somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরাই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ টি-টোয়েন্টি দল :: এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে উল্লসিত জুনায়েদ সিদ্দিকী

০৯ ই জুন, ২০০৯ দুপুর ২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১...............

নটিংহামের হোটেলটায় বেশ গুমোট একটা ভাব । লবিতে রাণীক্ষেত রোগীর মত ঝিমাতে দেখা গেল মাশরাফিকে , ঐপাশে পাংশুটে মুখে গুম মেরে পড়ে আছে সাম্বাদিক উট-পল শুভঢ়ো । বাংলাদেশের হার টার না , ব্যাপার তার চেয়েও সিরিয়াস।

প্রথম আলোতে নটিংহামের দুর্গের উপর উট-পল শুভঢ়ের ভাল একটা ফিচার এসেছে আজ। খেলায় হেরে যাওয়ার পর নটিংহামের নর্দমা-ব্যবস্থপনার বৈচিত্রে মুগ্ধতায় আবিষ্ট হয়ে আরেকটা প্রতিবেদন লিখছিল শুভঢ়ো । মাঝে এসে গুবলেট পাকালো কলকাতার আনন্দ-হাট পত্রিকার সাংবাদিক অতনু ব্যানার্জী । অতনু ডাবল এজেন্ট টিকটিকি , বাংলাদেশ ইন্ডিয়া টিমের খবরাখবর এদিক ওদিক পাচার করে। ইন্ডিয়ার সাথে ম্যাচ শেষে যুবরাজ সিং মাশরাফিকে ডেকে নাকি বলছে,তুমলোগ হামকো সোনে নেহি দেতা। বাংলাদেশ বহুত খতরনাক টিম হ্যায় (তোমরা আমাদের শান্তিমতো ঘুমাতে দাও না। বাংলাদেশ খুব ঝামেলার দল)। মাশরাফি হাম্পটি ডাম্পটি জাম্প দিয়ে উট-পলকে খবরটা দিসে । উটপল আবার আনন্দে আটখানা হয়ে প্রথম আলোতে সেটা ছাপায় দিসে। ঘটনা এখানে থেমে গেলে কোন প্রোবলেম হত না , অতনু হারামজাদাটা গিয়ে ইন্ডিয়ানদের এই খবর দিয়ে আসছে । এরপর থেকে নাকি ইন্ডিয়ানদের হাসি থামতেসেই না ।

যুবরাজ নাকি মাশরাফিরে এক নাম্বার বেকুব বলসে । ধোনি আবার যুবরাজরে দিসে রামঝাড়ি "মাশরাফি বেকুব টারে ঘোলই যখন খাওয়াবই,ঘন ঘোলই খাওয়াইতি , কইতি যে তোগো ভয়ে আমরা হিসু কইরা হাফ টাইমে ট্রাউজার বদলাইসি, বেকুবরা এই আনন্দে কিছু দিন কাটাইত।" ইশান্ত শর্মার নাকি হাসতে হাসতে পেটে ব্যামো ধইরা গেসে , রাতের বেলায় জিমে গিয়ে পেটের পেশি ঠিক করতে হইসে । গম্ভীর পোলাটা আবার বেশ ভদ্র , হাসতে গিয়ে তার নাকি সত্যি সত্যি রাতে শান্তিমত ঘুম হয় নাই । ম্যাচ শেষেই অবশ্য মাশরাফির একবার সন্দেহ হইসিল । নির্বিষ আইরিশ বোলার ম্যাককালান তারে কানে কানে বলে গেছে ..."তোমরা আমাদের শান্তিমতো ঘুমাতে দাও না। বাংলাদেশ খুব ঝামেলার দল" :(

উট-পল আড়চোখে মাশরাফির দিকে তাকায় । তার নিজেরই বা এমন দোষ কি ? প্রথম আলু ইদানিং খেলার পেজেও "উক্তি" বিভাগ চালু করসে । সেই উক্তি ভরানোর দায়িত্ব আবার তার । ভাবসিল যে এই ডায়ালগ দিয়ে বছরটা পার করতে পারবে , এর আগে মাশরাফির "ধরে দিবানি" ডায়ালগ বছর দুয়েক ভাঙ্গায় খাইসে , এই ডায়ালগ মাত্র একদিনের মাঝেই এমন ছ্যাকা দিবে কে জানত ।

