somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুমিল্লায় দিগবিদিক-৪

২০ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পঁচিশোর্দ্ধ জীবনে কুমিল্লা যাত্রাবিরতি দিয়েছি অনেকবার। কিন্তু ঘুরে দেখার সৌভাগ্য হয়নি একবারও। প্রায় দীর্ঘ এক বছর পর দিকবিদিক ভ্রমণের কথা মনে পরতেই আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত হলো এবারের ভ্রমণ হবে কুমিল্লায়।
বন্ধু শাহরিয়ার ও আমার উভয়েরই ভ্রমণের জন্য জীবন ওষ্ঠাগত। ভ্রমণসঙ্গী হতে রাজী হলেন আবরার ভাই। যদিও সকালে মুঠোফোনে ঘুম থেকে তাকে উঠাতে বেগ পেতে হলো না, কিন্তু তার পরক্ষণেই তাঁর মুঠোফোন বন্ধ। এদিকে বন্ধু মারজুক রাতে চট্টগ্রাম যাবেন। কিন্তু দিনের সময়টুকু তিনি কাজে লাগাতে চান। তাই বাসের টিকিট কাটার সময় একসাথে চারটিই কাটতে হলো। যাত্রা শুরু হলো কমলাপুর থেকে বিআরটিসি এসি বাসে চেপে নয়টায়।
আমি বরাবরই ইন্টারনেট ঘেঁটেঘুঁটে যেখানে যাই তার আশেপাশের ভ্রমণপযোগী সকল জায়গার সংবাদ সংগ্রহ করি। আর গুগল ম্যাপও যথেষ্ট তথ্যবহুল। তাই কোথায় নামবো তা নিয়ে কোনো সংশয় ছিলো না। কুমিল্লা বিশ্বরোডে বাস থামতেই আমরা হুড়মুড় করে নেমে গেলাম। বিপত্তিটা বাঁধলো তখনই যখন আমরা জানি কোথায় যাবো কিন্তু কিভাবে যেতে হয় তা জানি না। বিশেষ দ্রষ্টব্য বলে রাখা ভালো যে, ভ্রমণ উদ্যোক্তা হিসেবে কোথায় কোথায় যাবো তা কেবল আমারই জানা, ভ্রমণসঙ্গীরা এ ক্ষেত্রে মুক্তমনা। বিশ্বরোড মোড় থেকে উত্তরপুর্ব দিকে গেলে ওয়্যার সিমেট্রি আর দক্ষিন দিকে ক্যান্টনমেন্ট পার হয়ে শালবন বিহার। শালবন বিহার যেতে আরও কয়েকটা বিহার পরবে, তাই ক্যান্টনমেন্টের ভিতরেই যাত্রা শুরু করলাম।

কৌটিলা মুড়া

ক্যান্টনমেন্টে ঢুকতে এম পি চেক পোস্টে পরিচয় দিয়ে যাত্রা পথের হদিস নেবার সাহস করলাম না। তাতে বিপত্তির দেখা মিলতে পারে। এম পি -এর পাশ দিয়ে সোজা হেঁটে ইস্পাহানি স্কুল এন্ড কলেজের সামনে থেকে রিকশা নিলাম। রিকশাওয়ালা আমাদের নিয়ে গেলো আর্মির এক ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের সামনে। দুটো চারতলা দুই ইউনিটের আবাসিক ভবন বিপরীত পাশে। রিকশাওয়ালাকে "কোথায় নিয়ে এলেন?" কথাটা বলবো বলে ভাবছিলাম তার আগেই একটা ছোট্ট নির্দেশিকা দেখলাম কোটিলা মুড়ার।



হেঁটে সামনে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম একটা টিলা, কিছু হারিয়ে যাওয়া সিঁড়ি ক্রমশ টিলার উপড়ে উঠে গেছে। খেয়াল করে দেখলাম মাঝ বরাবর সিঁড়িটা উঠেনি, সম্ভবত পাহাড়ের ঢালের সাথে হাল্কা বেঁকে পুনঃনির্মানের সময় দিক পরিবর্তন হয়েছে।



