somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ড্রামস : সর্বকালের সেরা :D:D

১৭ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ৯:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ড্রামারকে বলা যায় ব্যান্ডের মেরুদন্ড। কনসার্টে শ্রোতার নজর যদিও ভোকাল বা গিটারিস্টের ওপরই থাকে বেশি- কিন্তু একজন ড্রামার ছাড়া তো ব্যান্ডই অচল। গিটারিস্টের টুকিটাকি ভুল হলেও মূল ভোকাল বা ব্যান্ডের অন্য সদস্যরা তা ঠিক করে চালিয়ে নিতে পারে গানটা। কিন্তু ড্রামারের সামান্য ভুলেই নিশ্চিত কেঁচে যাবে গোটা শো। অতএব তার দায়িত্ব বেশি, দায়ও।

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কনসার্টে অসাধারণ শিল্পনৈপুণ্য দেখিয়ে আমাদের মুগ্ধ করেছেন অনেক বড় বড় ড্রামার। তারা সবাই নমস্য। পৃথিবীর সর্বকালের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় তেমনি কয়েক জন ড্রামার নিয়ে আমার এবারের পোস্ট।

১)লারস উলরিচঃ মেটালিকা



ভেবেছিলেন বড় টেনিস খেলোয়াড় হবেন। এই স্বপ্ন নিয়েই সতেরো বছর বয়সে টেনিসের ওপর উচ্চতর ট্রেইনিং নিতে জন্মভূমি ডেনমার্ক ছেড়ে চলে গেলেন আমেরিকার লস এঞ্জেলেস। কিন্তু টেনিস খেলা নিশ্চয়ই তার বরাতে ছিল না। হেইটফিল্ডের কুনজরে(!) পড়ে বদলে গেলো তার ভাগ্য। তিনি হয়ে গেলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ড্রামারদের অন্যতম।

লারচ উলরিচের জন্ম ১৯৬৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ডেনমার্কের জেনটোফে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। ডেনিশ এই ড্রামারের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি আমেরিকার হেভি মেটাল ব্যান্ড ‘মেটালিকা’র প্রতিষ্ঠাতা। স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় এক বিজ্ঞাপন দেখে হেইটফিল্ডের (পরবর্তীতে মেটানিকার ভোকাল) সাথে পরিচিত হন তিনি। এই দুয়ের হাত ধরেই শুরু হয় হেভিমেটাল দুনিয়ায় মেটালিকার ঐতিহাসিক যাত্রা।

লারসের বয়স যখন ১০ বছর তখন এক কনসার্টে প্রথমবারের মতো ওই সময়ের জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘ডিপপার্পল’ এর পারফরমেন্স দেখার সুযোগ ঘটে তার। এখানে গায়ক রিচি ব্লাকমোরের গান দারুণ উৎসাহিত করে তাকে। সঙ্গীতভূবনে আসার জন্য তার উৎসাহ দেখে ১৩ বছর বয়সে উলরিচের দাদী তাকে উপহার দেন জীবনের প্রথম ড্রামসেট। তখনও অবশ্য সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি- টেনিস নাকি ড্রাম। যাই হোক, ১৯৭০ সালের শেষদিকে তিনি পরিবারের সাথে চলে যান ক্যালিফোনিয়া। তখন সেখানকার ছেলেমেয়েরা ছিল রকঅ্যান্ডরোল মিউজিক বলতে পাগল। এই পাগলামি তাকে বানিয়ে তোলে পূর্ণাঙ্গ এক মেটালশিল্পী। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই দিনরাত জ্যামিং করছেন জেমস হেইটফিল্ডের মতো ঘাগু তারকার সঙ্গে। ১৯৮১ সাল থেকে অদ্যাবধি মেটালিকার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন লারস উলরিচ।

২)মাইকেল হেনরি ম্যাকব্রেইনঃ আয়রন মেইডেন



হেভি মেটালব্যান্ড আয়রন মেইডেনের ড্রামার মাইকেল হেনরি ম্যাকব্রেইনের জন্ম ১৯৫২ সালের ৫ জুন। আয়রনদের সাথে আছেন সেই ১৯৮২ সাল থেকে। লম্বা একটা নাম থাকলেও দুনিয়াজুড়ে কিন্তু তিনি পরিচিত ‘নিকো’ নামে। এর পেছনে একটি গল্প আছে। আয়রন মেইডেন-এর কিবোর্ডিস্ট বিলি ডে একদিন ম্যাকব্রেইনের সাথে অন্য সকলের পরিচয় করিয়ে দেন এই বলে যে, ও আমার ইতালিয়ান ড্রামার। নাম নিকো। সেই থেকে তার নাম হয়ে যায় নিকো। ম্যাকব্রেইন নিজেও জানান, ছোটবেলায় তার একটা পোষা ভাল্লুক ছিল- নাম নিকোলাস। ভাল্লুকটা তার সঙ্গেই থাকতো সবসময়। এ কারণেও তার বাবামা তাকে নিকি নামে ডাকতো।

