২.কমলাপুর রেলস্টেশনের ঠিক উল্টাপার্শ্বে আজ সন্ধ্যায় একটা দেয়ালের দিকে চোখ যেতেই দেখলাম পুরো দেয়ালটা এরশাদের ছবি দিয়ে ভরাট করা! অনেকগুলো পোস্টার একসাথে হওয়ার কারণেই বোধহয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে একটু বেশি করে। বলতে কি... আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় অফিসটা চিনি! বিএনপির অফিসের খুব কাছেই আমার বাসা! এসব দলের অফিসের পাশ দিয়ে হেটে গেলেই বুঝা যায় এটা আওয়ামীলীগের অফিস ওটা বিএনপির অফিস। নতুন করে বলবার দরকার নেই, আওয়ামীলীগের অফিসের পাশ দিয়ে হাঁটলেই স্বাভাবিকভাবেই চোখে পড়বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি, শেখ হাসিনার ছবি, মাঝে মাঝে জয়কেও দেখা যাবে কিছু দেয়ালে, আর বিএনপির অফিসের পাশ দিয়ে হাটলেই দেখবেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া, কিছু ধানের শীষের পোষ্টারও চোখে পড়বে নয়া পল্টনের বিএনপির অফিসের পাশ দিয়ে হাটলে। আর ধানের শীষের সাথে মিশানো কিছু কিছু পোষ্টারে দেখবেন তারেক জিয়া মিশে আছে ধানের শীষের সঙ্গে! কিন্তু সত্যি বলতে কি জাতীয় পার্টির অফিসটা কোথায় আমি ঠিক জানিনা! এই মুহুর্তে ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই জেনে নেয়া যায় সহজেই। কিন্তু দিচ্ছিনা আমার এই পোস্টের প্রাসঙ্গিকতার খাতিরেই! কাউকে জিজ্ঞেস করলেই জেনে নিতে পারি! কিন্তু তাও করছিনা এই মুহুর্তে!
৩. কমলাপুরে ফিরে যাই। যে দেয়ালের গায়ে এরশাদের পোস্টার লেপ্টে ছিল আমি মুহুর্তের ভুলে ভেবে বসলাম এটা কি এরশাদের জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস? আবার ভাবলাম কোন ওয়ার্ডের অফিসতো হবেই! কিন্তু একটু মনোযোগের দৃষ্টিতে তাকানোর চেষ্টা করলাম ভিতরের দিকে! হায় আল্লাহ দেখি এটা একটা পাবলিক টয়লেট! সেই টয়লেটের দেয়ালজুড়ে ভাসছে এরশাদ! আমি তাঁকে ছোট করার উদ্দেশ্যে এই লেখাটা লিখছি না। কিন্তু সাবেক এই স্বৈরশাসক হয়ত বাংলাদেশের উন্নয়নে কিছু কাজ করেছেন! কিন্তু গণতন্ত্র আর গণতন্ত্রকামীদের গায়ে যে কালির আচর একেছেন তা কি সহজে মুছে যাবে? নূর হোসেন আর আসাদের আত্মা কি ক্ষমা করবে এরশাদকে?
৪. ইতিহাস এরশাদকে মনে রাখবে ঠিকই কিন্তু কালো তালিকার এরশাদ কি এভাবে টয়লেটের দেয়ালে দেয়ালে স্মরণীয় হয়ে থাকবে? ইতিহাস কি তাঁর নাম কখনো সোনার অক্ষরে লিখবে? নাকি ইতিহাসের কালো কালিতে শুধুই কালো হয়ে এরশাদের ইতিহাস?
৫.এরশাদের অফিসের ঠিকানাটা আমি এখনো জানার চেষ্টা করিনি সন্ধ্যার পর। আপনার কেউ জানলে বলতে পারেন। আর কেন যেন মনে হচ্ছে আমি কমলাপুর দিয়ে হাটলেই বুঝি ওই পাবলিক টয়লেটকে জাতীয় পার্টির কোন অফিস ভেবে একটু তাকানোর চেষ্টা করবো! তখন হয়তো এরশাদের ছবি থাকবেনা কিন্তু আমার মতিভ্রম কি সহজেই চলে যাবে? ভাবছি তা-ই!
কিছু দরকারি তথ্য:
১. হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জন্ম: ১ ফেব্রুয়ারী ১৯৩০ সালে রংপুরে।
২. ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
৩. ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।
৪. ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এক সামরিক অভ্যূত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন।
৫. ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি একনায়ক ছিলেন বাংলাদেশের।
৬. ১৯০০ সালেই গণআন্দোলনের মুখে সরে যেতে হয় ক্ষমতার মসনদ থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