মুড়া'র তিনটি স্তুপা। বুদ্ধ, ধর্ম ও সংঘ- বৌদ্ধদের ত্রিরত্ন-এর প্রতীক এই তিনটি স্তুপা। তিনটি স্তুপা ধারণা করা হয় সাত থেকে তের শতকের সময়কার। তিনটি স্তুপা আকার আয়তনে ভিন্ন। দেয়ালে কুলুঙ্গি গুলো দেখে মনে হচ্ছিলো স্তুপা গুলোর ভেতরে প্রবেশের ব্যবস্থা ছিলো। কিন্তু এখন সম্পুর্ণ মাটি দিয়ে পুর্ণ হয়ে গেছে। প্রতিটা স্তুপা মাটিতে ২০ ফিট*২০ ফিট দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের চতুর্ভুজাকার মাটি স্পর্শ করে আছে।



পিছনে অসমান্তরাল ভাবে সাতটা বৃত্তাকার বলয় ছিলো। এগুলোর নির্মাণের কারণ ঠিক বুঝতে পারিনি। ধ্যান করার জন্য বেদীও হতে পারে, যদিও এতো কাছাকাছি এতোগুলো বেদী হবার কথা না।



মুড়ার পেছনে ক্যান্টনমেন্টের গলফ ক্লাব মাঠ। অল্প কিছু ছবি তুলে আমরা নিচে নেমে আসলাম।
এরপর যাবো ভোজ বিহার।

ভোজ বিহার



ভোজ বিহার যাবার জন্য আমরা একটা ব্যাটারি চালিত টম টম পেয়ে গেলাম। টমটমের চালক চাচা আমাদের আনন্দ বিহারের সামনে দিয়ে নিয়ে যাবার সময় আনন্দ রাজার দীঘি দেখালেন। রাস্তা থেকে আনন্দ রাজার প্রস্তর ফলক দেখা যায়। কিন্তু আর কোন অস্তিত্ব দেখা যায় না। আর্মিদের দখলে দীঘি আর গড়ে তোলা সাদা দালানের মধ্যে ইতিহাসের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পেলাম না।




ভোজ বিহার আর্মিদের কোয়ার্টার আর প্যারেডের মাঝামাঝি প্রায় তিনশ ফিট * তিনশ ফিট বর্গক্ষেত্রের ধংসাবশেষ। সম্পুর্ণ পরিধি জুড়ে আবাসিক ভবন। কেন্দ্রে অপ্রতিসম নকশাবিশিষ্ট বর্গাকার স্তুপা। বিহারের প্রবেশ উত্তর দিক থেকে, যদিও বর্তমান রাস্তা পুর্ব দিকে।
খেয়াল করে দেখলাম পশ্চিম দিকে আর্মিদের নতুন কোনো দালানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হচ্ছে।
আমার যতটুকু জানা, বিভাগীয় শহরের মধ্যে কোনো প্রত্নতত্ত্বের নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অন্য স্থাপনা নির্মানের বিধিনিষেধ আছে। কিন্তু বিভাগীয় শহরের বাইরে এই নিয়মের কোনো বাধ্য-বাধকতা আছে কিনা তা নিয়ে আমি সন্দিহান। উপরন্তু আর্মিদের নিজস্ব এলাকার মধ্যে। 'শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা' দেওয়ার মতন।

হতাশ হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে এলাম। এরপর ঠিক করলাম শালবন বিহার যাবো।

শালবন বিহার

মাথার উপরে কড়া রোদ। ইতিহাস পড়বার সুবাদে শালবন বিহারের কাহিনী আমাদের সবারই মোটামুটি জানা।



