somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহালয়া সিনেমা রিভিউ

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহালয়া ( মুক্তি পায় ১ মার্চ ২০১৯ )
IMDb রেটিং ৮.৪ / ১০
ব্যাক্তিগত রেটিং ৯ / ১০্
প্রডিউসার : প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়
পরিচালক : সৌমিক সেন
ছবির ধরন : Drama
সময়সীমা : 1 hrs. 48 Min.

অভিনয় করেন : প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় , শুভাশিষ মুখোপাধ্যায় , যীশু সেনগুপ্ত , কাঞ্চন মল্লিক , ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় সহ আরো অনেকেই

প্রথমত আমরা যারা বাংলাদেশী আছি স্বাভাবিক কারনেই মহালয়া সম্পর্কে জানি না ,আমাদের এই দেশের হিন্দু বাংলাদেশীদের মহালয়া সম্পর্কে কেমন আবেগ সেটা আমার জানা নেই ,মহালয়া নিয়ে একটি দারুন ইতিহাস এবং আবেগ নিয়ে দারুন সিনেমা হতে পারে তা স্বভাবতই আমাকে অবাক করেছে ।
সিনেমার শুরু তে কিছু জিনিস জেনে নিলে সিনেমা সম্পর্কে দারুন একটা থ্রিলিং ফিল পাওয়া যাবে ।

মহালয়া মূলত কি ?
মহালয়া সম্পর্কে যতটুকু পড়ে জানতে পারলাম মূলত দেবী দশভূজা কে আগমনী কে ই মহালয়া বলা হয় ।

জাগো, তুমি জাগো, জাগো দুর্গা,
জাগো দশপ্রহরণধারিণী,
অভয়াশক্তি বলপ্রদায়িনী তুমি জাগো।
প্রণমি বরদা অজরা অতুলা
বহুবলধারিণী রিপুদলবারিণী জাগো মা।
শরণময়ী চন্ডিকা শংকরী জাগো, জাগো মা,
জাগো অসুরবিনাশিনী তুমি জাগো।।

এই গীতি থেকে বিশ্লেষন করলে পাওয়া যায় অশুভ শক্তির বিনাশ আর ধর্ম রক্ষায় যুগে যুগে মর্ত্যলোকে দেবতাদের আবির্ভাব হয়েছে। যার ধারাবাহিকতাতেই অসুর কূলের হাত থেকে দেবগণকে রক্ষায় দেবী দুর্গার আগমন ঘটেছিল। পৃথিবীতে যখনই ব্রহ্মার বরপ্রাপ্তের মতো শক্তিশালী মহিষাসুরেরা ফিরে আসে বারবার, ধর্মের গ্লানি হয় এবং পাপ বৃদ্ধি পায়, তখন তাদের ত্রাস-সংহারে দেবী দুর্গা ফিরে আসেন বারবার। আর দেবীর এ শুভাগমন ঘটে শুভ মহালয়ায়। মহালয়ার শুভক্ষণে যাবতীয় আঁধার গ্লানি মুছে যায় অসুরনাশিনী দুর্গার তেজচ্ছটায়।
মহিষাসুর ভগবান ব্রহ্মের একনিষ্ঠ উপাসক ছিলেন। বহু বছর তপস্যার পর ব্রহ্মা তাঁকে একটি বর প্রদান করেছিলেন। মহিষাসুর নিজের শক্তি নিয়ে গর্বিত ছিলেন। তিনি ভগবান ব্রহ্মার কাছ থেকে অমরত্বের বর চেয়েছিলেন, এবং তাঁর ইচ্ছা ছিল পৃথিবীর কোনও মানুষ বা প্রাণী তাঁকে যেন হত্যা করতে না পারে। ব্রহ্মা তাঁকে এই বর প্রদান করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে তিনি একজন মহিলার কাছে পরাস্ত এবং নিহত হবেন।
মহিষাসুর তাঁর শক্তির ওপর এতটাই আস্থা করতেন যে তিনি বিশ্বাস করেছিলেন, এই পৃথিবীতে কোনও মহিলাই তাঁকে হত্যা করতে পারবে না। মহিষাসুর তাঁর সেনাবাহিনী নিয়ে ত্রিলোক (স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল) আক্রমণ করেন এবং ইন্দ্রলোকও (ভগবান ইন্দ্রের রাজ্য) জয় করার চেষ্টা করেন। তাঁর অত্যাচারে সারা জগৎ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।
দেবতারা মহিষাসুরের সাথে যুদ্ধ করলেও ভগবান ব্রহ্মার আশির্বাদের ফলে কেউ তাঁকে পরাস্ত করতে পারেনি। এরপর, দেবতারা ভগবান বিষ্ণুর কাছে সাহায্য প্রার্থী হন। মহিষাসুরকে বধ করার জন্য সমস্ত দেবতা ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিব তাঁদের সমস্ত শক্তি একত্রিত হয়ে সৃষ্টি করেন দেবী দুর্গার।

