somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নেপাল ভ্রমন - (একাদশ পর্ব)

০৪ ঠা মার্চ, ২০১২ বিকাল ৩:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
সে এক অন্য অনুভুতি। মনে যেন শিহরণ লাগছে। আমি প্রথম পাহাড় দেখি চট্টগামে। কিন্তু তা তখনো কাছ থেকে দেখা হয়ে ওঠা হয়নি। এর পর নেপাল আসার ঠিক কিছু দিন আগে সিলেটে পাহাড়ের খুব কাছাকাছি হই। যদিও নেপাল দার্জিলিং এর পাহাড় দেখা অভিজ্ঞতা অর্জনের পর চট্টগ্রামের পাহাড় গুলো চষে বেড়িয়েছি। সিলেটে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়গুলো আমায় এমন করে কাছে টেনেছিল্ যেন আমি সাড়াদিন এ পাহাড় ও পাহাড় ঘুরে ঘুরে কয়েকদিন কাটিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু নেপালের এই হিমালয় যেন অন্য শিহরণ জাগাচ্ছে। আমি পাহাড় বেয়ে বেয়ে শুধু উপরের দিকে উঠে যাচ্ছি। আর পাহাড় যেন আমাকে ডেকে ডেকে আরও আরও উপরে উঠতে বলছে। আমিও সাড়া দিয়ে উপরে উঠে যাচ্ছি। নেই কোন ক্লান্তি নেই কোন ভয়। উপরে ওঠার জন্য পথ রয়েছে। আমি পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছি উপরে শুধু উপরের দিকে যেখানে ওঠার শেষ নেই। পথ জন শুন্য নয়। আছে পর্যটক কিংবা স্থান্য়ি লোক জন। আর পাহাড়ের ভাজে ভাজে আছে কিছু প্রতিষ্ঠান। এক ধরণের ঋষি বা ধ্যান সাধকের মেডিটেশন ও যোগ ব্যায়াম শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। পাহাড়ের অনেক উপরে এরকম এক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে একজন গুরুও সাথে কথা হলো। প্রথমে কি ধরনের প্রতিষ্ঠান জানতে চাইলাম প্রথম কক্ষের কাউন্টার ধরনের অংশে বসা লোকের কাছে। তিনি ইংরেজীতে আমাকে তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড বুঝালেন। এখানে প্রধানত মেডিটেশন ও যোগ ব্যায়ম শিখানো হয়। আমি আগ্রহি হয়ে তাদের গুরুর সাথে দেখা করতে চাইলাম। তিনি আমাকে ভিতরের কক্ষে ঠিক বুদ্ধের মুর্তি আমরা যে ভাবে বসে থাকতে দেখি এভাবে বসে থাকা গুরুর সামনে নিয়ে বসালেন । আমি মেডিটেশন নাকি যেগ ব্যায়াম কোনটা শিখতে আগ্রহী গুরু আমাকে জিজ্ঞেস করলেন। আমি যেহেতু এসবের কিছুই বুঝিনা প্রথমত আমতা আমতা করে তারপরে বললাম, মেডিটেশন।
তিনি আমাকে প্রায় ধ্যানের জগতে নিয়ে গেলেন। বললেন, মনে কর তুমি এখান থেকে উড়ে চলে যাচ্ছ উপরের দিকে আকাশে। আকাশের তারাদের মাঝে। তুমি চলে যাচ্ছ গ্রহ থেকে গ্রহে। কোটি কোটি আলোক বর্ষ দূরে কোন নক্ষত্রে তুমি গিয়ে নামলে। সেখানে হেটে বেড়াচ্ছো তুমি। এভাবে তিনি আমায় আরেক শিহরনের মধ্যে নিয়ে গেলেন। এরপর সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে তিনি আমাকে তাদের এই কোর্সের ব্যয় সম্পর্কে ধারণা দিতে শুরু করলেন। সর্বনিু তিনদিনের কোর্স। এছাড়া সাত দিন, পনের দিন ও একমাসের কোর্স রয়েছে। তবে তার সাথে রয়েছে ডলার ডলার ইউএস মুদ্রার হিসাব। মনে মনে নিজেকে বুঝালাম নেপালেতো মেডিটেশন শিখতে আসিনি এসেছি দেখার উদ্দেশ্যে। আগে হিমালয় দেখ, পোখারার ফিউয়া লেক দেখ। ঘুরে বেড়াও তার পর চিন্তা করো গ্রহ নক্ষত্রে যাওয়ার কথা। আর এখানে যে ডলার খরচ করতে হবে তা করলেতো আর বাড়ী ফেরা হবেনা। যাই অনেক দিন অনেকের সাথে মন খুলে কথা বলতে পারিনি। এমন একটা হোটেলে উঠেছি যারা না জানে ইংরেজী না জানে বাংলা আর আমি তো এ দুটো ছাড়া অচল। এখানে ইংরেজীতে কথা বলেও অনেকত শান্তি পেলাম এরা ভাল ইংরেজী বলতে ও বুঝতে পারে। আমি পড়ে যোগাযোগ করবো বলে ওদের ব্রশিওর নিয়ে এলাম। হিমালয়ের যতই উপরে উঠি এরকম অসংখ প্রতিষ্ঠান চোখে পড়লো। আর কত উপরে উঠবো ওঠার শেষ নেই। পথ আছে লোকজনও উঠছে তবুও আমি নিজে ফিরালাম। আস্তে আস্তে নিচের দিকে নেমে এলাম। দেখতে দেখতে অনেক বেলা হয়ে গেল। নিচে নেমে একটা খাবারের হোটেলে গিয়ে দুপুরের ভাত (সাদাদানা) খেলাম। খাওয়ার পর ফিউয়া লেকের সামনে ঘুরে বেড়ালাম। কিছুক্ষণ ঘুরে কয়েকটা দোকান ঘুরে ঘুরে দেখলাম। সবগুলো দোকানই পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে। একটা দোকানে গিয়ে দোকানের বিক্রেতা মেয়েটাকে অনেক আকর্ষনীয় মনে হলো। এই দোকানে নানান ধরণের শোপিচ বিভিন্ন প্রকারের রত্ন পাথরের রূপার আংটি বিক্রি হয়। আমি দোকানে গিয়ে আংটি গুলো দেখার ফাকে ফাকে দোকানীকে দেখছিলাম। ক্রেতা খুব বেশী নেই। একটু ভিড় কমতেই মেয়েটা আমার কাছে এলো। আমি তার নাম জানতে চাইলাম। সে নাম বলল। নামটি ভুলে গেছি, এ মুহুর্তে মনে নেই। অনেক কথা বার্তায় মেয়েটা আমার সাথে খুবই আন্তরিক হলো। এক সময় সে আমাকে একটি আংটি কিনতে অনুরোদ করলো। রুপার আংটিটায় কি যেন এক পাথরের কথা বলল। আমিও না কিনে পারলামনা। আংটি নিয়ে মেয়েটার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আরও কিছুক্ষণ ফিউয়া লেকের পাশে ঘুরে তারপর লোকাল মাইক্রোবাসে পোখারা চলে এলাম। সন্ধ্যার কিছু পরে এসে হোটেলে পৌছলাম।

(চলবে)।

প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব তৃতীয় পর্ব বাকী লিংক পরের পর্বে দেয়া হবে
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১২ বিকাল ৪:৫৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×