ড. রেজা কিবরিয়ার স্মরণ করা উচিৎ তার পিতা শাহ এম এ এস কিবরিয়া সাহেবের উপর গ্রেনেড হামলা হলে সে সময় জননেত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে বিএনপি সরকারের কাছে সঙ্গে সঙ্গে হেলিকপ্টারে আবেদন করেছিলেন, যাতে কিবরিয়া সাহেবকে হবিগঞ্জ থেকে দ্রুত ঢাকায় আনা যায়। কিন্তু সেই ধানের শীষের সরকার হেলিকপ্টার দেয়নি!
শেষমেশ তাকে সড়ক পথেই এম্বুলেন্স করে আনার সময় মধ্য রাস্তায় তার মৃত্যু ঘটে। তাকে হেলিকপ্টারে আনাগেলে হয়তো বাঁচানো যেত। কিন্তু ধানের শীষের বিএনপি সরকার তাকে বাঁচতে সাহায্য করেনি।
সেই ধানের শীষের প্রতিকে তিনি নির্বাচন করতে চান!
তিনি যে জোটে যেতে চান সেই জোটের বিগত সরকার তার বাবার হত্যার বিচার করেনি, সুষ্ঠু তদন্ত করে, মামলা করতেও বাঁধা দিয়েছে।
মি: রেজা কিবরিয়ার কিসে এত রাগ বুঝিনা! তার মা বিচারের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন আন্দোলন করেছেন কিন্তু বিএনপি বিচার করেনি।
নতুন করে তদন্ত শুরু হয় ফখরুদ্দীন সরকারের সময়, তারপর বিচার শুরু। হয়তো দীর্ঘ ১০ বছরে বিচার চুড়ান্ত হয়নি, রায় আসেনি। কিন্তু বর্তমান সরকারের বিচার বিষয়ে কি দায়ভার আছে? এটি ত চলমান প্রক্রিয়া। রায় আসবে ইনশাল্লাহ, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায় পেলাম, কিবরিয়া হত্যা রায়ও হবে। হতেই হবে, কারণ এটি আওয়ামীলীগ শাসনামল। রাজনৈতিক যেকোনো হত্যাকান্ডের বিচার আওয়ামীলীগই করেছে, করতে জানে, ভবিষ্যতেও করবে।
যে দল তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হত্যার বিচার করেনি সেই দল জনাব কিবরিয়া সাহেব হত্যার বিচার করবে এটি কোন আহম্মোকও বিশ্বাস করেনা।
জনাব কিবরিয়ার মৃত্যুর পর তার ছেলে রেজা কিবরিয়া প্রথমে রাজনীতিতে আসতেই চাননি। তার বক্তব্য ছিল তার বাবা দেশের জন্য এতোকিছু করেও এই পরিণতি হল, তখন আমি আর রাজনীতিতে জড়াবো না।
আমি মেহেদী হাসান তার বাবার সম্পাদনায় মৃদুভাষণ পত্রিকার নিয়মিত পাঠাক ছিলাম। আমার ঐ সময়ে কিছু ছোট ছোট লিখাও পত্রিকাটি সে সময়ে প্রকাশ করতো।
তাই কিবরিয়া সাহেবের লিখা নিয়মিত পড়তাম, এবং সংখ্যাগুলি কালেকশন করে রাখতাম।
এখনও খুঁজলে সেই সংখ্যাগুলো আমার গ্রামের বাড়িতে মিলবে।
কিবরিয়া সাহেবের মৃত্যুর পর তার ছেলে রেজা কিবরিয়া ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হলেন। সেই পত্রিকাটিতে তার রাজনীতিতে অনাগ্রহতার কথাগুলি মিলবে যদি সেই সংখ্যাগুলো খুঁজাখুঁজি করি।
নেত্রী শেখ হাসিনা এর পর বিকল্প নেতা খুঁজে নিলেন। তারপর পরই মি: রেজা কিবরিয়া রাজনীতিতে আগ্রহী হোন। আওয়ামীলীগ দলের নমিনেশন চেয়ে আর পেলেননা, কারণ একটাই হবিগঞ্জ ঐ আসনে আওয়ামীলীগ দলীয় নেতা সেট হয়েছে। শুরুতে তিনি চাননি যখন নেত্রী তাকে দায়িত্ব দিতে চেয়েছেন। অগত্যা তার পিতার ভাগিনী তারানা হালিমকে এমপি ও মন্ত্রী বানিয়েছেন, যাতে কিবরিয়া সাহেবের পরিবারের প্রতি আওয়ামীলীগ অবদান রাখতে পারে।
বিএনপি তাদের পরিবারের সাথে বেইমানি করেছে, তাদের পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দিয়েছে।
আর কি ক্ষোভে, কি দু:খে মি: রেজা কিবরিয়া ধানের শীষের প্রতীকের পিছনে ছুঁটেছেন আমি তার লেখার পাঠক হিসেবে বোধগম্য ত নয়ই বরং হতাশ!
আজ আপনার মা বেঁচে থাকলে আপনার এই নৈতিক পদস্খলন দেখতে হত না আমাদের ।
আমি ত ভাবছি একটাই কথা তা হল, বিএনপিতে যেহেতু অর্থমন্ত্রী হবার মতো কোন ব্যক্তি নেই, আর মি: রেজা কিবরিয়া প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ। তিনি হয়তো সেই অফারটি ফেলে দিতে পারছেননা। তিনি পিতার আদর্শ ও বিএনপির অত্যাচার ভুলে অর্থমন্ত্রী হবার আশায় বিভোর।
অবশ্য শেষমেশ আজ রেজা সাহেব পরিস্কার করলেন আমি ত বিএনপি তে যাইনি যাচ্ছি গণফোরাম দলে , আওয়ামী লীগ যেহেতু শাহ এম এ এস কিবরিয়া সাহেবের আদর্শ থেকে দূরে সরে গেছে তাই আমি গণফোরামে যোগদান করেছি ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৩৭