২....................
উট-পলের ঝিমুনির সুযোগ নেয় "আমার বিদেশ" পত্রিকার সাম্বাদিক আরিফ । বজ্জাত উট-পল তারে হাড়ে হাড্ডিতে জ্বালায় খাইসে এতদিন । কয়েকবার হাতে পায়ে ধরে কয়েকজন বিদেশি প্লেয়াররে রাজি করাইসে সাক্ষাৎকারের জন্য , আর উট-পল প্রথম আলুতে লিখে দিসে এইটা নাকি একান্ত সাক্ষাৎকার । উট-পলের অবশ্য এইটা আলুর দোষ , কাকা রোনালডোর সাক্ষাৎকারের ভিড্যু দেখে একান্ত সাক্ষাৎকার হিসেবে চালানোর অভ্যাসও উট-পলের আছে । আজ ঝিম মেরে থাকা উট-পলের মলিন বদন দেখে তার বড়ই খুশ লাগে । হোটেলের দোতালায় উঠে খেলোয়াড়দের রুমে সে হানা দেয়ার ডিসিশন নেয় ।

বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের ভাল করে চিনে আরিফ , অন্য টিম হইলে এখন রুম বন্ধ করে কানতো , কিন্তু বাংলাদেশের প্লেয়াররা সাম্বাদিকের আশায় চাতক পাখির মতন বইসা আছে । হাভাইত্যাগুলোর এত বয়েস হইলো , তাও পত্রিকায় ছবি ছাপানোর শখ গেল না ।

৩.................
দোতালায় রুমে হাত পা ছড়ায় শুয়ে আছে আশরাফুল । মনে তার বিরাট পাথর চেপে আছে । আশরাফুল বুঝতে পারে না এই পাথর হেরে যাওয়ার ফসল নাকি মোনালিসার টিটকারির ফসল । ইনিংস ব্রেকের সময় মোনালিসা তারে ফোন দিসিল । যেই মেয়েটা গোল্ডনে ডাক মারলেও আল্লাদী গলায় আশু আশু করত , সেই কিনা আজ ব্যাটিং নিয়া টিটকারি মারসে । মোনালিসারে কল দিলে কল ধরে না , মেয়েটার যে কি হল । হঠাৎ করে রিংগার বাজে । বাংলাদেশী নাম্বার দেখে তড়াক করে আশরাফুল লাফ দেয় । কন্ঠটা মসৃণ করে বলে ......."হ্যালোওও" । ঐপাশে খসখসে কন্ঠের শাহরুখ । ঝুঁটিওয়ালা ফ্যাশন ডিজাইনার শাহরুখ শহীদ । বজ্জাত পুলাপাইনের মধ্যে নাকি আয়ারল্যান্ডের জার্সির ব্যাপক চাহিদা বেড়ে গেছে , আশরাফুল মনে মনে ভাবে , যাক আইরিশ জার্সি পইড়া মডেল হওয়ার একটা সুযোগ মিলল , সাথে মোনালিসা , ভাবতেই সেই নিঃশব্দে ভেটকি মারে । ঠিক তখনই শাহরুখ বলে ষাড়ের মত সাইজের কেভিন ও'ব্রায়ান রে তার মডেল হিসেবে চায় , আশরাফুল যেন একটা যোগাযোগের ব্যবস্থা করে । মনে মনে রাগে গজগজ করে আশরাফুল ... , মুখে বলে "আইচ্ছা"


৪..................

আশরাফুলের রুমের দরজা বন্ধ দেখে আরিফ অন্য রুমগুলিতে ইতি উতি মারে । জুনায়েদের রুমের দরজা খোলা পেয়ে ভালই লাগে । জুনায়েদ পোলাটা বেশ সোজা সাপ্টা , প্যাচ ট্যাচ কম । আজ বাংলাদেশী পাঠকরা দলের চামড়া ছিলার মত নিউজ চায় , সেটা আরিফ ভাল করেই জানে । দলরে বে-ইজ্জতি করার মত কোন নিউজ যদি কেউ দিতে পারে , সেইটা জুনায়েদই পারে , এইটা ভেবে মিচকা হাসি মারে আরিফ ।

