somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মনিরপেক্ষতা: সংবিধানের বিলুপ্ত ১২নং অনুচ্ছেদ এবং বিকৃত ব্যাখ্যা

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ছোটবেলা থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুনে আসছি। কিন্তু কখনোই বিষয়টি ভাল করে বুঝতে পারতাম না। এখন আমি আইনের ছাত্র বিধায় আমাদের বাহাত্তরের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার অনুচ্ছেদটি পড়ি। এটি পড়ার পরে আমার কাছে মনে হয়েছে এত চমৎকার একটি অসাম্প্রদায়িক ধারণার কত বিকৃত ব্যাখ্যাই না দেয়া হয়েছে! কেউ এটির সমালোচনা করছেন বুঝে, আবার কেউ করছেন না বুঝেই। অনেকে আবার ধর্মনিরপেক্ষতাকে ধর্মহীনতা হিশেবে সমালোচনা করেন। ১৯৭২ সালের বাংলাদেশের মূল সংবিধানকে বলা হয় বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং আদর্শ সংবিধান। এ সংবিধানে মূলনীতি হিশেবে গ্রহণ করা হয় গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে। এগুলোই ছিল আমাদের মুক্তিসংগ্রামের অনুপ্রেরণা।

অথচ সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এসেই সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করেন। আমাদের মূলনীতিসমূহকে, যেগুলো বাংলাদেশ সৃষ্টির পিছনে আদর্শ হিশেবে কাজ করেছে, পরিবর্তন করে দেন। বাতিল করে দেন ধর্মনিরপেক্ষতা সম্বলিত ১২নং অনুচ্ছেদকে। আমি নিচে বাতিলকৃত ১২ অনুচ্ছেদটি তুলে দিচ্ছি:

"ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা। ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নের জন্য---
(ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা,
(খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদাদান,
(গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহার,
(ঘ) কোন বিশেষ ধর্মপালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাঁহার উপর নিপীড়ন বিলোপ করা হইবে।"


এই অনুচ্ছেদটি হল ধর্মনিরপেক্ষতার পূর্ণাঙ্গ সংজ্ঞা। এর চেয়ে চমৎকার অসাম্প্রদায়িক বিধান আর কি হতে পারে! অথচ এটিকে বাতিল করে দিলেন জিয়াউর রহমান। প্রতিনিয়ত এটিকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। এই বিধানটি না-কি ধর্ম বিরোধী! অথচ এই বিধানটি মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি একটি চমৎকার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার রক্ষাকবচ ছিল।

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। অনেকে মনে করেন, আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা নিয়েছি ভারতের সংবিধান থেকে। অথচ সত্য এই যে, বাংলাদেশের সংবিধান বিধিবদ্ধ হবার চার বছর পরে ভারত রাষ্ট্রের সংবিধানে 'ধর্মনিরপেক্ষতা' রাষ্ট্র পরিচালনার একটি নীতি হিশেবে সংযোজন করে।

ভবিষ্যতে আরেকটি বিস্তারিত পোস্ট দেয়ার ইচ্ছা রইল।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:২০
২৫টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×