দৃশ্যঃ ১
২৬ মার্চ ১৯৭১, সকাল।
ফেসবুকে রিপনের স্ট্যাটাস- ‘গত রাতে পাক বাহিনী আমাদের হলে আক্রমণ করেছিল। কয়েকজন ছেলেকে বলৎকার করে হত্যা করা হয়েছে। ফিলিং স্যাড’
কমেন্টঃ
মিথুন- কোন কোন স্যার মরছে রে?
রিপন- জানিনা। তবে রাশেদ স্যারের বাসায় নাকি হামলা হয়েছে।
মিথুন- ঠিক হইছে। মরলেই ভাল হত!
নেসার- বাদ দে তো। তোদের কমেন্ট স্যাররা দেখলে ঝামেলা হইব।
দৃশ্যঃ ২
পরের দিন ক্যাম্পাসে এসে রিপনের স্ট্যাটাস নিয়ে বন্ধুমহলে কথোপকথন চলছে...
অর্ণব- শালারা(পাক বাহিনী) দেখি বহু মানুষ মাইরা ফেলছে।
মিথুন- হুম, কাজটা ভাল করে নাই রে...
অর্ণব- এইভাবে এত মানুষ কেউ মারে? কোন কথা হইল?
রাকিব- ওই চুপ, স্যার আসতেছে।
মিথুন- কিরে নকিব তোর মন খারাপ ক্যান?
নকিব- আরে বেটা, আমার এক খদ্দেরকে মাইরা ফেলছে শালারা(পাক বাহিনী)।
অর্ণব- তাইলেতো তোর ইনকাম কইমা গেল
রিপন- এক কাজ করি, চল আমরা প্রতিশোধ নিই।
রাকিবঃ (হো হো করে হেসে) পাকি বাহিনীর লগে লাগার দরকার নাই। তোগো পু** মাইরা দিব।
নেসারঃ ওই বাদ দে তো এইসব।
দৃশ্যঃ ৩
বিকেলে টি.এস.সি তে বসে কার্ড খেলছে মিথুন, রিপন, অর্ণব, নেসার আর রাকিব।
অর্ণব- নকিব একটা বলদ। ক্লাস শেষ হইলেই ঘুম! এখন আবার গেছে ঘুমাইতে।
মিথুন- আব্দুল্লা কইরে?
রাকিব- কেন, ওরে দিয়া কি করবি?
মিথুন- আমরা না যুদ্ধে যামু? প্ল্যান করতে হইব না?
অর্ণব- কবে যাবি? আমিও যামু কিন্তু।
রাকিব- তোরা যা। যুদ্ধ কইরা মর। আমি এর মধ্যে নাইকা...
অর্ণব- ওই শালা, তুই নাই মানে? আমগো সবাইরি যুদ্ধে যাওয়া উচিৎ।
নেসার- বাদ দে তো। এইসব যুদ্ধ কইরা কি আর হইব?
শেষপর্যন্ত যুদ্ধে যাবার একটা প্ল্যান করা হল। পরের দিন অর্ণব, মিথুন, রিপন আর নেসার(যদি পারে) গিয়ে মালিবাগের সেনা ক্যাম্পের দুইএকটা পাকি সৈন্য মেরে আসবে।
দৃশ্যঃ ৪
পরের দিন সকালে মিথুন অর্ণব কে কল দিচ্ছে...
অর্ণব- হ্যালো।
মিথুন- কিরে ঘুম থেইকা উঠছস?
অর্ণব- হুম, বল।
মিথুন- যাবি না?
অর্ণব- কই যামু?
মিথুন- যুদ্ধে।
অর্ণব- না রে দোস্ত। কাল রাইতে ঘুম হয় নাই। এখন ঘুমামু।
মিথুন- আচ্ছা ঠিক আছে।
পরে রিপন আর নেসারকে কল দিলে তারা যুদ্ধে যাবার সম্মতি দিল।
দৃশ্যঃ ৫
এফ. রহমান হলের সামনে নেসার আর মিথুন অপেক্ষা করছে। রিপন রেডি হয়ে হল থেকে আসছে।
নেসার- আব্দুল্লাকে একটু কল দিয়া দেখি ওই যাইবো নাকি?
মিথুন- ওই যে বিজি পারসন, মনে হয় যাইবো না।
নেসার- তাও দেখি বইল্যা।
(আব্দুল্লাকে নেসার কল দিল)
আব্দুল্লা- হ্যালো দোস্ত।
নেসার- কি করিস রে তুই?
আব্দুল্লা- হলে। কিছুই করি নয়া।
নেসার- আমরা যুদ্ধে যাইতেছি, তুই যাবি?
আব্দুল্লা- হ যামু, আমি আসতেছি, তোরা ওয়েট কর।
তিনটা রাইফেল নিয়ে চলে এলো আবুদুল্লা। তারপর রিকসায়(!) করে চারজন(মিথুন, নেসার, রিপন আর আব্দুল্লা) গেল মালিবাগে যুদ্ধ করতে।
দৃশ্যঃ ৬
আড়াল থেকে গেরিলা কায়দায় রাইফেল দিয়ে দুইটা গুলি করল আব্দুল্লা। একটা পাকি সৈন্য মারা গেল।
আব্দুল্লা- দেখলি এইভাবে মারতে হয় ওদের(!)
রিপন- হুম, বুঝছি।
আব্দুল্লা- তাইলে তোরা এখন যুদ্ধ করতে থাক। আমার কোচিং এ ক্লাস আছে, আমি গেলাম।
তারপর বাকি যুদ্ধ করতে থাকল রিপন, মিথুন আর নেসার।