Triangle (2009) [মুভি এক্সপ্লানেশন]
.
Genre: Thriller, Mystery
.
Director: Christopher Smith
.
.............::::Spoiler Alerts::::.........
.
.
.
.
.
.
.
অনেক সময় শুনে থাকবেন যে, একটা কথা প্রচলিত আছে যে, মানুষ যদি কোন অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মারা যায় তাহলে তার আত্মা দুনিয়াতে ঘোরাঘরি করে , আশা পুরনের জন্য । এইরকমই একটা থিম নিয়ে মুভিটা ভাবলে অনেকটা মিলে যায় ।
প্রথমে বলি জাহাজের প্রসঙ্গেঃ যে জাহাজে সবাই বারবার ওঠে সেটির নাম AEOLUS. মিথলজি অনুযায়ী AEOLUS হলো Sisyphus এর পিতা।
এই মুভির একটা ইম্পর্টেন্ট বিষয় হলো “সিসিফাস এর মিথ” । এই “সিসিফাস এর মিথ” মুভির ভিতরেও আলোচনা করতে দেখা যায় যখন তারা জাহাজে থাকে । “সিসিফাস এর মিথ” এর কাহিনি হলো এই সিসিফাস প্রাচীন গ্রীক ডেথ দেবতার সাথে বেঈমানি করে। মৃত্যুর জন্য ডাকার পরে সিসিফাস বলে যে একটু পর আসবো এবং সে আর আসে না। সেজন্য দেবতারা তাকে শাস্তি হিসেবে World Of Triangle এ লুপের মধ্যে ফেলে দেয় যেখানে সে একটা বড় পাথর কে পাহাড়ে গড়িয়ে উপরে নিতে থাকে এবং চূড়ায় পৌছানোর পর আবার পরে যায়। এভাবে লুপ চলতেই থাকে অনন্ত সময় পর্যন্ত ।
এবার মুভির দিকে চোখ ফিরানো যাক।মূল চরিত্র জেস্ কেন বারবার তার প্রতিরূপ সৃষ্টি করেছে? এর পিছনের কারণ সে তার ছেলেকে বাঁচাতে চেয়েছে ; বারবার ফিরে এসে।কিন্তু পারে না। এই একই ঘটনা বারবার হওয়া ও এর থেকে বাঁচার পথ হিসেবে জাহাজে থাকা মুখোশ পরা জেস্ তার অন্য জেসকে বলে, সে যেন সবাইকে মেরে ফেলে ।
মুভির শেষে একজন ট্যাক্সি চালককে দেখা যায়। যে কিনা জেস মারা যাবার পর, জেসের আত্মাকে নিতে আসে। সে সিসিফাসের সেই মৃত্যুর প্রতিনিধি (যাকে আজরাইল ভাবতে পারেন) । ঐ ট্যাক্সিচালক তাকে বলে যে, যতক্ষণ সে না আসবে; ততক্ষণ সে মিটার অন রাখবে। কিন্তু জেস সেটা ভঙ্গ করে গাড়ি থেকে নেমে যায়। ঠিক একই রকম ভাবে মৃত্যুকে ফাকি দেবার চেষ্টা করেছিলো Sisyphus । আর এর ফলেই Sisyphus এর মতই জেসকেও অনন্তকাল টাইম লুপে ফেলে শাস্তি দেয়া হয় । ফলে জেস এর জীবনে একই ঘটনা ঘটে অনন্ত বার....সে পরে যায় টাইম লুপে । আর সে নিজেই তার টাইম লুপকে জটিল করে তার অতৃপ্ত বাসনার লোভে । নিজেই নিজের লুপকে বাড়বার শুরু ও শেষ করে……আবার পুনরায় শুরু করে । আর বাড়বার একই ভুল করার এই অযৌক্তিক বাসনার প্রেরনা সৃষ্টি হয় তার অতৃপ্ত বাসনা থেকে ।
প্রতিটি লুপ শুরু হয় তাদের ট্রায়েঙ্গেল জাহাজ থেকে! শাস্তিটা যেহুতু জেস এর সেহুতে জেস ই লুপ টা সম্পর্কে বুঝতে পারে এবং আবার সেটা ভাঙ্গা স্বপ্নের মত ভুলেও যায়। সে মুভিতে একবার ঘুমিয়ে পরে । এই ঘুমের মাঝেই সে সব ভুলে যায়, কিন্তু ভাষা ভাষা মনে থাকে ।
মুল চরিত্র জেসের অতৃপ্ত বাসনাটি হলোঃ তার ছেলেকে বাচিয়ে রাখা, তার ছেলের মৃত্যুর জন্য সে নিজেকে দায়ী ভাবে । আর এই অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাওয়াই তার প্রধান কাজ । সে কখনই তার অপরাধবোধ থেকে মুক্তি লাভ করতে পারে না………..এভাবেই চলতে থাকে অনন্তকাল ।
.