"কি জুনায়েদ , করো কি , তোমগো কাপ্তানের মন মনে হয় খারাপ ??"... আরিফ জিজ্ঞেস করে
..............."ঐ বলদের মন খারাপের কারণ জানেন না ? সুপার এইটের ম্যাচ হওয়ার কথা লন্ডনে, লন্ডনে তিন চাইর রাইত ডিনারের দাওয়াত ছিল , এখন সব ক্যানসেল, নটিংহাম থেইকা ডিরেক্ট দেশে পাঠাইবো ।সব ডিনার মিস , আর টেমসে নৌ-বিহারও মিস।বলতে পারেন পুরা ওয়ার্ল্ড কাপই বৃথা হয়ে গেল। আর আশু তো একটা প্রেমে হাবুডুবু খাইতেসে , লন্ডন থেইকা শপিং না করতে পারলে এইবার মনে হয় আশুর অ্যাফেয়ারটা টিকবে না"

"মেয়েটা কে?" ..... আরিফ জিজ্ঞেস করে । জুনায়েদ বলতে গিয়েও চেপে যায় । আরিফ আর ঘাটায় না।

"আশরাফুল আউট হয়ে যাওয়ার পর খুবই আপসেট হয় , মায়াই লাগে মুখটা দেখলে" .... আরিফ চতুর কথাটা ছুঁড়ে দেয় ।
কথা শেষ হতে দেয়না জুনায়েদ..... "কিসের কি ? এই নাটকটাও ধরতে পারেন নাই?"

"কেমনে কি ?"
............."কি করে বুঝাই আপনারে । ঢাকা শহরে রিক্সায় তো চড়সেন , নাকি ? ৩০ টাকার রিকশাভাড়া হইলে বেশির ভাগ রিকশাওয়ালাই বলবে ....যাবো না , যাবো না। কেউ কেউ ফিরেও তাকাবে না। দুই একজন দয়া করে বলবে ....যামু, ৫০ টাকা দিতে হইবো । এইরকম অবস্থায় একদিন এক রিকশাওয়ালা যদি ৩০ টাকা চেয়ে বসে আর আপনি লাফাইতে লাফাইটে রিকশায় উইঠা যান , রিকশাওয়ালা ভাববে যে আপনি তারে মহা ঠকানি ঠকাইতেসেন। তাই বেশির ভাগ লোক কি করে জানেন? ৩০ টাকা শুনে খানিক নকল গাই গুই করে , ভাব দেখায় যে ৩০ টাকা ...... এত বেশি ভাড়া!!! ততক্ষণে রিকশাওয়ালা কনভিন্স হয় যে প্যাসেন্জারই হারতেসে।"

বুঝলাম , কিন্তু তার সাথে আশরাফুলের কাঁচুমাচু মুখে মন খারাপ করে নিজেরে ধিক্কার আর দেয়ার সম্পর্ক কি ?... আরিফ জানত চায় ।

...."এখানেই তো মিল , আশরাফুলও আউট হয় এমন এমনি আন্দা গুন্দা , তারপর শুরু হয় তার অ্যাকটিং , যেন এই বলটা এমনে সে জীবনেও খেলত না , লাইফে এই একটা ভুলই সে করে ফেলল । অথবা , তার এই ক্যাচ কেউ ধরতে পারত না , কপাল খারাপ দেখে আজ ধরা খাইল । কিন্তু বলদটা একটা জিনিস বুঝে না , সেইটা হইল , ঢাকায় রিক্সাওয়ালা ৪ লাখ । যাত্রী প্রতিদিন অ্যাকটিং করলেও রিকশাওয়ালা রিপিট হবে না, সো সব রিকশাওয়ালারাই ডজ খাবে একটার পর একটা । আর এইদিকে দর্শক জনগণ তো চেইনজ হচ্ছে না, প্রতিদিন একই অ্যাকটিং দেখে আশরাফুল বলদটার উপর তারা মহা খাপ্পা"