এ বিহারের প্রধান প্রবেশদ্বারটিও উত্তর দিক থেকে। বিহারের প্রবেশ দ্বারে সাত-আটটি পোড়ামাটির ফলক পুনরাবৃত্তি করে লাগানো। এর মধ্যে বানর, হাতি, মৎসকন্যা, গরুড় , ফুল এমন কিছু ছয় ইঞ্ছি বাই ছয় ইঞ্ছি পোড়া মাটির ফলক। আমরা রোদ থেকে বাঁচতে ছায়ায় বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। আমাদের কিছু সময় পুর্বে কোনো মাদ্রাসার প্রায় সত্তর-আশি জন শিক্ষার্থী প্রবেশ করে। এদের অনেকেই দেখলাম বেশ আগ্রহ নিয়ে ইতিহাসের ফলক গুলো পড়ছে। একজন শিক্ষক তাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। দেখে বেশ ভালো লাগলো।
ধীরে ধীরে বাইরে বেড়িয়ে এলাম। হঠাত একজন আমাকে জিজ্ঞেস করলো "কেমন আছেন?" অপরিচিত তরূণকে দেখে জবাব দিতে বললাম "ভালো।' কিন্তু তখনো তার পরিচয় মনে পড়ছিলো না। তার নিজের পরিচয় দেবার পর মনে করতে পারলাম সে আমার কলেজের এবং ঢাকার পুর্ব পরিচিত। সে শালবন বিহারের পাশে বৌদ্ধ বিহারে থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছে। কিছুক্ষন কথা বলেই তাকে ছেড়ে দিতে হলো। বিকেল তিনটায় তার ক্লাস।
তখন ক্ষিদেয় পেট চো চো করছে। আমাদের ভ্রমণ তালিকার চন্ডীমুড়া মন্দির তখনো বাকি। আমরা শালবন বিহারের সামনে থেকেই কিভাবে যাওয়া যায় তার পরিকল্পনা নিচ্ছিলাম। কিন্তু বিধিবাম। আশে পাশে দোকানদার ও সকলের থেকে খবর নিয়ে বুঝতে পারলাম চন্ডীমুড়ায় যাবার জন্য যে সময় ও অর্থ প্রয়োজন তার দুটোতেই আমাদের কমতি আছে। তাই আমরা ক্যান্টন্মেন্টের শেষ মাথায় ফিরে গেলাম। উদ্দেশ্য ভুড়িভোজন ও বিশ্বরোডে ফিরে যাওয়া। কিন্তু দুরভাগ্য হলে যা হয়, আশে পাশের হোটেলে তেমন মুখরোচক কিছু পেলাম না। তখনি হঠাত সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম যা আছে কপালে, ভ্রমণটাই আসল। অতএব চন্ডীমুড়া মন্দিরে যাবই।

এক সিএনজি ড্রাইভারকে পটালাম। বিকেল পর্যন্ত সে আমাদের দায়িত্ব নেবে। শুরু হলো চন্ডীমুড়ার দিকে যাত্রা।

চন্ডীমুড়া
সি এন জি আমাদের আবার শালবন বিহারের সামনে দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পার হয়ে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে চলতে লাগলো। পাহাড় শব্দটা বিভ্রান্ত করতে পারে, টিলা বলাই সমীচিন। একসময় আমরা চাঁদপুর কুমিল্লা প্রধান সড়কে রতন বাজার পার হলাম। দান দিকে কিছু দূর গিয়েই দূর থেকে মুড়ার মন্দির দেখতে পাচ্ছিলাম।



