মনে হইতেছে পুরো দেশটাতে বুঝিবা গ্রহণ লাগিয়াছে। সকলে গ্রহণ করিতে তত্পর হইয়া উঠিতেছে। এক্খনে এইটাই নিয়ম হইয়া দাঁড়াইয়াছে। অচিরেই হয়তোবা সংসদে আইন পাশ করাইয়া গ্রহণ বিষয়খানি পাকাপাকিভাবে আমলাতান্ত্রিক অধিকার করিয়া লওয়া হইবে। আর আমরা যাহারা সাধারণ আম জনতা তাহারা আমের বিচি চুষিতে চুষিতে প্রবলভাবে মাথা দুলাইয়া, গ্রীবা বাঁকাইয়া ইহার প্রতিবাদে নিমিত্ত হইব- প্রেস ক্লাবের সম্মুখে ব্যানার, মৌন প্রতিবাদ; শহীদ মিনারে আমরণ অনশন, সভা-সমাবেশ, এবং ফলশ্রুতিতে পত্র পত্রিকায় অল্প বিস্তর লেখালেখিও হইবে বৈকি। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই বলিতে পারা যায় যে, তাহাতে খবরের কাগজওয়ালাদের পৃষ্ঠা ভরাট (পেইজ মেকআপ) হওয়া ভিন্ন অন্য কোন গূঢ় লাভ হইবে না। অনতিকাল পরেই আমরা তথাকথিত আমলা ভাইদের হাতে পানি (লক্ষীপাণি) গ্রহণ করিয়া অনশন ভাঙ্গিয়া গা ঝাড়া দিয়া উঠিয়া বসিব এবং মনে মনে ভাবিয়া লইব- আমার গায়ে তো ধুলিকাদা লাগিবার আশংকা নাই। তবে আমি কেন যাচিয়া পরিয়া ধুলায় গড়াগড়ি যাই। আমার কি ঠেকা পরিয়াছে? যাহার বিবাহ তাহার দেখা নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। এই রকমেই ডিফেন্স মেকানিজমের অনেকগুলি অকাট্য যুক্তি দিয়া মনকে প্রবোধ দিয়া একেবারে জনমের মত ঠান্ডা হইয়া যাইব এবং পরবর্তীতে অনন্যোপায় হইয়া ত্যাগ স্বীকার করিয়া লইয়া চাহিবামাত্র ত্যাগ করিতে বাধ্য থাকিব। আর বেচারা 'আলামীন' যে কিনা প্রত্যহ হাঁকিয়া হাঁকিয়া ডাস্টবিন ভরিয়া আমাদিগের উচ্ছিষ্ট ময়লা গ্রহণ করিয়া জীবিকা নির্বাহ করিয়া থাকে, ময়লা ঘাঁটিয়া অপবিত্র হইবার পাপে এই রমজানেও মসজিদের পাক পবিত্র অঙ্গনে হয়ত অনেকে তাহাকে গ্রহণ করিতে পারিবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১০ বিকাল ৫:০৬