somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডিভি -২০১১ বিজয়ী-রি পোস্ট

০৩ রা আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার বন্ধু ধ্রুব । সেই ছোটবেলা থেকে আমাদের বন্ধুত্ব। সহজ মানুষ। একটা অফিসে চাকরী করে বেতন সর্বসাকুল্যে ছয় হাজার , ধ্রুব’র বউ একটা স্কুলে পড়ান । সেখান থেকে খুব সামান্য বেতন পান,স্বামী-স্ত্রী মিলে যা উপার্জন করেন তাতে শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে স্রেফ একটা বাচ্চার স্কুলের খরচ, টিউশন ফি দিয়ে আর কিছুই থাকেনা। এজন্য অসুখ করলেও চাকরি কামাই করতে পারেন না । যে অফিসে ধ্রুব চাকরি করে সে অফিসে চাকরি কামাই করলেই বেতন কাটা হয়। অবশ্য মালিকের মর্জি’র উপর নিভর্রশীল । নতূন একটা টিভি কিনবেন সেই খরচটা বাচানোর জন্য পূরোনো একটা মনিটর কিনে আরেরকজনের কাছ থেকে একটা টিভি কার্ড দিয়ে আপাতত বাচ্চার বায়না মিটিয়েছে । মেয়েটা কতবার বায়না ধরেছে ককসবাজার বেড়াতে যাবে আজো বাচ্চাটার ইচেছ টা পূরণ করতে পারেনি এটা আমাদের ধ্রুব’র কাছে বেদণাদায়ক । মেয়েটার বয়স দশ এগারো হলো আরেকটা সন্তান নেবে নেবে করে নেয়া হয়নি শুধু মাত্র অভাবের জন্য। শুনেছি ধ্রুব, বাবা হচেছ। সামান্য কিছু টাকা আছে বাচ্চার ডেলিভারির সময় লাগবে বলে সযত্নে রেখে দিয়েছে । আগে প্রায় আমাদের কথা হতো , আনেক কথা বলতো । সুখের কথা , আশার কথা , হতাশার কথা , স্বপ্নের কথা । যাবার সময় বলতো “দোস্ত সারাদিন তো চুপচাপই থাকি তোকে পেলেই কথা বলতে ইচে্ছ করে কিছু মনে করিস না ।“ আমি ছিলাম ধ্রুব’র মনোযোগি শ্রোতা । ধ্রুব,র আগের চাকরি টাতে বেতন এর চেয়েও কম ছিলো কিনতু কাজের পরিবেশ ছিলো । তিনটা পযর্ন্ত অফিস ছিলো। অফিসের পরে বিকেল থেকে একটা মোবাইল শপে বসে মাসের শেষে আরো কিছু টাকা পেতো, মোটামুটি দুটো দিয়ে আট হাজার টাকা হতো । বর্তমান চাকরি’টা করে অন্য কিছু করা সম্ভব হয়না। কাজ থাকুক আর নাই থাকুক বসে থাকতে হবে মারিকের মর্জি মাফিক । আগের মালিক ব্যবসা বন্ধ করে ফ্যামিলি সহ বিদেশ চলে যাওয়ার পর তিন চার মাস বেকার থাকার পর আমিই আমার এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে এই বর্তমাণ অফিসে চাকরি টা জোগার করে দিই । কিনতু এখানে মালিকের ব্যবহার নাকি খারাপ, তুই তোকারি করে।এতে আমাদের ধ্রুব,র খুব কষ্ট হয় । সংসার বড় হচেছ , অন্য একটা চাকরিও পাওয়া যাচেছ না । প্রতিদিন ধ্রুব,র কষ্ট বাড়তে থাকে। ইদানিং আমার কাছে ধ্রুর,র আসাটাও কমে গেছে । তিনচার দিন পরপর আসলেও চুপচাপ বসে থাকে, পরাজিত মানুষের মতো। ঐ দিন জিজ্ঞাস কররাম _কিরে এত চুপচাপ যে কিছু হয়েছে ? অনেকক্ষন চুপচাপ থাকার পর বললো ,নতূন মানুষ আসছে বাচ্চাদের