মহাতীর্থ চন্ডীমুড়া সেবা আশ্রম কুমিল্লা শহরের প্রায় ১৩ কিলোমিটার পশ্চিমে কুমিল্লা-চাঁদপুর-বরুড়া সড়কের সংযোগস্থলে দেড়'শ ফুট পাহাড়ের উপরে অবস্থিত চন্ডীমুড়া মন্দির। এটি কুমিল্লার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। চণ্ডীমুড়ায় ২টি মন্দির পাশাপাশি অবস্থিত। দক্ষিণ পাশের মন্দিরটি চণ্ডী মন্দির ও উত্তর পাশের মন্দিরটির শিব মন্দির। মন্দির দুটো সপ্তম শতাব্দীতে নির্মিত। সপ্তম শতাব্দীর খড়গ বংশীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাজা দেবখড়গের রানী প্রভাবতী একটি হিন্দু মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দেবী সর্বাণীর মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। রানী প্রভাবতী হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন। চণ্ডীমুড়ার উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফুটের উপরে। এর চূড়ায় অবস্থিত এই মন্দির। নিচ থেকে এতে উঠতে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৮০টি সিঁড়ি আছে।
বর্তমানে সনাতন ধর্মালম্বী ছাড়াও নানা ধর্মের পর্যটক প্রতিদিনই এই মন্দির পরিদর্শনে আসেন।প্রতি বছর তিনবার চণ্ডীমুড়ায় ভক্তবৃন্দের সমাবেশ ঘটে। কার্তিক মাসের কালীপূজার সময় , পৌষ-মাঘ মাসে গীতা সম্মেলন এবং ফালগুন-চৈত্র মাসে বাসন্তী মহাঅষ্টমী।এলাকাবাসীদের মতে প্রচার প্রচারণা ও কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করলে উৎসবগুলির সময় এখানে পর্যটকদের ব্যাপক সমাগম ঘটত।

এই পাহাড়ের নামকরনের পেছনে একটি মজার পৌরাণিক কাহিনী চালু আছে। বলা হয় প্রাচীনকালে বিন্দাচল পর্বতে মহামায়া চন্ডী মহাসুর সতী রূপে স্বর্গ মর্ত পাতাল নিপীড়নকারী শন্ডু নিশন্ডু নামক এক মহাসুরকে নিধনকল্পে এক ঘোরতর যুদ্ধে নামেন। সে যুদ্ধে বেশ কিছু অসুর ঘন রথ জঙ্গলে আবৃত এ দুর্গম দ্বীপে পালিয়ে আসেন। মা মহামায়া তখন প্রবল ক্রোধান্বিত হয়ে বায়ুবেগে এ দুর্গম দ্বীপে পাহাড়ের কোলে আশ্রয় নেওয়া অসুরদের নিধন করেন। মায়ের দেহতাপে পাহাড়টির মাটি লাল হয়ে যায়। কিন্তু মাটি লাল হয়ে যাওয়ায় এর নাম পরিবর্তন হয়ে লালমাই পাহাড় নামে পরিচিতি পায়। (তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট)


আরো একটি মুখরোচক কাহিনীর প্রচলন রয়েছে।
লঙ্কার রাজা রাবণ সীতাকে হরণ করে নিলে রাম-রাবণের যুদ্ধ বাঁধে। যুদ্ধে রামের কনিষ্ঠ ভ্রাতা লক্ষণ শক্তিশেলের আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন।
কবিরাজ নির্দেশ করলেন, যদি পরদিন সূর্যোদয়ের পূর্বে ক্ষতস্থানে ’বিশল্যকরণী’ পাতার রস প্রয়োগ না করা যায়, তাহলে লক্ষণকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে না। আর ওই গাছ আছে একমাত্র হিমালয় পর্বত শ্রেণির গন্ধমাদন পর্বতে। যা কিনা লঙ্কাদ্বীপ থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে। সুতরাং, এত অল্প সময়ের মধ্যে কোন মানবের পক্ষে তা সংগ্রহ করে আনা অকল্পনীয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় রামভক্ত পবননন্দন হনুমান আর বসে থাকতে পারলেন না। তিনি বায়ু বেগে উড়ে গেলেন হিমালয় পর্বতে। কিন্তু পর্বতে উপস্থিত হয়ে সে গাছ চিনতে পারলেন না। অগত্যা তিনি ’গন্ধমাদন’ পর্বতের যে স্থানে বিশল্যকরণী গাছ ছিল, সেই গোটা পর্বতটাকে মাথায় করে বয়ে আনলেন লঙ্কাদ্বীপে। ওষুধ পেয়ে লক্ষণ সুস্থ্য হয়ে উঠলেন।
এবার পর্বতটাকে যথাস্থানে রেখে আসার পালা। হনুমান পর্বত মাথায় করে আবার চললেন হিমালয় অভিমুখে। কুমিল্লা শহরের কাছাকাছি স্থানে ’লমলম’ সাগরের উপর দিয়ে চলার সময় সাগরের মনোরম শোভা দেখতে দেখতে তিনি কিছুটা আনমনা হয়ে পড়লেন। আর যায় কোথায়। পর্বতের ছোট একটি অংশ বিচ্যুত হলো। তারপর তা পড়তে পড়তে সাগরের এক প্রান্তে এসে পড়ে। যার নাম হয়ে গেল লালমাই পাহাড়। (তথ্যসুত্রঃ ইন্টারনেট)