আরিফ এতক্ষণে বুঝে , ধীরে ধীরে মাথা ঝাকায় । তারপর জিজ্ঞেস করে "আচ্ছা , তোমরা হঠাৎ ম্যাচ জিতে গেলে বেশ কিছু ওহী নাজিল কর" । এই যেমন ইন্ডিয়ারে হারানোর আগে মাশরাফি বলসিল "ধরে দিবানি" । আবার সাউথ আফ্রিকারে গায়ানায় সাইজ করার আগে তোমাদের পেটে নাকি গুড়গুড় করসিল । নিউ-জিল্যান্ডের সাথে ঢাকায় জিতার পর তামিম রে দেখলাম কারে যেন খুঁজতেসে , তামিমের সাথে নাকি সেই লোক বাজি লাগসিল । কেন প্রতি ম্যাচের আগে এমনে বল না যে "ছিল্যা দিমুনে , আন্ধা কইরা ফালামু" । বাজি লাগলেও তো পারো । আর তাও যদি না হয় নিদেনপক্ষে পচা বাসি খাবার খেয়ে কৃমি জন্মাইলেও তো পারো , তাহলে খেলার আগের দিন পেট গুড় গুড় করত , আরও বেশ কিছু ম্যাচও জিতা যাইত ।

..........জুনায়েদ এবার সিরিয়াস হয় , সোজা হয়ে বসে বলে "আপনারে খুইলা বলি , সত্যি কথা বলতে কি ব্রাশ করার সময় , অথবা কমোডে বসে সবসময়ই কারও না কারও মনে হয় কিছু একটা যদি হয়ে যায় ,এমনটা তো ২ বছরের আন্ডা বাচ্চাও ভাবে, বাংলাদেশ ফুটবল দলও তো ভাবে ব্রাজিলরে মনে হয় দিতাম হারায়া। তো ম্যাচ জিতলে সেইগুলো বিরাট ইতিহাস হয়ে যায়। আর পুরাটা ইতিহাস তাও না , অনেক ম্যানিপুলেশনও হয়"

"খুলে বলো" .... আরিফ বলে।
"এই ধরেন উট-পল শুভঢ়ো , তার দরকার নিউজ ।ইন্ডিজের হোটেলে শুভঢ়োর সাথে টাকি মাছ ধরা নিয়ে জমাইসিল মাশরাফি। শুভড়ো আবার গ্রামের ডোবা নালায় নামসে কম , কিন্তু মাশরাফি তো গ্রামের পোলা। তো মাশরাফি এক পর্যায়ে বলসিল "চিন্তা করো না , একটা টাকি ধরে দিব" । তাও বলসে একদম শুদ্ধ ভাষায় , মাশরাফির বউ সুমী আবার বেশ ঢং করে কথা বলতে শিখসে , সুমীর পাল্লায় পড়ে মাশরাফিও শুদ্ধ করে সাম্বাদিকদের সাথে কথা বলে। তো ম্যাচ জিতার পর উট-পলের মনে হইল একটা নাটক সাজানো দরকার , যেইটা ভাঙ্গায় খাওয়া যাবে । "টাকি মাছ ধরে দেব" .....এইটারে সে বিকৃত করে বানাইল "ধরে দিবানি" । বেশ নড়াইল নড়াইল একটা ফ্লেভার আসল , আর পাবলিক তো ম্যাচ জিতে পুরা পাংখা , সবাই ধেই ধেই করে নাচতে লাগল ।

এবার আসি তামিমের বেলায় , তামিম পুলা মন্দ না । সে প্রতিদিনই বাজি ধরে । তো ঐ ভদ্রলোকের সাথে এই মোমেন্টে সে বাজিতে ২৮-১ এ পিছায় আছে । ভদ্রলোক হারসিল ঠিকই সেদিন , কিন্তু অন্য দিনের খবর কে রাখে ? ভদ্রলোক অবশ্য ভাল আছে , তামিমরে মাফ কইরা দেয় রেগুলার

জুনায়েদের বিচক্ষণতায় আরিফ মুগ্ধ হয় । প্রসঙ্গ বদল করে আবার আশরাফুলে ফিরে আসে । "আচ্ছা , তোমাদের বলদ কাপ্তান তো সবকিছুর শেষেই পজিটিভ দেখে । ঢাকার ম্যানহোলের শেষমাথায়ও সে কামরাঙ্গীচড়ের আলো দেখে , এইবার এমন কিছুও কি খুঁজে পাবে সে"

