ভরা জোসনা রাতে
মরুভূমি পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে আমরা
চলে যাবো সুদূর অতীতে
যে সময়ের বাতাসে মিশে আছে আমাদের
পূর্বসূরীদের নিঃশ্বাস।
সেই অতীতে
যেখানে এক মমতাময়ী মা
তৃষ্ণার্ত পুত্রের পিপাসা মেটাতে
পাগলপারা হয়ে দৌঁড়াচ্ছেন সাফা থেকে মারওয়ায়
মারওয়া থেকে সাফাতে।
কিন্তু সে কী নিদারুন ব্যর্থতা—
আল্লাহর দুনিয়াতে কোথাও মিলেনি
একফোঁটা জলের দেখা!
তারপর—
ব্যর্থ মনোরথে
সন্তানকে হারানোর ভয়ে দুরুদুরু
বুকে এসে দেখেন
পুত্রের পায়ের কাছে খুলে গেছে জান্নাতের নহর।
সেই উদ্যত রাজা
অহংকারে ডুবে গেছে যার গণ্ডদেশও
হাতি বহর নিয়ে সে ভাঙতে এসেছিলো
আল্লাহর ঘর—
ছোট ছোট পাখিদের হাতে তার পরাজিত
হওয়ার দৃশ্য দেখে
কী যে পুলকে ভরে উঠবে আমাদের মন!
আরো সম্মুখে এসে
আমাদের কানে ভেসে আসবে একটা
ইস্পাত-দৃঢ় আওয়াজ— আহাদ! আহাদ!
বুকে পাথর চাপা নিয়ে
আশেপাশে কোথাও আছেন বিলাল।
আরো এগুতে থাকবে সময়;
হাঁটতে হাঁটতে আমরাও
পৌঁছে যাবো মদীনার উপকন্ঠে
যেখানে বাতাসে ভেসে বেড়ায়—
তা’লা আল বাদরু আলাইনা।
মাসজিদে নববীর কিনারায় এসে
ভারি সুন্দর এক জটলার দিকে আমাদের নজর যাবে
সেখান থেকে ছুটে আসা এক লোককে জিগ্যেশ করবো— কে ওখানে?
তিনি উত্তরে বলবেন— মুহাম্মাদ! আল্লাহর নবি!
‘তিনি দেখতে কেমন?’
‘ওই যে, আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ দেখছো, তিনি তারচেয়েও সুন্দর!’
মাথার ওপরে থাকা চাঁদটাকে
আরেকবার দেখে নিয়ে
যে-ই না ঘাঁড় ফেরাবো—
দেখবো সম্মুখে পড়ে আছে বিস্তৃত বিরান মরুভূমি।
কোথাও আর কিচ্ছু নেই।
আমাদের ঘোর ভাঙবে
আকাশপানে মাথা তুলে আমরা
অশ্রুসিক্ত চোখে
বাতাসে বিলিয়ে দেবো হৃদয়ের ডাক—
আল্লাহুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদ!
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:১৯