দোস্ত আমায় ক্ষমা করিস। তোকে দিন, সপ্তাহ এমনকি প্রতি মাসে ও একবার স্বরন করতে পারি না - তুই জানিস না দোস্ত, যতো দিন যাচ্ছে ততো বেশী ব্যস্ত হয়ে পরছি...তবুও এ ব্যস্ততার মাঝে বছরের বিশেষ একটি দিনে একবার হলে ও তোর কথা ভাবি । এবার বল, তুই কেমন আছিস ? তুই কি সেই আগের মতোই হাসিখুশি থাকিস ? জানিস দোস্ত, মাঝে মাঝে তোর উপর প্রচন্ড বিরক্ত হতাম, মন খারাপ হলেই তুই এমন কিছু করতি তাতে কারোরই সাধ্য নেই মন খারাপ করে থাকার ...!!! তোকে না দেখলে কেহই বুঝবে না, মানুষ এতো হাসিখুশি থাকে কিভাবে ...!!!! তোর আর আমার অনেক স্মৃতির ডাইরীতে ময়লা জমে গেছে... কিন্তু তোর মাল্টিভাইটামিন নাম টা আজও আমার হৃদয়ে দাগ কেটে আছে...তোর নাম মাল্টি ভাইটামিন কেন দিয়েছিলাম মনে আছে ?
কিরে মুচকি মুচকি হাসছিস বুঝি ? জানিস দোস্ত তোর একটা কথা আমাকে সব সময়ই ভাবায়, তুই মাঝে মাঝেই বলতি, "জগতের বেশীরভাগ মানুষই নিজেকে খুব চালাক ভাবে আর মনে করে আমি অন্য মানুষের সাইকোলজী বুঝতে পারি" - তুই ও মুচকি হেসে মিন মিন স্বরে বলতি, "আমরা সবাই কম বেশী সাইকো"। আমি তোর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আমাকেও কি তোর সাইকো মনে হয় ? মনে পড়ে, কি উওর দিয়েছিলি ... তুই আমাকে বলেছিলি, আমি নাকি ভাবুক প্রকৃতির... যা আমার অসাধ্য তাই নিয়েও নাকি আমি সারাদিন ভাবতে পারি- সত্যিই বলেছিলি সেদিন - মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের চুলগুলো টেনে ছিড়ে ফেলি ...তোর কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি নতুবা এতোদিনে পাগল হয়ে যেতাম ।
মনে আছে ছোট বেলার সে ঘটনার কথা- তুই পাশের বাসার এক মেয়ের প্রেমে পড়লি- সোজা চলে এলি এক পৃষ্টা কাগজ নিয়ে- বায়না ধরলি, দোস্ত একটা প্রেমপএ লিখে দে...!!! কি লিখবো সেটা ভাবতে ভাবতে দিন যায়, রাত যায়...প্রথম চিঠি টা আমি তোকে কোন প্রকার তেল/ঘুষ ছাড়াই লিখে দিয়েছিলাম-কয়েকদিন পরে এলি মেয়ের চিঠির উওর লিখে নেবার জন্য... কিন্তু এবার বিধিবাম, আমি বেঁকে বসলাম অন্যবন্ধুদের অনুরোধে । শেষমেষ কিছু খরচপাতি করলি, কিন্তু শর্ত দিলাম । তুই লিখে নিয়ে আসবি আর আমি সেটা কপি করবো । আজও ভাবলে অবাক লাগে, মাএ কয়েকদিনেই কিভাবে তুই আমার হাতের লিখা হুবহু কপি করে ফেললি ? কয়েকদিন পরেই আমাদের টেস্ট পরীক্ষা শুরু হলো ... সবাই খুব সিরিয়াসলি পড়াশুনা করছি- মনে আছে, ভূগোল স্যার পরিক্ষার ২ দিন পরে সবার সামনে আমাকে বললো, আমি নাকি টেনে টুনে পাশ করেছি উনার সাবজেক্টে । স্যার চলে যাবার পরে তুই হাসতে শুরু করলি... আমার প্রচন্ড মন খারাপ আর তুই নাকি দিব্যি হাসতে লাগলি ? মনে হয়েছিলো, তোর গলা চেপে ধরি... খানিক পরে তুই আমাকে বললি, ঐটা তোর খাতা নারে দোস্ত, ঐটা আমার খাতা... জানতে চাইলাম, তুই এতো খারাপ করলি কিভাবে ? তোর কষ্টের হাসি দেখে ও বুঝতে পারিনি দোস্ত । সেদিনই ছিলো তোর হাসির শেষ দিন...ভাবিস না দোস্ত, আর কিছুদিন অপেক্ষা কর ... আমি ও আসবো আমাদের আপন ঠিকানায়...!!!