কি করবেন ভূমিকম্প হলে?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
বাংলাদেশে বিশেষত ঢাকা শহরে বড় কোন ভূমিকম্প হলে পরিস্থিতি কী হবে, সেটা চিন্তা করতেও ভয় লাগে। ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হলে আমাদের কি হবে সেটা ভাবতে গেলেই কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে!!! যাইহোক যখন হবে তখন দেখা যাবে।
ভূমিকম্পের সময় জীবন বাঁচানোর জন্য কী করণীয় সে সম্পর্কে কিছু ধারণা দিলাম। এগুলো জেনে রাখা ভালো। নিজে পড়ুন এবং আপনার পাশের জনকেও পড়িয়ে রাখুন। মনে রাখবেন জীবন-মরণ জড়িত এর সাথে। এগুলো অনেক ওয়েবসাইট ঘেটে এবং নানা জনের ব্লগ থেকে সংগ্রহ করেছি।
১# আমেরিকান রেডক্রসের পরামর্শ অনুযায়ী- ভূমিকম্পের সময় সবচেয়ে উত্তম পন্থা হল, ‘ড্রপ-কাভার-হোল্ড অন’ বা ‘ডাক-কাভার’ পদ্ধতি। অর্থাৎ কম্পন শুরু হলে মেঝেতে বসে পড়ুন, তারপর কোন শক্ত টেবিল বা ডেস্কের নীচে ঢুকে কাভার নিন, এমন ডেস্ক বেছে নিন বা এমনভাবে কাভার নিন যেন প্রয়োজনে আপনি কাভারসহ মুভ করতে পারেন। তাদের মতে, ভূমিকম্পে আমেরিকার খুব কম বিল্ডিংই কলাপস করে; যেটা হয় তা হল আশেপাশের বিভিন্ন জিনিষ বা ফার্নিচার গায়ের উপর পড়ে নেক-হেড-চেস্ট ইনজুরি বেশি হয়। তাই এগুলো থেকে রক্ষার জন্য কোন শক্ত ডেস্ক বা এরকম কিছুর নীচে ঢুকে কাভার নেয়া বেশি জরুরী। অপরদিকে উদ্ধার কর্মীর মতে বিল্ডিং কলাপস করলে ‘ডাক-কাভার’ পদ্ধতি একটি মরণ-ফাঁদ হবে। সেটা না করে কোন বড় অবজেক্ট যেটা কম কম্পপ্যাক্ট করবে যেমন সোফা ইত্যাদির পাশে আশ্রয় নিলে যে void তৈরী হবে, তাতে বাঁচার সম্ভাবনা বেশী থাকবে। এখন রেড ক্রস কিন্তু এই ভয়েড বা এর ব্যাপারটা অস্বীকার করে নি। কিন্তু যেহেতু আমেরিকায় বিল্ডিং কলাপ্স হবার সম্ভাবনা কম, তাই তাদের ‘ড্রপ-কাভার-হোল্ড অন’ পদ্ধতিই বিভিন্ন বস্তুর আঘাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য সবচেয়ে উত্তম। দু’টো ব্যাপারই তাই মাথায় রাখুন।
২# উদ্ধার কর্মীরা আরো লক্ষ্য করেছেন- বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়ার সময় সিলিং যখন কোন অবজেক্টের ওপর পড়ে একে গুঁড়িয়ে দেয়, ঠিক তার পাশেই ছোট্ট একটি খালি জায়গা বা void-এর সৃষ্টি হয়। একে তারা বলছেন ‘সেফটি জোন’ বা ‘ট্রায়াঙ্গল অফ লাইফ’। তাই ভূমিকম্পের সময় বড় কোন সোফা বা বড় কোন অবজেক্ট যেটা কম কম্প্রেস করবে- এরকম কিছুর পাশে আশ্রয় নিলে বাঁচার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য ছোট্ট একটু void-ই যথেষ্ট। বিপন্ন অবস্থায় কুকুর, বিড়াল এবং শিশুদের একটা সহজাত প্রবৃত্তি হল কুন্ডলি করে গুটিশুটি হয়ে যাওয়া। ভূমিকম্পের সময় মানুষেরও এটা অনুসরণ করা উচিত। তাহলে বিভিন্ন অবজেক্টের পাশে গুটিশুটি করে আশ্রয় নিলে এগুলো ভূমিকম্পের সময় যে ছোট void-এর সৃষ্টি করবে তাতে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
