমুল চলে গেছে!
ঘামের মমি ছেড়ে উড়ে গেছে আনুবিস,
টি-শার্টের উপত্যকায় হায় তোলা ম্যাটাডোর, বাথান জুড়ে ষাঁড়ের বিভ্রান্তি!

আমাদের করতলে জেগে ওঠা এভিন্যু!

আমাদের করতলে জেগে ওঠা এভিন্যু
বয়ে যায় বিগত রেস্তরায়, যেখানে
কয়েনহীনতায় খুব গ্রিল হয় ওয়েটার জীবন
আর ছাপাকলে ভূমিষ্ঠ কাগজের মনস্তাপ
ঢুকে পড়ে বাজিকরের দুর্বোধ্য ঝোলায়,
যে হেঁটে গেছে মলম বিক্রেতা আর
বাঁদর নাচিয়ের ডুগডুগির খরস্রোতে
আমাদের করতলে ঢেউ তোলে বিনম্র এভিন্যু
কোঁচবিদ্ধ বোয়ালের বহর নিয়ে আসে.................

প্রার্থিত করাত আমার!

রোদের সুড়ং ঘেসে চলে গেছে আমাদের বুক
অপেক্ষমান গাছের লাশ জানে করাত স্নেহ
উন্মুখ পাঁজরের বাগান নিস্পৃহ কিউ এ
খুলে দিচ্ছে হাওয়া ঘরের কপাট,
ঠুলিপরা শ্রমিক আমাদের বুঝে নিলে ক্রশিফাই বনটিয়েরা
কলোনীর দুরবর্তি খোঁড়লে
হারানো মুদ্রার ঘূর্নন জমা রেখে.....
উড়ে যায়।

গতজন্মের এঁটো ঠোট

ফ্রস্টেড টেবিল ঘিরে বিবিধ উন্নাসিক চেয়ারেরা
একজন বেড়াল আমার মুখোমুখি
গতজন্মের আধ খাওয়া মাছের শীরদাঁড়া বড় ম্রিয়মান ঝুলে আছে তার ঠোঁটে।
স্বৈরিনীদের ছুঁড়ে দেওয়া কামার্ত আপেল, ঋদ্ধ ইঁদুরের গুদামে
হন্যে হয়ে খোঁজে আ্যাডামের দুরাগত জিভ।
আর মাছিগাঁথা চকচকে প্লেট কাঁটা-চামচের প্রার্থনা-গানে বুঁদ
অস্পস্ট উনুনের আঁচে ক্রিড়ারত ভাতেরা ফিরে যায় ধানে
তরুনি মুরগির বুক খেয়ে নেয় প্রতিবেশির পরজীবি জানালা

.................................................আমি ক্ষুধার্থই থেকে যাই

মরবিড



ছোট ছোট যীশূরা হেঁটে গেল গনিকালয়ে
প্যাগান পেয়ালায় যে শুয়াপোকার চোখ মুঁদে ছিল সুন্দরতার আক্ষেপে
তারা ছোট ছোট যীশূদের চেটেপুটে খেয়ে নিলে ঈশ্বর বীর্য স্বল্পতায়
ক্রমশ ক্ষয়ে যান।



পিতামহের কবরে রোদপায়ি অজগর আমাকে দখল নেবে
আমার ওমটুকু তাঁর দাঁতের পাত্রে জ্বলে উঠবে বলে
আমি এইবেলা হীম হয়ে পড়ে আছি
আর মাংশ শিকারী দুর্বা'রা দেখছে খুব অলস
পিতামহ-আমি-রোদপায়ি অজগর সবাই তাঁর নৈবেদ্যের ঝাঁপিতে সেজে আছি!


অভিজ্ঞ ছুরিকা পুড়ছে ঘামে , কন্ঠার ওঠানামা থেকে জন্মদাগ
বিমর্ষ তিল ছুঁয়ে নাভিতক চিরে দেখি
ঘুমিয়ে আছি আদ্যপান্ত আমি নিজেই!

দালী ওহ! দালী



যাযকের দল মেঘেদের সাথে সংগম-ব্যার্থতার স্মৃতি পুষে রাখে পশ্চাৎদ্দেশে
গন্ডারের কামুক শিং বিদ্ধ কুমারী ক্রমশ লাল হয়ে আসে আর
ঘুমের রেলগাড়ি নেমে যায় চিরে যাওয়া চোখের অ-নে-ক অতলে

পতিতার কনফেশনে যাজকের উরুসন্ধি কিসের বাৎসল্যে আদ্র হয়
যীশূ নেমে আসেন, ক্রুশ জুড়ে পোষা পিঁপড়ের মাতম .....

আহ! দালী, অলিভ গিরগিটির দল নিস্পাপ শুয়ে থাকে পেন্সিল কার্বনে
কাটা হাত এঁকে যায় আরেক হাতের মাধুর্য
বরফ পুড়ছে খুব আমাদের গোলাঘরে, ওহ! দালী......

গুহা শহর

গুহাশহরের অধিবাসীরা নিজেদের হাড় খুলে ঝুলিয়ে রাখে সদর দরজায়
আর পুর্বজদের জীবাশ্ম ছেঁকে জন্মদাগের হদিশ পেতে খুঁড়ে চলে পাহাড়ের স্তন

শিশ্নহীন আঁকিয়েরা গুহাচিত্রে চেটে যায় বাইসন শিং আর স্যাবর দাঁতের বাহকেরা শিখে নেয় কামড়ের ছলাকলা

গুহাশহরের রেস্তরায় হরিন সংগমে ব্যার্থ শ্রমিক খেয়ে ফেলে আস্ত গাইতির কাঠিন্য আর উন-ওয়েটার বিল বাবদ নিয়ে যায় হরিনের থরথরে চিত্রল

এখানে যোনিহীন নারীরা গর্ভের জল ঢেলে ধুয়ে দেয় গলিপথ
অনাগত শিশুরা হাসে, পোকার খেলে, সিগার খায় আর সংগম ভোলা মানুষগুলোকে কটাক্ষ করে নিভে যায় গলিপথ শুকিয়ে গেলে।



পাপেট হত্যাকারীগন যখন আত্মখুনের কার্নিশে.....

যেসব সুতো ধরে রাখে বা ঝুলিয়ে রাখে বা অন্যকিছুতে অনুবাদ করে; পাপেটের নির্বিকার পলক

সেইসব সুতোই কাঁচ বুনে দ্যায় যে বালকেরা, তাদের ইশকুলে পাপেটরাও যায়, দুলে দুলে নামতা পড়ে

পড়া শেষে বালকেরা বৈচি বনে পাপেটগুলির ওপড়ানো চোখ দিয়ে নির্লিপ্ততা ছড়িয়ে দেয়....আর রংগিন কাপড় আর তুলো সকল হয়ে যায় একঝাক হট্টিটি

এরপর বালকেরা পাপেট-সুতোর কার্নিশে ঝুঁকে দেখে আদ্যোপান্ত তারায় ঝুলে আছে........


দক্ষিনের সন্ত, জোব্বাপুর্ন নদী আর ধান কথা

দক্ষিনের যে সন্ত জোব্বায় নদী পুরে আমাদের শহরতলিতে এলেন;
আমরা শ্যাওলা ধরা মানুষগুলো তাকে বললেম;
"দেখ হে সাধু, আমরা জলের ছলাকলায় ক্লান্ত খুব আর জলপোকাদের প্রজনন বাবদ আমাদের রতিশক্তি বিকিয়েছে খুব সস্তায়।"
সন্তর চোখে দক্ষিনের একটা ধান আগামীর শর্করা হয়ে দুলছিল খুব
আমরা তাকে বললেম;
"আমাদের আবাদি নাভিমূলে খরুচে সুর্য্ নিভে যাওয়ার আগেই ধানটি পেড়ে ফেলতে হবে।"
অত্:পর নদীপুর্ন জোব্বা ছিড়ে আমরা সন্তকে ধর্ষন করলাম
আর নিঃসংগ ধানটি আগামীর শর্করা নিয়ে ছেড়ে গেল আমাদের ।

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১০ সকাল ১১:৫৬
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×