দুধের যা দাম , এক একবার ডাক্তারের কাছে গেলেই মিনিমাম পাচঁশ টাকা, টেষ্ট দিলে আরো বেশি , বুঝতে পারছি না কি করবো , কি ভাবে চলবো । অন্যকরম এক হতাশা ধ্রুব,র কন্ঠে । সে ই ধ্রুব চার পাচদিন আগে এসে খাম একটা ধরিয়ে দিলো, খুলে দেখলাম ধ্রুব,র বউ’র নামে কেনটাকি থেকে ফার্স্ট লেটার এসেছে । আমাকে বললো দোস্ত কি করবো এখন ? আমি বললাম কত হাজার লক্ষ লক্ষ ফরমের মধ্যে লটারি করে তোরা এটা পেয়েছিস কাজেই চেষ্টা কর। দোস্ত টাকা খরচ মানুষের যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেছে । বিভিন্ন লোকজন ফোন করে তাদের দিয়ে প্রসেসিং করার জন্য বিরক্ত করছে। পিয়ন তোর ভাবির কাছ থেকে তিনশ টাকা বকশিশ আদায় করেছে।‘ আমার নিজেরও কখনো এসব ব্যপারে প্রসেসিং এর কোন ধারনা ছিলো না । তবুও এই মানুষ’টার কথা চিন্তা করে ওর অনুরোধে বিভিন্ন সোর্স এর মাধ্যমে জেনে এ-বিষয়ে তিনজন বিশেষজ্ঞ দাবিদারের কাছে ধ্রুবকে নিয়ে যাই । তারা প্রত্যেকেই ভিসা হবে -এ মর্মে তাদের সাথে চুক্তি নামার কথা বলে ।আগে কাজ পরে টাকা । ভিসা হাতে পেলে টাকা দিতে হবে ।অনাগত সন্তান সহ ১০ লক্ষ টাকা । টিকেট এর টাকা ছাড়া । আর না হলে একটাকাও দিতে হবে না । আর এরা এত কঠিন করে ব্যাপারটা উপস্হাপন করছে যে ফরম পূরনের একটা শব্দ ভুল হলেই ভিসা বাতিল । ভিসার টাকা পুরোপুরি বাজেয়াপ্ত । কাজেই নিজে নিজে এই রিক্স নেয়া যাবেনা । সার্টিফিকেটে সামান্য ভুল থাকলে , বিয়ের ছবি না থাকলে, বাচচার সাথে বাবা মায়ের বিভিন্ন বয়সের ছবি না থাকলে ,ভিসা না পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে । বেচারা তো মহা হতাশ। এমনিতেই ভালোবেসে বিয়ে করেছে অনুষ্ঠান করা হয়নি, যা দু্একটা ছবি তোলা হয়েছিলো ৯৬ এর বন্যায় তার সব কটাই নষ্ঠ হয়ে গেছে নেগিটিভ সহ। আবার ফরমের কিছু পয়েনট পরিষ্কার বোঝাও যাচ্ছে না । নিজে নিজে চেষ্টা করলে ভিসার আগ পর্যন্ত ৩ লাখ টাকা খরচ হতে পারে কোন রকমে এই টাকাটা পৈত্রিক সমপত্তি অন্য ফ্যামেলি র সদস্যদের দেয়ার বিনিময়ে কিছু টাকা জোগাড় করলেও কোন একটা ভুলের কারনে যদি টাকা গুরো নষ্ট হয় তখন ? এসব ভেবে ভেবে আমার বন্ধু ধ্রুব আরো হতাশ আরো মিয়্রমান । প্রায় কিছুদিন হলো এটা নিয়ে আর চুপচাপ । জিজ্ঞেস কররে একটাই উত্তর “ ধূর-কি হবে “।আমার মনে হলো আপনাদের সাথে শেয়ার করি । আপনাদের মধ্যে এমন কি কেউ আছেন যে যিনি এব্যাপারে স্বচ্ছ ধারনা রাখেন । আপনাদের পরামর্শে ধ্রুব,র যদি একটু উপকার হয় হউক ।


কেউ কি জানেন -ফার্স্ট লেটার পূরন করার জন্য কোথায় সাহায্য পাওয়া যাবে? ভালো একজন এডভাইজারের নাম দিন। এখনো সময় আছে কিনা পাঠানোর?
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×