অবশেষে পদত্যাগে বাধ্য হচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তার এই পদত্যাগের নেপথ্যে রয়েছে একটি বুগাতি লা ভুয়াত্যু নোয়া ( la voiture noire) গাড়ি।

মূল খবরে যাওয়ার আগে প্রাসঙ্গিক কিছু কথা (যারা বকবকানি শুনতে চান না তারা এই প্যারা ও পরের প্যারা বাদ দিয়ে পড়তে পারেন)। ব্রিটিশ রাজনীতিতে আমাদের আগ্রহের অন্যতম বড় কারণ সম্ভবত অর্থনৈতিক। আমাদের প্রবাসী-আয়ের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ ব্রিটেন থেকে আসে। পাউন্ডের দর পরিবর্তনের সাথে সাথে রেমিট্যান্সের সঙ্গে জড়িত পরিবারের সদস্যদের মুখের হাসির বিস্তৃতি বাড়ে কমে। যদিও বৃটেনের আভ্যন্তরীণ অর্থনীতি গত দশকের তুলনায় এখন অনেকটা ভালো, ব্রেক্সিট বিষয়ে বিতর্কের কারণে আন্তর্জাতিকভাবে পাউন্ড স্টার্লিং অনবরত ভাবে মার খেয়ে যাচ্ছে। ২০১৬ তে ব্রেক্সিট বিষয়ে গণভোটের আগে এক পাউন্ড সমান ১১৬ টাকা ছিল। গণভোটের পর কয়েক দিনের মধ্যে এক পাউন্ড ১০৩ টাকায় নেমে আসে (দু সপ্তাহ পরে ১০১ টাকায় নেমেছিল)। ব্রেক্সিট বিষয়ে প্রতিটি ভোটের সাথে সাথেই পাউন্ডের দাম ওঠানামা করেছে। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার ২৯ মার্চের ভোটের আগে এক পাউন্ড ১১১ টাকার কিছু বেশি ছিল, এখন ভোটের পর তা কমে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সায় এসেছে । উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট ভোটের আগে ১ ডলার ছিল ৭৮ টাকা। এখন এক ডলার সমান ৮৪ টাকা। কাজেই টাকার তুলনায় পাউন্ডের দাম খুব বেশি না কমলেও ডলারের কাছে পাউন্ড অনেকখানি রোগা হয়ে গেছে।
ডেভিড ক্যামেরনের পদত্যাগের পর ২০১৬তে থেরেসা মে প্রধান মন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর ব্রেক্সিট বিলের উপর তিন দফা ভোটের কোনটিতেই থেরেসা মে সুবিধা করতে পারেন নি, বিরোধী দলের সাথে সাথে নিজ দলের মধ্যে থেকেও তার প্রস্তাবের উপর প্রবল বিরোধীতা এসেছে। এমন কি এই ইস্যুতে বিরোধী দল তার বিরুদ্ধে অনস্থা প্রস্তাবও এনেছিল (সরকারি দল ব্রেক্সিটের বিষয়ে একমত না হলেও অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে মে কে সহযোগিতা করেছে)।
আগামী ১২ই এপ্রিলের মধ্যে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ব্রেক্সিট বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারবে এমন সম্ভাবনা খুব একটা দেখা যায় না। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও বিষয়টি জানেন। শেষ চেষ্টা হিসেবে তিনি তার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টাদের পরামর্শ ক্রমে দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশের নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তার তিন সহযোগীর সাথে (ঐ নির্বাচন কমিশনের পঞ্চম সদস্য দুধ ভাত, কোন কাজেরই না, খালি সংবাদ সম্মেলনে মুখ চালাতে পারে, কাজেই বাদ) যোগাযোগ করেছিলেন। ঐরকম যোগ্য লোকদের নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ দিতে পারলে ব্রিটেনে সাধু সাধু রব উঠবে এবং নির্বাচন কমিশনের দক্ষতায় ন্যূনতম ৯৮% এমপিদের ভোট পেয়ে ব্রেক্সিট বিল পাস করাতে পারবেন- এই ভরসা থেরেসা মের ছিল। থেরেসা মে এ কারণে ব্যক্তিগতভাবে ওই নির্বাচন কমিশনার চার জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নির্বাচন কমিশনার চারজন প্রথমে এই বলে মৃদু আপত্তি জানান যে তারা দেশটির স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছেন। থেরেসা মে তাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে নির্বাচন ব্যবস্থায় তারা যে বিপ্লব সৃষ্টি করেছেন তাতে নির্বাচন কমিশনারদের অনুপস্থিতিতে এমনকি পুলিশ, আনসার বা প্রিজাইডিং অফিসারের অনুপস্থিতিতেও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়ে যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন, শুধু ব্যালট পেপার থাকলেই চলবে। নির্বাচন কমিশনাররা থেরেসা মে কে জানান তারা চেষ্টা করছেন ভবিষ্যতে যাতে এমনকি ব্যালট ছাড়াও নির্বাচন করা যায় এমন একটি পদ্ধতি দাড়া করানোর। পরিশেষে থেরেসা মে-র পীড়াপীড়িতে নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা শর্ত সাপেক্ষে দায়িত্ব নিতে সম্মত হন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার শর্ত দেন যে দায়িত্ব পালন কালীন সময়ের জন্য তাকে এবং তার পরিবারের প্রতি সদস্যকে একটি করে Bugatti la voiture noire গাড়ি দিতে হবে এবং বাড়ির কাজের লোকদের জন্য ফেরারি গাড়ি দিতে হবে। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার গন লাম্বর্গিনি, রোলস রয়েস এবং Mercedes-benz Maybach Exelero গাড়ি দাবি করেন।
থেরেসা মে প্রথমে সবাইকে অ্যাস্টন মার্টিন গাড়ি অফার করেন। পরবর্তীতে বাস্তবতা বুঝতে পেরে তিনি নির্বাচন কমিশনারদের দাবি মেনে নিতে চেয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ইউ ছাড়ার এই সন্ধিক্ষণে বিদেশি এই গাড়িগুলো কেনার প্রস্তাব সমর্থন করেনি। কাজেই থেরেসা মে-কে পদত্যাগ করতেই হচ্ছে। ভবিষ্যতে জার্মানি, ফ্রান্স বা ইতালিতে রাজনৈতিক সংকট হলে ওই নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ পেতে সমস্যা হবে না বলেই মনে হয়।
আপডেটঃ

link
কেউ কেউ জানতে চেয়েছেন উপরের নিউজটি আমার পোস্টের সূত্র কি না।
আমি বলি তোবা তোবা, ফজলু মিয়া দেশপ্রেমিক লোক, আগে বাংলার বাণী পড়তো, এখন জনকন্ঠ ছাড়া কিছু পড়ে না, ৭১ টিভি এবং বিটিভি ছাড়া দোকানে কোন চ্যানেল চলে না, শুক্রবার দোকান বন্ধ, ঐদিন ফজলু ভাই ভদ্রলোক, ভাবি দয়া করে যে চ্যানেল দেখতে দেয় সে চ্যানেলের জলসাই উনি দেখেন।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
ফ্রেঞ্চ noire শব্দের শেষের r এর উচ্চারণ র/খ/হ এর মাঝামাঝি কিছু একটা হবে, আমি এটা নোয়া রাখলাম, আপনারা অাপনাদের পছন্দ মতো উচ্চারন করে নেবেন। যাদের দাঁতের ফিলিং/ক্যানাল করা আছে তারা জার্মান গাড়ির নাম উচ্চারন নিজ দায়িত্বে করবেন, আমি ইংরেজি বানান লিখে গেলাম। আমার বাড়ির সামনের চায়ের দোকানদার ফজলু মিয়া সারা দুনিয়ার খবর রাখে। বাসার টেলিভিশন বিক্রি করে দেয়ার পর দেশের উন্নয়নের খবর বিলবোর্ডে দেখি আর দুনিয়ার খবর ফজলু মিয়ার কাছে পাই। এর পরেও কোন বিষয়ে সংশয় থাকলে বউকে জিজ্ঞাসা করি, আমার বউ সব জানে। পোস্টের তথ্য সূত্র ফজলু মিয়া, ছবি সূত্র bing । দেশটির নাম আমাকে ফজলু মিয়া বলেনি, বউকে ভয়ে জিজ্ঞাসা করিনি কেননা বাইরে চা খাই শুনলে পিঠের চামড়া থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



