গত দুমাসে সরকারি সিদ্ধান্তে নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া ও টেকনাফে ইয়াবা স্মাগলিং কঠোর হস্তে দমন করা হয় ও ৫টি অতিরিক্ত বিওপি স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়, একজিষ্টিং বিওপিতে লোকবল বাড়িয়ে শক্তি বৃদ্ধি করা হয়। এতে বার্মিজ বিজিপিদের অবৈধ আয় হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়, ব্যাবসা বন্ধ হওয়াতে বিজিপি ও বার্মিজ স্মাগলাররা পাগলা কুকুর হয়ে যায়।
এছাড়া এর কিছুদিন আগে এর ভিন্ন একটি স্থানে ইসলামপন্থি রোহিংগা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) রাখাইন প্রদেশে মায়ানমার প্যারামিমিটারি Tatmadaw বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং এই হামলায় ৪ জন সৈনিক নিহত হয়। এরপর তারা বাংলাদেশকে আরএসও দের মদত দেয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেছিল কুটনিতিক চ্যানেলে। অতচ এই সরকার জামাত সমর্থিত রহিংগা গোষ্ঠিদের আশ্রয়-সমর্থন দেয়ার প্রশ্নই আসে না।
ওরা হঠাৎ এরকম ক্ষিপ্ত হওয়ার এসবই কারন।
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের সেই ৫০ নং পিলার।
বিজিবি জানায়, ২৮ মে বুধবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তের ৫২ নম্বর পিলারের কাছে ৩১ বিজিবির একটি টহল দল নিয়মিত ডিউটিতে ছিল
সিমান্তের এই অঞ্চলটিতে কোন কাটাতার বা মার্কিং ছিলনা। মায়ানমার টাইমসের দাবি অনুযায়ি ৫ জনের বিজিবির টহল দলটি নোমেনস ল্যান্ডের ৮০ মিটার ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল। বিজিবি অবস্য অস্বীকার করেছে। ইয়াবা ব্যাবসা বন্ধ হওয়াতে ক্ষিপ্ত বার্মিজ বর্ডার পুলিশ কোন সতর্কতা করা ছাড়াই হত্যার উদ্দ্যস্যে বৃষ্টির মত গুলিবর্শন করতে থাকে। বিজিবিও পালটা গুলিবর্শন করে। প্রায় ১ ঘন্টা গুলিবর্শন চলার পর বার্মিজরা দলে ভারি হয়ে শক্তিবৃদ্ধি করে। বিজিবির হাতে কোন বেতার যন্ত্র ছিলনা, মোবাইল থাকলেও নেটওয়ার্ক সিগনেলের বাইরে। প্রায় ৩ শতাধিক রাউন্ড গুলিবিনিময়ের বিজিবির দলটি পিছু হটতে থাকে। নায়েক মিজানের হাতে ১২০ রাউন্ড (ড্রাম ম্যাগাজিন) গুলিভর্তি একটি ভারি মেসিনগান ছিল, সংখায় বেশী বিজিপির দল গুলি করতে এগিয়ে এলে অকুতভয় মিজান মেসিনগানের একটানা গুলিবর্শন করে দলের ৪ জনকে পিছু হটে প্রান বাচানোর সুযোগ করে দেয়। মিজানকে স্যালুট। নিজের জীবন দিয়ে ৪ জনকে বাচালো। পিছু হটে প্রান বাচাতে এই ৪ জন বিচ্ছিন্ন ভাবে বার্মার গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যান, এরা হলেন- ৩১ ব্যাটেলিয়নের হাবিলদার মোতালেব, ল্যান্স নায়েক বাতেন, সিপাহী জাহাঙ্গীর ও আমিনুল। এরা পালিয়ে বার্মার পাহাড়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। ৩দিন পর এরা পাহাড় চুড়ায় মোবাইল নেটওয়ার্ক পেয়ে যোগাযোগ করলে পরে তাদের পথ দেখিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়।
প্রতিশোধ, অসমর্থিত সুত্র
এরপর বিজিবি আনঅফিশীয়ালি কঠিন প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে। বুধবার গুলিবিনিময়ের ঘটনায় ওই দিন বিজিবি’র নাইক্ষ্যংছড়ি ৩১ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সফিকুর রহমান বিজিপি মংডু ২নং সেক্টরের কমান্ডার থিং কো কো বরাবরে পতাকা বৈঠকের জন্য চিঠি পাঠান। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি সীমান্তের ৫০নং পিলারের নিকটবর্তী বাহির মাঠ এলাকায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন করে। আয়োজন সম্পন্নের পরও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) পতাকা বৈঠক গুলিবর্শনের মাধ্যমে প্রত্যাক্ষান করে। বাংলাদেশ পক্ষে ভারি অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আগেথেকে পাহাড়ে ওতপেতে থাকা বিজিবি প্রচন্ড গুলিবর্শন করতে থাকে, সিমান্ত চৌকি লক্ষ করে মর্টার দিয়ে দফায় দফায় গোলা বর্ষন করে, এতে তাদের অফিসার সহ ৬ জন নিহত বা গুরুতর আহত হয়। কিন্তু হতাহতের সংখ্যা যুদ্ধ কৌশল হিসেবে গোপন রাখা হয়। বিকাল ৫ টায় উভয় পক্ষে গুলিবর্শন বন্ধ করে। কিন্তু মিয়ানমার পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। পাল্টা জবাবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষও সতর্কতার সাথে সীমান্তের কাছাকাছি স্বল্প পরিসরে সেনা মোতায়েন করেছে। তবে জেনেভা আইন লঙ্ঘন করেনি। তবে শুক্রবার একটি পদাতিক ব্রিগেডকে মুভ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে এরপর সীমান্তে আর কোন গুলিবর্শন হওয়াতে উত্তেজনা কমে আসে। স্থানিয় লোকজন ঘরে ফিরে আসে। পরে বিজিবির উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের পর নায়েক মিজানের লাস ফেরত দেয়া হয়।
মিয়ানমার সীমান্তের উত্তেজনা প্রশমিত হয়েছে। তবে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের সঙ্গে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বিজিবি প্রস্তাবিত ৩ রা জুনের পতাকা বৈঠক পেছানোর প্রস্তাব করেছে মিয়ানমার। (মার খেয়ে জালা এখনো মিটেনি তো) এটি দু’দিন পিছিয়ে ৫ই জুন করার প্রস্তাব করেছে। তবে আগামী ৯-১৪ই জুন বিজিবি মহাপরিচালকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের মিয়ানমার সফর এবং মিয়ানমারের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান চৌ’র ঢাকা সফর এবং ১৮ই জুনের ফরেন অফিস কনসালটেশনের কর্মসূচিও অপরিবর্তিত রয়েছে।
স্মাগলারদের উৎপাতে যুদ্ধাবস্থা তৈরি করা ঠিক হবে না।
এখন কোন উষ্কনিমুলক কিছু করা ঠিক হবে না। যেকোন যুদ্ধই বিপুল ব্যায়বহুল।
সংঘর্ষ প্রস্তুতিও সমান ব্যায়বহুল। বর্তমান যুগে কোন দেশ কোন দেশের অঞ্চল দখল করে নিতে পারে না। এখন আর সেই দিন নাই।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


