কারো যন্ত্রনায় যদি পাশে না থাকো, ভালোবাসায়ও তার কাছে এসো না; বলতো সে।
কোনোটাই তো উপেক্ষা করার মত ছিলো না।
না যন্ত্রনা। না ভালোবাসা।
তবুও নিরন্তর অস্থিরতায় বাস করা কারো পক্ষেই সম্ভব না। তাই আমরা ঝাপসা করে দিচ্ছিলাম আমাদের স্মৃতি থেকে নক্ষত্র খুলতে থাকা রাতগুলোকে, বেদনাপ্রবণ ঝরবার অসহায়ত্বকে, ব্যস্ততার মোড়কে গন্তব্যদের, চোখ বন্ধ শেষে "নেই" হবার আনন্দটুকুকে।
দীর্ঘশত বছর রোডওভার বিল্ডিংগুলোর কারণে কোথাও, কখনও আকাশ দেখছি না, শুধু স্ক্রিনে, শুধু ছবিতে, শুধু কল্পনায়। প্রতিবেশি পশুপাখিরা কবে বিলীন হয়েছে খেয়ালে আসে নি, জায়গা করে নিয়েছে নতুন সরীসৃপের দল। এমন কী মাইনাস আটের অন্ধকার খুপড়িতে বাস করা আমি ওপরতলার স্যুয়ারেজ পাইপ ফেটে ধেয়ে আসা মলধারার দূর্গন্ধে গা করি না চূড়ান্ত অসহ্য হবার আগ পর্যন্ত।
আর অন্ধকার রাতে বের হয়ে যারা কোনোদিন ফিরে আসলো না, জানতেও চাই নি কেনো।
শীতল পাথরের মত আমরা মেনে নিয়েছি অন্ধকারে খাদ্য খাদকের সম্পর্ককে।
অবশ্য এ গ্রহেও সুখি মানুষ আছে যারা ভূমির মাইলখানেক ওপরে নতুন জীবনব্যবস্থা তৈরি করেছে, সত্যিকার অর্থেই উচুতলার বাসিন্দা। আমরা সেখানে পৌঁছাতে পারি কাজে অথবা চড়া দামে টিকেট কেটে ভ্রমণে।
তারা অবশ্য সেটাকে গ্রাউন্ড জিরো ধরছে।
সে হিসেবে আমি মাইনাস চারশত আটচল্লিশে থাকি। কাজ করি একটা ছোট বই আর অ্যন্টিকের দোকানে।
এবং এভাবেই জীবন কেটে যেত, যাচ্ছে, ভিড়ভাট্টার রাস্তায় জীবনের অর্ধেক অংশ। ইচ্ছা হয় টাকা জমিয়ে একটা বাসহোম কিনে নিই। তারপর দোকানের চাকরিটা ছেড়ে রাস্তায় গতিতে সময় কাটাই। ওগুলোর ভাড়া এত বেশি উচ্চমধ্যবিত্ত ছাড়া কেউ ওসবের পাশ দিয়ে যায় না।
তাই উঠতে হল একটা সস্তা বাসে। ধূসর শহরের নড়বড়ে বাসে যেখানে প্রতি মিনিটে যাত্রীরা কালো ধোঁয়ায় নাক চেপে ফোরস্ট্রোক ইন্জিনের রেস্ট আওয়ারের অপেক্ষা করে। একটা সিট খালি পাওয়ায় তাড়াহুড়োয় বসে পড়েই বুঝতে পারলাম ভুল হয়েছে। সিটের কোণায় আগের যাত্রী বমি করে গেছে, যা থেকে বিকট দূর্গন্ধ আসছে।
ঘরে গেলে টেডি আমাকে ছুঁয়েও দেখবে না, ভাবতেই মনে পড়ল বেশ ক'দিন হল আমাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। উভয়ের আর্থিক সমস্যার কারণে এখনো একই বাসায় থাকি। এমন কী একই কামরার একই বিছানায়। যদিও আমরা পরষ্পরের দিকে একবারও প্রেমের দৃষ্টিতে তাকাই না। কথা বলি না। সে আমাকে প্রয়োজনের সময় তার কম্পুটারটা ব্যবহার করতে দেয় না। তাই টেডি ঘুমিয়ে গেলেই কেবল তার কম্পুটার দিয়ে আমি পর্ন দেখতে পারি, ক্যাম ব্যবহার করতে পারি। আর দেখি নিশ্চিন্তে ঘুমানো একটা পরিচিত মুখ, যার অসম্মতিতে আমি যাকে কখনও ছুঁয়েও দেখি নি।
তারপরও সে আমাকে ছেড়ে দিলো। চূড়ান্তভাবে।
সে মানসিকভাবে অনেকবারই বিকারগ্রস্থ হয়েছে আমি কখনও চলে যেতে বলি নি। কিন্তু এবার অনেকদিন ধরেই তাকে অস্থির দেখাচ্ছিলো। কী সমস্যা জানতে চাইলে বারবার একই উত্তর, কিছু হয় নাই তো!
ছুটির সকালে আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম চারশ প্লাসের পার্কে যাব, এমন সময় টেডি বলল,
-আমি চলে যাচ্ছি।
-কোথায়?
-উত্তর গ্রহে। তারা আমার আবেদন গ্রহণ করেছে। অন্য দিকে তাকিয়ে বলল, তোমাকে পরে নিয়ে যেতে পারব।
জানি না সে মুহূর্তে কেনো তার ভালো খবরটায় মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো। হয়ত ভবঘুরে আর্তিস্তকে এত ভালো অবস্থানে দেখতে আমার ব্যক্তিত্ব আঘাত পাচ্ছিলো।
-আমি কি বলেছি আমি যেতে চাই???
-তুমি আমার সাথে একটা ভালো জীবন চাও না?
-সেটা এখানে চাই।
-না, তুমি সেটা অন্য গ্রহেই চাও, কিন্তু তোমার মাধ্যমে! আমার সাফল্য তোমার আসলে সহ্য হচ্ছে না।
-হাস্যকর কথা।
অস্বীকার করলেও আদতে সে সত্যি বলছিলো।
তুমি আমাকে নিতে চাও সেখানেও আমার টাকায় ফুর্তি করে বেড়াবে বলে, আমি বলি।
আর তারাই বা তোমাকে নিচ্ছে কেনো, তুমি কি মনে করো পেভমেন্টে দাঁড়িয়ে সস্তা দামে ছবি বিক্রি করে গান গেয়ে ভিক্ষা করে তুমি মহান শিল্পী হয়ে গেছ?? নেশাখোর বদ মেয়েছেলে কোথাকার। যার গাঁজার দাম পর্যন্ত আমাকে দিতে হয় নিজের বেতন থেকে।
তাকে বিধ্বস্ত দেখায়। সেই তৃপ্তিতে আমি বলি,
নিজের চেহারা দেখ আয়নায়?? তুমি এত ফালতু যে একটা বেশ্যা হবারও যোগ্য না। তারা সর্বোচ্চ তোমার মাংস আর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করতে আগ্রহী হতে পারে, আর কিছু না।
এবং আমাদের প্রেম শেষ হলো।
সেই সাথে এতক্ষণের দূর্গন্ধময় বাসযাত্রা।
বা পাশের একটা জটলায় হইচই দেখে পাশ কাটিয়ে যেতে ধাক্কা খেলাম।
-হেই
-হেই, বখশিশ ভাইয়ের মেয়ে রিশ?
-হুম, কোথায় যান?
-এইতো বাসায়।
-ও! বাবা আপনাকে খুঁজছিলো।
-তাহলে তার সাথেই আগে দেখা করে আসি।
মেয়েটা দেখতে অনেক বদলে গেছে। আগে এত ব্যক্তিত্বওলা ছিলো না তো!
-কী করছ ইদানিং?
-মাত্র ফার্মারশিপ পেয়ে কাজ শুরু করলাম।
-ওপরে?
-হ্যা।
-দারুণ না? কিন্তু পরিশ্রমের কাজ।
এরপর চুপচাপ বাকি রাস্তা।
করিডোরে গিয়ে রিশ দরজার তালা খুলতে জিজ্ঞেস করলাম, বখশিশ ভাই বাসায় নেই?
এর কোনো উত্তর না দিয়ে সে যা করল তা হল আমার টিশার্ট টেনে ঘরের দরজায় জাপটে একটা হিংস্র চুম্বন।
এবং এরপর রিশ যা করত শুরু করল আমি অন্তত একটা পরিচিত বড় ভাইয়ের মেয়ের সাথে করার সাহস কখনও করতাম না।
জামা খুলতে খুলতে সে বলল, এত ভয় পাচ্ছেন ক্যানো! কেই আসবে না তো!
উদ্ধত প্রাণময় হাসি, এই মাইনাস চার ফ্ল্যাটের আধো অন্ধকার, অর্ধপরিচিত তরুণীর প্রচন্ড কামোদ্দীপক তামাটে দেহ তার নিঃশ্বাসের ঝাপটায় বুঝতে পারলাম গত দেড় বছরে আমার শীতল প্রেমিকাকে দিয়ে যা হয় নাই একে দিয়ে তা হবে। তার পূর্ণ নগ্ন নরম স্তনের স্পর্শে আমার অঙ্গব্যাপী আসন্ন ভ্রমণ প্রস্তুতি শুরু হলো।
এবং দিন কেটে যাচ্ছে উড়ে উড়ে।
বখশিশ ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার ফ্ল্যাটে কাজ শেষে ফিরছি "রি"-এর কাছে।
এর জন্য আমি নূন্যতম অপরাধও বোধ করছি না। খুব সম্ভবত আমি এর প্রেমে পড়েছি।
সঙ্গম বিরতিতে সে গল্প করে তার মুক্ত জীবনের । আকাশের কাছাকাছি ক্ষেতে সারাদিন কাজ করার গল্প। কোথাও পালিয়ে যাবার আকাঙ্ক্ষার স্বপ্ন না। এমন কী আমিও ভাবি এখন কৃষি জীবনে যাবার কথা।
এতে বেতনও অনেক বেশি। সে তো বলে দুবছর পর সে রোডওভার বিল্ডিঙে ভাড়া নিতে পারবে।
একসময় আমি বলি, আমাকেই তোমার আনতে ইচ্ছা করল কেনো?
-সম্ভবত আমারা পরিচিতদের মধ্যে আপনিই সবচে উত্তেজক।
আমরা হাসি।
এরকম চমৎকার মুহূর্ত ছেড়ে ফিরতে হল তার পরিবারের ডেরাতে ফেরায়।
ফেরার পথে মনে পড়ল টেডির কথা। তার চলে যাবার কথা।
কে জানে এ কদিনে হয়ত সে চলেও গেছে।
তার মলিন মুখটা মনে পড়তে একটু খারাপই লাগছে। কী দরকার ছিলো সেদিন ওই খারাপ কথাগুলো মেয়েটাকে বলার। সে তো আমাকে নিয়েই যেতে চেয়েছিলো! অবশ্য সেও বাজে কথা বলেছে। তারপরও আক্ষেপ থেকেই যায়।
ঘরে ঢুকে দেখি সে নেই। ফ্রিজারে কোনো খাবারও নেই।
বদ মেয়েছেলেটা সব খাবার শেষ করে গেছে, বলতেই মনে পড়ে আমি ফ্রিজারে কোনো খাবারই রেখে যাই নি।
অগোছালো হিসাব মাথায় নিয়ে অনেক দিন পর একলা ঘুমাচ্ছি।
রি!
মেয়েটা এত সুন্দর! এভাবে জীবনে আসবে কখনও ভাবি নি।
চোখে ভাসে তার একটা একটা করে বোতাম খোলার দৃশ্য।
সে অসাধারণ!
ওপর কিংবা নিচে যে কোনো মুহূর্তেই খাঁটি চাষীর মত সে চাষাবাদ করতে জানে।
যাক দেখা হয়ে গেল শেষ পর্যন্ত, টেডির গলা।
চোখ মেলতে দেখি চুল ছেঁটে হাতে কটা ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে।
এমনিতেই রোগা, আজ আরও বেশি শীর্ণ লাগছে।
রাগ ঝেড়ে জিজ্ঞেস করলাম, অসুখ নাকি?
-হুম? না। তিন চারদিন ধরে ছিলো। তবে আজকে ভালো। দেখছো না শেষ দিনের পেভগার্ডের চাকরি করে আসলাম। বলে সে হাসল।
এখন কষ্ট পাচ্ছি। সে এ ক'দিন অসুখে সে কী খেল, কেমন ছিলো একবারও খবর নেই নি, একটা পশুর মত সঙ্গমসুখে ভেসে যাচ্ছিলাম!
অবশ্য আমি এত ভালো সম্পর্কও চাচ্ছিলাম না তার সাথে, রিশুর কথা মনে পড়ায়। তাই চুপ করে ছিলাম।
একসময় সে-ই বলল,
-হেই... চলে যাচ্ছি। আজকে রাতটা তো অন্তত ভালো কাটাতে পারি?
টেডির অনুরোধে বের হচ্ছি দুজন ধূসর শহরের ধূসর সন্ধ্যায়। তাকে এত আনন্দিত কখনও দেখি নি আগে। বিভিন্ন জায়গায় সে আমাকে হাত ধরে টেনে দেখাতে লাগল, এমন কি আমার দোকানও। তার বা হাতের গোল চিহ্ণ দেখে অনেকদিন পর আমাদের প্রথম সাক্ষাতের কথা মনে পড়ে।
খুব কম মানুষ বা হাতের চিহ্ণটা নেয় এখানে। যদিও এটা থাকলে অন্য লাইনে সবসময় দাঁড়ানো যায়, কিছু নির্দিষ্ট এলাকার পাস পাওয়া যায় তার পরও এটা কখনও কখনও ভয়ংকর। সংখ্যাগুরু ডান হাতে চিহ্ণযুক্ত সম্প্রদায় নানান সময় হামলা করে এদেরকে।
কাউকে কাউকে ফেরারির মত ঘুরতে হচ্ছে। টেডির সাথেও এভাবেই একদিন পরিচয়।
সে বলত বারবার, সবাই মাস্তার সবাই আর্তিস্ত।
আমি না বুঝেই বলতাম, একদম সত্য বলেছ।
সে তার আঁকা কিছু অদ্ভূত ছবি দেখাত। গাঢ় অন্ধকারে একটা অন্ধকার মানুষের ছায়া, সে দৌঁড়াচ্ছে হাতে একটা লাল রক্তাক্ত চাকা। একটা কাটা দিয়ে মানুষটার পায়ের সাথে আটকানো যেখান থেকে রক্ত ঝরছে।
বস্তুটা কী জিজ্ঞেস করায় সে বলত, ভেবে বের করো।
আজকে আরেকটা তৈলচিত্র নিয়ে বের হয়েছে, সম্ভবত আমাকে দেয়ার জন্য।
মোড়ক নেই তাই দেখা যাচ্ছে, কিছু উড়ন্ত মানুষ উড়ে উড়ে রঙিন বাক্স নিয়ে যাচ্ছে মাঝে সাদা অংশ নিচে গোল গোল রূপোলি শিকল আর পাথর।
তার যে কত পাগলামি।
হাঁটতে হাঁটতে আমরা প্রধান বিল্ডিঙের লিফটের সামনে কেনো আসলাম এটা সে-ই জানে!
প্রশ্ন চোখে তাকাতে সে হাসল।
পুরানো হাসি। এটা ছিলো ভালো বাসবার হাসি।
অসহায় লাগছে।
অথচ তাকে কী ভালোই না বাসতাম আমি!
কোনো ভোর যায় নি তার হাতে চুম্বন ছাড়া বিছানা ছেড়েছিলাম। তার প্রতিটা অদ্ভূত কথা শুনে জবাব দিয়েছি। মানসিক বিকারের দিনগুলোতে
যখন সে নিজেকে অসময়ের তারকা ভেবে দারিদ্র্য মেনে নিতে পারত না কতটা স্নেহে তাকে জড়িয়ে সন্ধ্যায় হাঁটতাম। এমন কি নিজের খাবারের খরচ কমিয়ে তারটা জোগাড় করতাম।
প্রতিদিন তার কাপড় ড্রয়ার ব্যাগ ঘেটে ঘুমের ওষুধ বদলে সাদা বড়ি ভরে রাখা.. কোনোই কি প্রেম ছিলো না?
লিফট একদম চারশত চুয়াল্লিশ তলার ওপর ছাদে থামে।
সারপ্রাইজড? সে উদ্বিগ্ন স্বরে জানতে চায়।
-এত খরচ করার কী দরকার ছিলো?
-তুমি সবসময় আমার জন্য করেছ।
-কিন্তু আমাদেরকে তো একটু পরই নামিয়ে দেবে।
-দেবে না। সারারাতের টিকেট কাটা হয়েছে।
কী বলব খুঁজে পেলাম না।
সোলার ডিস্কের পাশে একটু উষ্ণ ঘাসে শুয়ে আছি।
ওপরে গণনার অতীত উজ্বল নীলাভ তারারা ভেসে আছে। ধূসর মেঘ এত কাছ থেকে কখনও দেখি নি।
সে বলল, আমি সবসময়ই খুউব ফালতু ছিলাম, অমানবিক ছিলাম তারপরও আমার সাথে ছিলে কেন?
এসবের উত্তর কি কারো জানা থাকে?
আরো বলে, তোমাকে বলা হয় নি আমি মানুষ খেয়েছিলাম অন্ধকারে বেশ কয়বার।
আমি শিউরে উঠি।
সে বলে, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি কুরিল, আমি তোমাকে এভাবে ফেলে রেখে যেতে পারি না।
শুনে আমি ভয় পাই। আমার শীর্ণ প্রেমিকাকে অচেনা লাগে।
সে আমাকে খাবার সাধে, আমি সাথে সাথে গিলে ফেলি।
তামাক আর নেশা সাধে, আমি বিনাবাক্যে টেনে নিই।
একসময় আমার প্রচন্ড নেশায় তন্দ্রা হয়।
কখনও দেখি আমার বুকে শুয়ে থাকা তাকে, যার চোখের পানিতে আমার ঠান্ডা বোধ হয়।
কখনও সে উঠে ক্যানভাসটায় কিছু আঁকে, চোখ মোছে।
এসময় আমার মনে পড়ে টানেল দূর্ঘটনাগুলোর কথা। দক্ষিণ গ্রহ উত্তরের নাম করে আর্তিস্তদের তার্কিকদের ডেকে নিয়ে মেরে ফেলছে। এসব কি বোকাটা জানে?
তন্দ্রায় আমি তাকে ব্যাগ ঘেঁটে ওষুধ বের করতে দেখি। সে বলেছিলো তার অসুখ। আরও বলেছিলো আমাকে সে এভাবে ফেলে রেখে যেতে পারে না।
গতকয়দিন তার ব্যাগ থেকে আমি ঘুমের বড়ি সরাতে পারি নি।
আমার শরীর এখন আলস্যে ভাসছে।
তাকে কাল যেতেই হবে। গ্রহান্তরের ডাক একবার আসলে না গিয়ে বাঁচা যায় না। সে জানে। আমাকে ভালো বেসে সে ফেলেও যেতে পারে না, সে জানে।
আজ রাতে নীল নক্ষত্রের নিচে যদি এই গল্পের শেষ , তবে শেষ হোক।
আমি পতনের দিনে তার যন্ত্রনাকে ভালোবাসতে পারি নি,
আজ ভালো বাসবার যাত্রায় যন্ত্রনা তো দিতে পারি না!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১১ রাত ১১:৪৩