somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কয়েক টুকরো প্রবাস: ১

১৯ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নানান ঘটনাই তো ঘটে আশে পাশে, কিছু আগোছালো কথাতেই না হয় বলি। ঘটনাগুলোর সময় অনুযায়ী হয়ত সাজানো না। যখন যেটা মনে পড়বে লিখে ফেলব


১. লোটা কম্বল:

লোটা কম্বল (সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়) বইটা আমার ভীষণ প্রিয়। তাই আসার সময় এটা সাথে করে নিয়ে যাব ঠিক করলাম। ওজন বেড়ে যাবে বলে আর লাগেজে দিতে পারলাম না। ঢাকা থেকে পুরো পথে হাতে করে টেনে এনেছিলাম এটা সহ খান কয়েক বই। আমার ইমিগ্রেশন ছিল শিকাগোতে। সেখান থেকে সাউথ ক্যারোলিনার গ্রীনভিল-স্পার্টানবার্গ। (পুরোনো একটা লেখা আছে সেসব নিয়ে ) ডিলে-ফিলে করে যখন শেষ এয়ারপোর্টে পৌঁছালাম তখন বেশ রাত হয়ে গিয়েছে। আমাদের যাঁরা নিতে এসেছিলেন, তাদের অনেক কষ্টই বোধহয় দিয়েছিলাম। আমাদের মোট চারটা বক্স ছিল, দুটো পেলাম; বাকি দুটার আর খবর নাই। একসময় লাগেজ কনভেয়ার বেল্ট ঘোরাও বন্ধ হয়ে গেল। আমাদের তো মাথায় হাত, বাকি ৫০% কই?


'লোটা-কম্বল' বইটা হাতে আছে কিন্তু আসল লোটা কম্বল মানে বাক্স-পেটরার খবর নেই। যারা সাথে ছিলেন, তারা আমাদের নিয়ে গেলেন এয়ার লাইন কাউন্টারে। তারা জানালো যে এই প্লেনে করে একটা সিনেমার শুটিং ক্রুরা এসেছে, তাদের সাথে অনেক মালপত্র ছিল, তাই তোমাদের লাগেজ শিকাগোতেই পরে আছে। :-/:-/:-/ নাম ঠিকানা দিয়ে যাও, দেখি কি করা যায়।
আমার 'আদার হাফ' এর চেহারা দেখে সত্যিই খারাপ লাগছিল, বেচারি আসার আগে আগে একগাদা জিনিসপত্র আর জামাকাপড় কিনেছিল। আমার মনে হয় পোষাকের অত আগ্রহ নেই। আমার ধারণা মেয়েরা প্রতিটা কাপড় কেনার সময় কল্পনা করে এই কাপড়টায় তাকে কেমন দেখাবে, তাই তাদের টানও অনেক বেশি থাকে পোষাকের উপর।
মজার ব্যাপার হল, পরেরদিন ঠিকই ঐ এয়ারলাইন বিনা খরচে যে বাসায় ছিলাম সে বাসায় বাকি দুটো বক্স পৌঁছে দিয়েছিল। এয়ারপোর্ট থেকে ওখানকার দূরত্ব ছিল ৫৫ কিলোমিটারের মত।
চাইলে নাকি ঐ এয়ারলাইন থেকে কিছু ক্ষতিপূরণও পাওয়া যায়, যেহেতু আমদের একরাত কিছু জিনিস ছাড়া থাকত হয়েছিল। আমি অবশ্য চেষ্টা করিনি।

পুনশ্চ: এই ঘটনা ঢাকায় ঘটলে কি হত ভাবতেও ভয় লাগে। [আপনারা আবার ভেবে বসবেন না, আমি প্রবাস মহান আর স্বদেশ তুচ্ছ -এসব বলছি। আমি ভাবি ঢাকাও একদিন এমন হবে।]

২. জিউয়েই সুনের চশমা:
আমি যে গ্রুপে এসে ঢুকলাম সেটা মোটামুটি এইরকম ছিল ৪ টা চাইনিজ ছেলে আর একটা চাইনিজ মেয়ে। ২০১০ এ আমরা মানে ১ টা চাইনিজ ছেলে আর একটা চাইনিজ মেয়ে আর আমি জয়েন করলাম। প্রফেসর সাহেবের দেশের বাড়ি কোথায় সেটা মনে হয় না বললেও বুঝে গিয়েছেন আপনারা।সাতজনের মাঝে আমি নিতান্তই বেমানান। নতুন আসা ছেলেটার নাম জিউয়েই সুন। তো প্রথম সপ্তাহে একদিন আমি আর জিউয়েই সুন গেলাম ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অরিয়েন্টেশনে। অডিটোরিয়ামে বসে জিউয়েই বলল যে তার অনুষ্ঠান ভালো লাগছে না। কারণ,... এই কারণ আর সে বলতে পারছে না, সে বিবিধ ইংরেজি শব্দ বলল কিন্তু সে নিজেই ঠিক যুৎসই শব্দটা মনে করতে পারছে না। সে আমাকে ইশারায় অপেক্ষা করতে বলল। তারপার ব্যাগ থেকে একটা যন্ত্র নিয়ে সেটা টিপাটিপি করল, তারপর সেটা আমার মুখের সামনে ধরল। জিনিসটার স্ক্রিনে লেখা "Spectacles, Glasses", আর জিনিসটা হল চাইনিজ-ইংলিশ ডিজিটাল ডিকশনারি। আসল ঘটনা বুঝলাম সে চশমা আনেনি, তাই ষে দূরে ভালো দেখতে পাচ্ছে না।
[এখন জিউয়েই খানিকটা ভালো ইংরেজি বলে, তবে ওর সাথে কথা বলতে আমার ইংরেজিও চাইনিজদের মত হয়ে গিয়েছে। ছেলেটা আসলে খুব ভালো। সে এই মুহূর্তে আমার কোনাকুনি টেবিলে বসে এককানে ইয়ারফোন লাগিয়ে, কম্পিউটার স্ক্রিনে জার্নাল পেপার পড়তে পড়তে লাঞ্চ করছে]

(চলবে...)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:০৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×