ম্যাকব্রেইনকে ধরা হয় হেভি মেটাল সঙ্গীতের অন্যতম পথিকৃৎ। হেভি মেটাল সঙ্গীতের উন্নতি সাধনে তার অবদান তুলনাহীন। তার সম্পর্কে এক মন্তব্যে আয়রন মেইডেনের মেইন ভোকাল স্টিভ হ্যারিস বলেন, তার কোনো বিকল্প নেই। তার মতো এমন দ্বিতীয় কেউ নেই যে এই ব্যান্ডের জন্য উপযুক্ত। একজন গিটারিস্ট যেভাবে গিটার বাজায় সেই একই আবেগ নিয়ে ড্রাম বাজায় নিক। সে যে শুধু গানের বিটটাকেই ধরে রাখে না, বরং পুরো জিনিসটাকেই পরিচালনা করে। নিক ড্রাম বাজায় গিটারিস্টদের রিফের সাথে মিল রেখে। নোটের পর নোট ঠিক রাখে ও যেটা আমি অন্য কাউকে করতে দেখিনি।

৩)শন ড্রেভারঃ মেগাডেথ



মেগাডেথ ও আইডালোন এর ড্রামার শন ড্রেভারের জন্ম ১৯৬১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া। ১৩ বছর বয়সে প্রথম ড্রাম বাজানো শুরু করেন। এরপর যুক্ত হন আইডোলোন-এর সাথে। ড্রামের পাশাপাশি গিটারেও দারুণ চালু তার হাত। মেগাডেথ-এর ব্ল্যাকমেইন দ্য ইউনিভার্স ট্যুরে গিটার বাজিয়েছেন তিনি। অনুষ্ঠানটি হয় জাপানের কাওয়াসাকি শহরে। ‘প্যারানয়েড’ এবং ‘পিস সেলস’ গান দুটিতে নিজেদের বাদ্যযন্ত্র অদলবদল করে নেন শন আর তার ভাই গ্লেন ড্রোভার। গ্লেন চলে যান ড্রামসে শন বাজান গিটার।

২০০৪ সালের অক্টোবরে শন ড্রোভার যখন যোগ দিলেন মেগাডেথ ব্যান্ডে, তখন তার প্রথম মাথাব্যথা ছিল ভক্তদের কাছ থেকে স্বীকৃতি আদায় করা। মেগাডেথের নিজস্ব মিউজিকের অনন্য কৌশল আয়ত্ত করাটা নয়। ড্রোভার বললেন, আমি ভক্তদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা চেয়েছি, আমার মনে হয় প্রায় দুই বছর পর আমি পেয়ে গেছি আমার ইপ্সিত গ্রহণযোগ্যতা।


৪)মাইকেল স্টিভেন পোর্টনয়ঃ ড্রিম থিয়েটার


প্রোগ্রেসিভ মেটাল ব্যান্ড ড্রিম থিয়েটারের ড্রামার মাইকেল স্টিভেনের জন্ম ১৯৬৭ সালের ২০ এপ্রিল। তিনি একই সাথে দলটির ব্যাকআপ ভোকালও বটে। মডার্ন ড্রামার ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত হয়েছেন ২৩ বার। ড্রিম থিয়েটারের শেষ পাঁচটি অ্যালবাম প্রযোজনার কাজ করেছেন গিটারিস্ট জন পেট্রুচ্চির সঙ্গে মিলে। ড্রিম থিয়েটারের জন্য লিখেছেন অসাধারণ অনেকগুলো গান। তিনি সবচেয়ে কম বয়সী দ্বিতীয় মানুষ (প্রথমজন নিল পিয়ার্ট) যিনি মাত্র ৩৭ বছর বয়সে অভিষিক্ত হয়েছেন মডার্ন ড্রামারস হল অব ফেম-এ। তাকে তুলনা করা যেতে পারে একমাত্র ‘পরকুপাইন ট্রি’ ব্যান্ডের গেভিন হ্যারিসনের সাথে।

পোর্টনয়ের ড্রাম বাজানোর প্রেরণা ‘রাশ’ ব্যান্ডের নিল পিয়ার্ট। বেস্ট আপ-অ্যান্ড-কামিং ট্যালেন্ট এর জন্য একবার, বেস্ট ক্লিনিসিয়ানের জন্য দুইবার, বেস্ট এডুকেশনাল ভিডিও-এর জন্য দুইবার, বেস্ট রেকর্ড পারফরমেন্স-এর জন্য ছয়বার এবং বেস্ট প্রগ্রেসিভ রক ড্রামার-এর জন্য পরপর বারোবার পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। ১৯৮৫ সাল থেকে আজ অবধি যুক্ত আছেন ড্রিম থিয়েটার ব্যান্ডের সাথে। এছাড়াও কাজ করেছেন বেশ কয়েকটি প্রগ্রেসিভ ব্যান্ড তৈরির পেছনে। এগুলো হচ্ছে ট্রান্স-আটলান্টিক, লিকুইড টেনশন এবং লিকুইড ট্রায়ো।
১২টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×