.
.
.
আসলে মুভির অন্য সকল চরিত্রও মারা গিয়েছে কিন্তু তাদের কোন স্মৃতি নেই । আর জেস এর স্মৃতি কিন্তু ফুল ক্লিয়ার মনে নেই । অন্যেরাও লুপে আছে কিন্তু তারা কষ্টে নেই । কারন তাদের স্মৃতি নেই । স্মৃতি থাকায় সে বুঝতে পারছে সে ঝামেলায় আছে । অন্যেরা ঝামেলা ফিল করছে না । শাস্তি তাদের কারো জন্য নয় । শাস্তি শুধু জেসের জন্য । সে আগে মারা গিয়েছে নাকি তার বন্ধুরা আগে মারা গিয়েছে এইটা টাইম লুপের অংশ , কারন মুভিতে দেখবেন যে, জেস গাড়ি এক্সিডেন্ট করার আগেই অন্য আরেকজন জেস কিন্তু পূর্বের জেসকে মেরে ফেলে । মুভির শুরুতেই জেসের রুমে ঢুকে এক জেস অন্য জেসকে মেরে ফেলে । কোন জেস কাকে মেরেছে । এইটা একটা লুপ । এই লুপ তৈরি হচ্ছে তার স্মৃতি ভাসা ভাসা মনে থাকার কারনে । সে নিজেই জানে না সে কোন স্তরে কার দ্বারা কখন মারা গিয়েছে । তবে ইয়টের মাঝে ঘুম থেকে উঠে যে জেস , সেইখান থেকে মুভির শুরু ধরে নিলে অনেকটা সহজে মুভি মিলে যাবে ।
.
.
.
মুভির প্রথম জেসকে শেষের জেস হাতুরি দিয়ে খুন করার কারন হলো , সে আগের ভার্সনের চেয়ে নিজেকে বেটার ভাবে । আগের ভার্সনকে তাই সে মেরে ফেলে ।
জেস তার এই শাস্তির কারনই হলো তার নিয়ন্ত্রনহীন রাগ । তার রাগের কারনেই সে তার ছেলেকে মারধর করে, ধমক-টমক দেয় । সে এই রাগের কারনকেই , তার ছেলের মৃত্যুর কারন হিসাবে ভাবে । এটাই তার অপরাধবোধ । যার ফলে সে জানালা দিয়ে যখন আগের ভার্সনের রাগী জেসকে দেখে তখন সে , আগের ভার্সনের জেসকে মেরে ফেলে, এবং ভাবে যে, সে এখন রাগ কন্ট্রোল করতে পারা ভার্সনের একজন জেস । সে নিজেকে শুদ্ধভাবে । সে নিজেকে আগের ভার্সনের চেয়ে বেটার ভাবে । ফলে অগের ভার্সনকে মেরে সে তার স্থান দখল করে নেয় । সে ভাবে এখন থেকে সে ভাল মা হিসাবে থাকবে । সে তার সন্তানকে ভালবাসবে । এভাবেই সে তার অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পেতে চায় ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৮