৩# রাতের বেলা ঘুমানোর সময় ভুমিকম্প হলে কোন হুড়াহুড়ি করার দরকার নেই। গড়িয়ে মেঝেতে কুন্ডলি পাকিয়ে শুয়ে পড়ুন বিছানাকে ঢাল বানিয়ে। তার মানে আবার বিছানার নীচে যেন ঢুকবেন না, বিছানার পাশে আশ্রয় নিন। তেমনি ভূমিকম্পের সময় জানালা বা বারান্দা দিয়ে লাফ দেয়া এসবও করবেন না। কোন সোফা বা দুই নাম্বার পয়েন্টে যেভাবে বলেছি সেভাবে ঘরের মধ্যেই কোন অবজেক্টের পাশে আশ্রয় নিন।
৪# অনেককে বলতে শুনেছি ভূমিকম্পের সময় দরজার নীচে আশ্রয় নিলে নাকি বাঁচার সম্ভাবনা বেশি থাকে! দরজার নীচে বা পাশে থাকলে নির্ঘাত মারা পড়বেন। যদি দরজার নীচে থাকেন তবে সিলিং-এর নীচে চাপা পড়ে মারা পড়বেন আর যদি পাশে থাকেন দরজা আপনাকে দু’ভাগ করে কেটে ভেঙ্গে পড়বে।
৫# ভূমিকম্পের সময় কখনই সিঁড়িতে আশ্রয় নেবেন না। সিঁড়ির ‘মোমেন্ট অফ ফ্রিকোয়েন্সী’ বিল্ডিং-এর চাইতে ভিন্ন হয় এবং অনেক সময় বিল্ডিং ভেঙ্গে না পড়লেও সিঁড়ি দ্রুত ভেঙ্গে পড়ে।
৬# চেষ্টা করুন বাসার একেবারে ভিতরের দিকের রুমে না থেকে বাইরের ওয়ালের কাছাকাছি আশ্রয় নিতে। বিল্ডিং-এর ভেতরের দিকে থাকলে সবকিছু ভেঙ্গে পড়ার পর আপনার ‘উদ্ধার পাবার রাস্তা’ ব্লক হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বাইরের ওয়ালের কাছাকাছি থাকলে ব্লক কম থাকবে, তাড়াতাড়ি উদ্ধার পাবার সম্ভাবনাও বেশি থাকবে।
৭# বড় ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয় যেটাকে ‘আফটার শক’ বলে। এটার জন্যও সতর্ক থাকুন, না হলে পচা শামুকেই শেষমেষ পা কাটতে হতে পারে।
৮# প্রথম ভূমিকম্পের পর ইউটিলিটি লাইনগুলো (গ্যাস, বিদ্যুত ইত্যাদি) একনজর দেখে নিন। কোথাও কোন লিক বা ড্যামেজ দেখলে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিন
সবচেয়ে বড় কথা একটি ভূমিকম্পের সময় যেটুকু সময় পাওয়া যায় সেসময় মাথা ঠান্ডা রাখা অসম্ভব হয়ে। কিন্তু আমাদের চেষ্টা করতে হবে।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ধর্ম ও বিজ্ঞান
করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
তালগোল
তুমি যাও চলে
আমি যাই গলে
চলে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফুরালেই দিনের আলোয় ফর্সা
ঘুরেঘুরে ফিরেতো আসে, আসেতো ফিরে
তুমি চলে যাও, তুমি চলে যাও, আমাকে ঘিরে
জড়ায়ে মোহ বাতাসে মদির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন
মা
মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।
অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।
একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে
ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন