টাকার গন্ধ
লেখক: ড. মাহমুদ আহমদ
প্রকাশনী: আহসান পাবলিকেশন
বইটির মুখবন্ধে লেখক লিখেছেন,
"মধুর চেয়ে মিষ্টি যে টাকা তার আবার গন্ধ কি? টাকা মানেই তো ক্ষমতা। কিন্তু না। টাকা দিয়ে সব কিছু করা যায় না। যেমন- টাকা দিয়ে বালিশ কেনা যায়; ঘুম কেনা যায় না।
টাকা কারো জন্য সম্পদ; কারো জন্য বিপদ। দুনিয়া জোড়া এখন যে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে তাও এই টাকার জন্য। তাই তো টাকার এত গন্ধ।
বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা সম্পর্কে জানতে এবং মন্দা পরিস্থিতিতে টাকার কষ্ট দূর করে জীবনকে সুখী করতে এ বই আপনাকে সাহায্য করবে।"
বইয়ের ভিতরে কি রকম বিষয় আলোচনা করা হয়েছে তার কিছু নমুনা না দিয়ে থাকতে পারছি না ।
কেন আমেরিকা জোর করে হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করতে চেষ্টা করে ?
এর উত্তর পেতে হলে আপনাদেরকে আমেরিকার মুদ্রা ব্যবস্থা বা ‘ডলার’কে বুঝতে হবে।
কাগুজে বা ধাতব নোটের নিজস্ব কোন মুল্য নাই, এটি একটি রিপ্রেজেন্টর মাত্র। এক সময় প্রতিটা নোটের সাপেক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে সমমুল্যের স্বর্ণখন্ড গচ্ছিত থাকতো। "চাহিবামাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবে" কথার মানে হল আপনি যদি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে যেয়ে আপনার কাছে থাকা কোন নোট এর প্রকৃত মুল্য ফেরত চান তাহলে ব্যাংকে গচ্ছিত ঐ নোটের বিপরীতে স্বর্ণখণ্ডটি ব্যাংক আপনাকে ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। যদিও বর্তমানে টাকার মূল্য নির্ধারণ হচ্ছে ব্যাংকে রক্ষিত মার্কিন ডলার দিয়ে। তাই নোটের বিনিময়ে স্বর্ণখন্ড পাবার আশা বাদ দেয়াই ভালো
আমেরিকার ডলার ছাপতে কিন্তু কোন স্বর্নের প্রয়োজন হয় না। আমেরিকা স্বর্ণ রিজার্ভ ছাড়াই ইচ্ছামত কাগুজে ডলার ছাপতে পারে। ১৯৭১ সালের ১৫ই আগস্ট দেশটির প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডলারের ‘স্বর্ণ ভিত্তি’ বাতিল করেন এবং ‘ব্রিটন উডস সিস্টেম' কে বুড়ো আঙ্গুল দেখায় । এটাকে বলে ‘নিক্সন শক’ বলে ।
কিন্তু স্বর্ণ রিজার্ভ ছাড়া ডলার ছাপালে দেশটিতে মূল্যস্ফিতি দেখা দেয়ার কথা। সেটা কেন হচ্ছে না ?
আসলে আমেরিকা এটা নিয়ন্ত্রণ করেছে- ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি ও যোগান হ্রাসের মাধ্যমে।
এই চাহিদাটা-ই সৃষ্টি করা হয়েছে ‘তেল’ এর মাধ্যমে। এরজন্য আমেরিকা সৌদি আরব ও অন্যান্য ওপেকভূক্ত তেল রফতানিকারক দেশগুলোকে বাধ্য করেছে শুধুমাত্র ডলার দিয়ে তেল বিক্রি করতে। এতে একদিকে আমেরিকা নিজের ছাপানো কাগজ ‘ডলার’ দিয়ে ফ্রি তেল ক্রয়ের সুযোগ পায়। অপরদিকে অন্যরাষ্ট্রগুলো তেল কিনতে গিয়ে ডলারের শরনাপন্ন হলো, ফলে ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ডলারের অবস্থান শক্তিশালী হতেই থাকলো। এ কারণে স্বর্ণের ভিত্তি কাটিয়ে আমেরিকার মুদ্রা ডলার চিহ্নিত হলো ‘পেট্রো ডলার’ হিসেবে।
আপনি, আমি সবাই ইনডিরেক্টলি ইরাক, আফগানিস্তান, ইসরাইল সব জায়গায় যুদ্ধের খরচ আমেরিকাকে যুগিয়ে যাচ্ছি। কারণ আমরা ডলার ব্যবহার করছি। যতদিন গোল্ড ফিরে না আসে, ততদিন এই ব্যবস্থাই চলবে ।
বইটি বর্তমানে আহসান পাবলিকেশন নাকি আর প্রকাশ করে না ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৬