দ্বিতীয়দিনের শুরুটা খুব খারাপ হল না। যে হোটেল ছিলাম, তাদের নাশতা দেবার কথা ছিল, ভাবলাম হয়ত পাউরুটি জেলি দিয়ে বলবে, "খেয়ে নে, ফ্রি দিচ্ছি, আর কি চাস?" গিয়ে দেখি, আয়োজন খারাপ না। দুধ, সিরিয়াল, কর্ণফ্লেক্স, আপেল রস, কফি খেয়ে নিলাম। (আমি মনে হয় একটু পেটুক টাইপের, এত কিছু খাওয়া ঠিক হয় নি মনে হয়)
যাই হোক, আবার পথে চলা শুরু হল। ইন্ডিয়ানাপোলিস পর্যন্ত ড্রাইভ করল এক সহযাত্রী। ভাগ্য ভাল যে এবার, সস্তা দোকানে (ম্যাকডোনাল্ডস) থামার কারণে পকেটে চোট লাগল না তেমন
এরপরের অংশ আমি চালাচ্ছিলাম। এবার পথে যেটা দেখা মুগ্ধ হলাম সেটা হল উইন্ড মিল। ছবি তুলতে পারলাম না বলে একটু মন খারাপও হল। আকারে একেকটা প্রায় ১৫ তলার সমান হবে, আর সুন্দর করে ক্ষেতের মাঝে মাঝে লাইন ধরে বসানো। এর মাঝে একজন আমাকে ব্লাইন্ড স্পটে (টীকা: ১) রেখে আমার উপর গাড়ি উঠিয়ে দেবার চেষ্টা করেছিল, আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছি। ইলিনয়ের কাছাকাছি এসে দেখলাম স্পিড লিমিট ৫৫ মাইল, (প্রায় ৯০ কিমি!), আমি লিমিট ক্রস করে ৬৫ মাইলে (১০৫ কিমি) চালাচ্ছি, তবুই আমি সবার পেছনে। গতি বাড়িয়ে বুঝতে পারলাম, এরা লিমিটের চাইতে প্রায় ২০ মাইল বেশি গতিতে চালায় (৭০ মাইল/ ১২০ কিমি!) আমি না পারি আস্তে চালাতে, না পারি পুলিশের ভয়ে জোরে চালাতে।
যাই হোক, আল্লাহর রহমতে পৌঁছালাম হোটেলে। এ্ই হোটেলের রিভিউতে লেখা ছিল, এদের স্টাফরা রূক্ষ্ম, দেখলাম, কথা ভুল না। রিসেপসনিস্ট কঠিন চেহেরা করে আমার সাথে কথা বলল, আর জানালো রুমে ফ্রিজ/ মাইক্রোওয়েভ নাই সেটা আমি জানি কিনা। আমি বললাম, জানি। আর বলল তোমার রুমের সিন্দুক () ব্যবহারের জন্য প্রতিদিন ১০০ টাকা (১.৫০ ডলার) দিতে হবে। আমি আকাশ থেকে পরলাম, এরা বলে কি? সিন্দুক দিয়ে আমি কি করব? আমি কি ডায়মন্ড নিয়ে ঘুরি নাকি? আমি বললাম, এইসব সিন্দুক-ফিন্দুকের দরকার নাই। আজাইরা সিন্দুকের ভাড়া দেবার কোন ইচ্ছা আমার নাই। (টীকা: ২)
চেক-ইন সেরে রুমে ঢুকলাম, শুরু হল আমার চাইনিজের সাথে বসবাস।
(সময় পেলে লিখব)
পর্ব-১
টীকা ১: গাড়ির পাশের আয়নাতে দেখা যায়না এমন জায়গাকে ব্লাইন্ড স্পট বলে। গাড়ির অনেক পেছনে কিছু থাকলে, সেটা সাইড আয়ানাতে দেখা যায়, কিন্তু যখন সেটা ঠিক পাশে চলে আসে, তখন হঠাৎ করে আয়না থেকে সেটা অদৃশ্য হয়ে যায়।
টীকা: ২: ইলিনয়ে মনে হয় একটা আইন আছে হোটেলে সিন্দুক থাকার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:২৩