somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানচিত্রের শেষপ্রান্তটুকু

০৫ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা সীমানাহীন মেঘকালো রঙের প্রান্তরে, একা , খুব একা কোনো নির্জন দ্বীপ আঁকলাম। না, দ্বীপ না। বরং একটা মানচিত্র আঁকি। মানচিত্রের মুখ বরাবর আরেক প্রান্তে আঁকি একটা গর্ত। এই গর্তকে অনেকভাবেই কল্পনা করা যেতে পারে। কেউ হয়ত একে বলতে পারে কোনো গুহা কিংবা খাঁদ অথবা আগ্নেয়গিরির কৃষ্ণ জ্বালামুখ। মানচিত্রের অবয়বে হয়ত রঙের আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা যেতে পারে বালিকার আর্ত চিৎকার, ব্যর্থ প্রেমের ঈষৎ ঝাপসা বিষাদনূপুর কিংবা আরও কয়েক প্রস্থ রং চড়ালে হয়ত মনে হতে পারে মোহন ফাঁদে আটকা পড়া একটা খাঁচাসমেত পাখি দোল খাচ্ছে। মুখোমুখি থাকা গর্তটার একপাশে এঁকে দিলাম বিচিত্র ভঙ্গীতে দাঁড়িয়ে দু’ হাত প্রসারিত করে রাখা একটা ঘুমপুতুল।


ধীরে ধীরে মানচিত্রে গুপ্ত হত্যার স্কেচ বাড়ে, লুণ্ঠন আসে, যোগ হয় করোটির সংখ্যা, মন্দিরের ঘণ্টা। সে সময় কিছু মেঘ উড়ে উড়ে গেলে মানচিত্রটার কিছু অংশ ভিজে যায়। এসবে অবশ্য ঘুমপুতুলের ঘুম ভাঙ্গে না। হয়ত মিষ্টভাষী কোনো জাদুকরের মায়া-অভিশাপের গোপন চুম্বনে পুতুলটা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে মেঘ-আগুনে দগ্ধ হয়ে! তখন তার প্রসারিত দু’হাতের মাঝে একটার, অর্ধেকটা ভেঙে পড়ে। ভাঙা হাত থেকে খসে পড়ে পাঁচটি আঙুল। আমি সেখানে গাঢ় কালচে খয়েরী ধরণের রং লাগিয়ে দেই। দেখে মনে হয় গুহামুখে দাঁড়িয়ে থাকা পুতুলটি শতাব্দীর ক্রুশবিদ্ধ এক উদাহরণ যেন !


অবশ্য তখন না চাইলেও ক্রমশ গুহামুখ বা গর্তটায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে কামুক চুমু, যদিও সেখানে ছলনাকে উহ্য রাখা হয়। চিকিৎসার অযোগ্য কোনো অসভ্যতার চর্চা শুরু হবার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায় ইতিমধ্যে। সেখান থেকে অনুরণিত হতে থাকে প্রেমিকার অভিশপ্ত হুমহুম প্রেত হাসি।


এই যে একটা কাহিনীচিত্র আঁকা হল – একটা মানচিত্র, একটা আগ্নেয়গিরির কৃষ্ণ জ্বালামুখ বা গুহা, ঘুমপুতুল ইত্যাদি – এর অন্তরালে হয়ত আঁকা আছে কোনো বিবর্তন, আছে দীর্ঘদিনের চর্চা। শতাব্দীর সর্পিল পথ – সে যে ভীষণ পিচ্ছিল ! এ কারণেই স্বাধীনতা ধীরে ,খুব ধীরে তার ক্লান্ত পাপড়ি মেলে ধরে।


শেষ পর্যন্ত আরও কোনো এক আরম্ভের জন্য উদাসীন , গম্ভীর পাতাছেঁড়া মানচিত্রটা গন্ধরাজ বুকে নিয়ে ডানা মেললে ঘুমপুতুলটা আঁকড়ে ধরতে চায় মানচিত্রের ন্যূনতম শেষপ্রান্তটুকু।
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×