জুনায়েদ হেসে ফেলে ......."আপনি দেখি কিছুই বোঝেন না আরিফ ভাই, আমি আশরাফুল হইলে সবই তো পজিটিভ দেখতাম। এই যেমন যুবরাজের কমেন্ট । বুঝতেসি যে যুবরাজও মাশরাফিরে এতটা বেকুব ভাবে নাই , একটা নির্দোষ ফান করসিল । কেন সেই ফান তো মেগা ফ্যান হওয়া আশরাফুল , মাশরাফি , প্রথম আলো রে আকাশে গোত্তা খাওয়াইতেসে। আরও তো হাজার খানেক পজিটিভ আছে ,
১/অস্ট্রেলিয়ার বিদায়
২/ডাচদের কাছে ইংল্যান্ডের হার
এর সব ক্রেডিটই জমা হইসে বাংলাদেশের ঘরে । টেস্ট খেলার কথাই না হয় বলি , একবার এক টেস্টে টানা চাইরদিন বৃষ্টি হইল , পঞ্চমদিনে ম্যাচ মাঠে গড়াইল । অবধারিত ভাবেই ম্যাচ ড্র । কিন্তু জিতল কারা জানেন ? আমরা জিতলাম , কারণ ম্যাচ পঞ্চম দিনে গড়াইসে , আর ম্যাচ ড্রও হইসে । বলতে পারেন ঐতিহাসিক সাফল্য।ছোটখাটো ধরলে তো আরও কত সাফল্য আছে , বলা শুরু করব ?"

"থাক থাক , তার চেয়ে বল , আশরাফুল যে দাবী করল বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ সেরা টোয়েন্টি টোয়েন্টি দল সেইটার ব্যাখ্যা কি ?"

"দাঁড়ান দাঁড়ান , ফোর্থ যে কইসে সেইটা তো অনেক বেশিই বলসে , আমি হইলে বলতাম ফার্স্ট । হাজারটা যুক্তি দেয়া যায়, একটাই বলি:
ডাচদের কথাই ধরেন: প্র্যাকটিস ম্যাচে ডাচদের নাকানি চুবানি দিসিলাম মনে আছে ? সেই ডাচ হারাইল ইংল্যান্ড রে , ইংল্যান্ড হারাইল পাকিদের , পাকিরা কয়েকদিন আগে হারাইলো অজিদের । তারমানে এই সব কয়টা দল বাংলাদেশের নিচে, আবার বাংলাদেশ হারাইসিল স্কটল্যান্ডরে , সেই স্কটল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশ জিতসে ১০ বল বাকি থাকতে , আর নিউজিল্যান্ড জিতসে ৬ বল বাকি থাকতে , সেই নিউজিল্যান্ড আবার হারাইসিল ভারতকে , ভারত আবার চ্যাম্পিয়ন ........"

"থামো থামো , বুঝছি" , জুনায়েদের প্রতিভায় মুগ্ধ হয় আরিফ । পোলাটার চোপার জোড় আশরাফুলের চাইতেও ভয়াবহ ।

"এবার আমাকে বল , তোমরা এত প্র্যাকটিস ম্যাচে ভাল খেলো কেন?"

"কারণ সবাই প্র্যাকটিসে পিকনিক করে , আমরা সেই সুযোগে জান দিয়ে খেলি" ...... নির্লিপ্তভাবে বলে জুনায়েদ।

"রাকিবুল, রিয়াদ কেমনে ২০-২০ তে চান্স পায় বলতে পারো?"
"শুনেন , মিডল অর্ডার মানে বুঝেন ? যারা মিডলে ব্যাট করে তারাই মিডল অর্ডারে ব্যাট করবে , নাকি ? শামসুর রাহমান , জিয়াউর রহমান রা অনেক ঠেঙ্গায় বুঝলাম , কিন্তু তারা তো টপ-অর্ডার । কাজেই যত শটই থাক তাদের হাতে , মিডল-অর্ডারে তাদের নামতে তো দেয়া যায় না , নাকি ?"

"তা বুঝলাম, কিন্তু মুশফিক কোথেকে চান্স পায় ? এই আবালটা প্রতি ম্যাচে একটা স্ট্যাম্পিং আর একটা ক্যাচ মিস করে ,কবজিতে যার নাই এক ফোটা জোর , তাকে ৭/৮ এ নামায়ে , শটওয়ালা নাইম ইসলাম রে কেমনে ৯ এ নামায় ? " ........ খুব সিরিয়াস মুখে জিজ্ঞেস করে আরিফ

........."আবার ভুল করলেন ভাইজান, বিশ্বের সব দলের দিকে তাকান , উইকেট কিপার মানেই কিন্তু একটা ব্যাটিংয়ের জাহাজ । খালি উইকেট কিপিং করে এমন একজনই খালি আছে , সেটা মুশফিক , তাও উল্টা পাল্টা কিপিং । কিন্তু ব্রিটিশ মিডিয়ারে সেইটা তো বুঝতে দেয়া যাবে না । ৯ এ নামাইলের ওরা সবাই টের পেয়ে যাবে, তাই ৭ এ নামানো হয় । খারাপ করলেও যেন ওরা ভাবে ভাল ব্যাটসম্যান , ব্যাডলাকে খারাপ করে ফেলসে"

"গতকালের ম্যাচের বিচক্ষণ কিছু ডিসিশানের কথা বল , কমিটমেন্টের দুই একটা এক্সামপল ........"