তাছাড়া বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহালয়াটি শুনলে আরো ভালো লাগবে তাছাড়াও উওম কুমারের কন্ঠে মহালয়া শুনলে এর পাথর্ক্য এবং সিনেমার মুল্য বিষয় আবেগ টি বোঝা যাবে সহজেই । নিচের লিংকটা দিলাম তাতে সহজে পার্থক্য গুলো বোঝা যাবে ।

https://www.youtube.com/watch?v=JXDnhN-hPT4 - বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহালয়া

https://www.youtube.com/watch?v=8o40bvp2KZc - মহানায়ক উত্তম কুমারের কণ্ঠে মহালয়া।

ঘটনা প্রবাহ :
বা্ঙালীদের যে কোন বিষয়ে আবেগ প্রবণ সেটা স্বারা বিশ্বের লোক জানে আমাদের আবেগ ভালোবাসা আমাদের নিয়ে গেছে অনেক দূরে ।
সিনেমা মূল কাহিণী হিসেবে যদি ধরা হয় তাহলে সার কথায় বলতে হয় নতুন আর পুরানো মধ্য কার মিশেল যেমন বাংলা প্রবাদে লেখা হয় পুরানো চাল ভাতে বলে তেমনি পুরানো জিনিসের মহাত্ন অনেক ।
মহালয়ার সকালে আকাশবাণীর পৌঁছে দেওয়া বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর স্তোত্রপাঠ না শুনলে আজও বাঙালির মনে হয় না পুজো এল। কিন্তু বহু বছর আগে এক পুজোয় মহালয়ার সকালের অনুষ্ঠানে তার জায়গায় আনা হয়েছিল, বাঙালির একমাত্র মহানায়ককে। উত্তমকুমারকে। কার মাথায় এমন ভাবনা উদয় হল, উত্তমকুমার কেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণর জুতোয় পা গলালেন, ফলটাই বা কী হল, তা নিয়ে সৌমিক সেনের ছবি ‘মহালয়া’। ছবি? ‘মহালয়া’-কে ডকুমেন্টারি-ফিচার বলাটা ঠিক হবে ।
অভিনয় প্রসঙ্গে কিছু বলার নেই। প্রতিটি চরিত্রই সাবলীল। বীরেনদার চরিত্রে শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, চেনা মানুষটির হাঁটাচলা, বেশভূষা, মায় নস্যি নেওয়ার ভঙ্গি নিয়ে এত সজীব যে মন খারাপ হয়ে যায়। যিশু সেনগুপ্তর উত্তমকুমার অবিশ্বাস্য ভাবে বিশ্বাসযোগ্য। বিশেষ ভাবে তাঁর শরীরী ভাষা, কথ্য ভঙ্গি, উত্তমকুমারও যে আমাদের নস্টালজিয়ার আর এক নাম! পঙ্কজ মল্লিকের ভূমিকায় শুভ চমৎকার। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রটি সাদা-কালোয় ধূসর একটি পূর্ণ মানুষ, অভিনয়ও সুন্দর। প্রসেনজিৎ ছকভাঙা অন্য রকম ভাল!

সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:২১
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×