আমরা মন্দিরে প্রবেশের সময় বাকি দর্শনার্থীদের ভীড় দেখতে পাচ্ছিলাম। এতদিন বিভিন্ন মুড়ো দেখে যতটা বিগলিত হতাম চন্ডীমুড়া দেখে ততটা হলাম না। মুন্সীগঞ্জের মঠ, কিংবা আশুলিয়ার পাশের মঠ গুলো তাদের ঐতিহ্য কিংবা বয়েস প্রকাশ করতে দ্বিধা করতো না। কিন্তু চন্ডীমূড়া নিয়মিত ভক্তদের দ্বারা পুষ্ট এবং লোকে লোকারণ্য, তাই এর ভাবগাম্ভীর্য্য উপভোগ করার খুব একটা সুযোগ কিংবা প্রেরণা পেলাম না।



তবে প্রায় দুশ ফিট উপর থেকে আশে পাশের দৃশ্য দেখে বেশ রোমাঞ্চিত হলাম। গুনতে গুনতে প্রাউ দুশ' সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলাম।



এরপর ফেরার তাড়া। মারজুক যাবেন চট্টগ্রাম। আমরা ঢাকা ফেরত যাবো। সি এনজি ড্রাইভারেরও ফেরার তাড়া। একথাটি তিনি আমাদের বলেননি, তবে রাস্তায় নেমে আমরা বুঝতে পারলাম। তার ফেরার গতি আমাদের সংশয়ে ফেলল। সংশয় কেবল সংশয় রইলো না, যখন রতন বাজারে এসে তার (ড্রাইভারের) তাড়াহুড়ার কারনে পাশের গাড়িতে লেগে মারজুক আহত হলো। তার বাম হাতের কনুইটা বেশ খানিকটা ছিলে গেলো। তাড়াতাড়ি আমরা পাশের দোকান থেকে বরফ নিয়ে সাময়িক চিকিৎসার দ্বারস্থ হলাম। দুর্ঘটনার গুলি কানের পাশ দিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
হাতে সময় আছে তাই আমরা মহাসড়কে নেমে ক্যান্টন্মেন্টের ভিতরে ক্যাফে রুপসাগর দেখতে গিয়েছিলাম। স্থাপত্য সৌন্দর্য গুন বিচারে নয়, দূর থেকে দেখে পাড়ে ভেড়ানো জাহাজে চড়তে তেমন ইচ্ছে হলনা বিধায় আমরা দ্রুত বিশ্বরোডে ফিরে এলাম। এতক্ষনের ভ্রমণে আশানুরুপ কোনো খাদ্যই জোটে নি, তাই দ্রুত এক রেষ্টুরেন্টে ঢূকে খেয়ে নিলাম।
সন্ধ্যের দিকে মারজুক উঠে পড়লেন চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশে আর আমরা ঢাকাফেরত বাসের টিকেট কেটে সেলফি তুলে অপেক্ষা করতে থাকলাম বাসের জন্য।
বিদায় কুমিল্লা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৩০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জেনারেল রাও ফরমান আলী ছিল ইন্ডিয়ান 'র'-এর এজেন্ট

লিখেছেন ধূসর সন্ধ্যা, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২



জেনারেল রাও ফরমান আলী ছিল ইন্ডিয়ান 'র'-এর একজন এজেন্ট। এই তথ্য কেউ জানতো না। তার ফ্যামিলিও জানতো না। ১৯৪১ সালে বর্ডার ক্রস করে সে ঢুকেছিল পাকিস্তান। তারপর আস্তে আস্তে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×