"কমিটমেন্ট দেখেন নাই ? দাঁড়ান ম্যাচের ভিডিওটা ছাড়ি , মুশফিকের চিল্লাচিল্লিরে ফোকাস করে স্লো মোশনে দেখাইসে টিভিতে , কত ডেডিকেটেড কিপার ভাবতে পারেন? আবার আশরাফুল ক্যাচটা ধরে যেই চিক্কুরটা দিল ..... ক্যাচের পর এমন চিক্কুর কেউ দিসে ???(যদিও আশরাফুল চিৎকারটা দিসে মোনালিসারে দেখাইতে যে তার দেশপ্রেম উথলায় পরতেসে)।এরপর আশরাফুলের ডাইভ , আকাইম্মা আর ফালতু ডাইভ যদিও তবুও রিস্ক নিয়ে আশরাফুল ডাইভটা দিসে , যেন সবাই বুঝে সে ডেডিকেটেড । তারপর মাশরাফির ওভার আগে আগে শেষ করে দেয়া , এইটা কি চরম বিচক্ষণতা না ? পুরা জিনিয়াস ক্যাপ্টেন , কি বলেন ?"

"মানতে পারলাম না , ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন রজনীকান্ত বর্মনও এখন জানে যে মাশরাফিরে লাস্টের দিকে দিলে পিটানি খেয়ে দফা রফা করে দিবে । কাজেই ও হইলেও ১৫ নাম্বারটা মাশরাফিকে দিয়ে করাত । কিন্তু ১৬ নাম্বারটা রুবেলকে দিল কেন ? আইরিশরা তো স্পিনে ধুঁকতেসিল । নাইম ২ ওভারে ৯ দিসিল , তাকে কি বোলিং দেয়া যাইত না?"

...."শোনেন , থিওরিটিকাল কিছু কথা আছে । নাইম না রুবেল ? কে বেশি বোলার হমম??"

"রুবেল বেশি বোলার".. আরিফ মেনে নেয়
"কাজেই নাইম যত ভাল বোলিংই করুক , সে একস্ট্রা ম্যান। বোলিং এর টাইমে বল করবে রুবেল। মাত্র ২ টা পেসার , তারা এত কম বোলিং করবে , কেমন দেখায় , আপনিই বলেন"

আরিফ মানতে পারে না , "কিন্তু ...."

"খুলে বলি , ঐসব স্ট্রাটেজি ব্যাপার না , খেলা যেমনই হোক , যে যেমন বোলিংই করুক প্রথম ৪ ওভার করবে মাশরাফি রুবেল , তারপর ফার্স্ট চেইনজে রিয়াদ , তারপর সাকিব । এরপর ১০ ওভার শেষ হলে চরম বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়ে মাশরাফির দুই ওভার , এই সময় বোলিং চালাতে থাকবে রাজ্জাক , নাইম । সব হিসাব নিকাশ ঠিক থাকবে , খালি একটা ওভার নিয়ে গ্যান্জাম হবে , ঐ ওভারটা বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে আইরিশদের জন্য ডেডিকেট করা হবে , আর এই ওভারের পর আর কোন হিসাব নিকাশ লাগবে না...... আফটার অল ইটস অ্যা জেন্টলম্যানস গেম , এইখানে জেলাসি করা কি ঠিক ??"

আরিফ মাথা ঝাঁকায় , তার এখনও অনেক কিছু জিজ্ঞেস করার রয়ে গেছে । কিন্তু তার আগেই ফোন আসে জুনায়েদের ।

জুনায়েদের মিষ্টি হাসি দেখে কেন যেন আরিফের মনে হয় ফোনটা মোনালিসার ............ :)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০০৯ দুপুর ১২:০৬
৭৯টি মন্তব্য ৭৬টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×