ব্লগার হাবিব স্যারের পোষ্টে শেষ লাইনে একটি কথায় মনটা খারাপ হয়ে গেল।
পোষ্টের শেষ লাইনে লিখেছেন,
"আমার মনে হয় সরকার ব্লগারদের দাবীর মুখে কোন আইন পাশ করেন নি।
সরকারও চাইতো কাদের মোল্লার ফাঁসী হোক, তাই করেছে। এখানে ব্লগারদের ক্রেডিট নেয়ার কিছু আছে কি??"
আমি জবাব দিয়েছি, তবে আরো কিছু কথা আছে।
কাদের মোল্লার ফাঁসি এত সহজ ব্যাপার ছিল না। আমি তখন আইন আদালতের সব খবরাখবর আপডেট খুজতাম। মিডিয়াতে সবকিছু আসে না।
অনেকে বলছে শাহাবাগ সরকারের নিজস্য অর্গানাইজড মঞ্চ, সরকারি ছত্রছায়ায় সরকারি পুলিশ পাহারা দিচ্ছে, খাওয়া দিচ্ছে!
হাবিব স্যারও বলেছেন আমি শুধু আন্দোলন দেখতেই ঢাকা গিয়েছিলাম। চারপাশে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনির ভেতর বসে বসে স্লোগান দিতে দেখেছি। আন্দোলনকারীদের এত নিরাপত্তা ও আপ্যায়ন এর আগে বা পরে হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
নিরাপত্তা নিয়ে কারো গাত্রদাহের কোন কারন হতে পারে না।
যে কোন বড় জমায়েতকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের।
রাষ্ট্র নিরাপত্তা দিলেই সব মিছা হয়ে যায় না।
বিএনপির বা অন্যদলের মিটিং মিছিলেও রাস্তার উভয় দিকেই পুলিশ পাহারা থাকে, নাশকতা এড়াতে হউক, ভাংচুর এড়াতে হউক।
পুজা বা জন্মাষ্টমির মিছিলে পাকিস্তান আমল জিয়া-এরশাদের আমলেও পুলিশ দিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়া হত। বর্তমানে আরো বেশী নিরাপত্তা দেয়া হয়।
যে কোন বড় জামায়েতে এমনকি ঈদের জামাতেও পুলিশ পাহারা থাকে। বর্তমানে জঙ্গি হুমকি থাকায় সব ঈদের জামাতে এমনকি মফস্বলের ঈদের জামাতেও সর্বচ্চ পুলিশি নিরাপত্তা দেয়া হয়। ঢাকায় ৩ স্তরের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে, ৬ বছর জাবৎ
সরকার পর্যাপ্ত বা বেশী নিরাপত্তা দিলেই সব কিছু মিথ্যে হয়ে যায় না।
আলোচিত শাহাবাগ গনজাগরন মঞ্চ জমায়েতটি যুদ্ধাপরাধ সমর্থক জামাত-শিবিরের আক্রোশের শিকার হতে পারে এটা সবারই জানা,
হুমকিও ছিল। সরকার জেনে শুনে এতবড় ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটতে দিতে পারে না। কোনমতেই দিতে পারে না,
সঙ্গত কারনেই সরকার শক্ত পাহারা দিয়ে উচ্চ নিরাপত্তার দেয়ার ব্যাবস্থা করেছে। সরকারের নিজের ভালর জন্যই করতে বাধ্য হয়েছে।
হ্যা যা বলছিলাম। কাদের মোল্লাকে ফাঁসিতে ঝুলানো এত সহজ ব্যাপার ছিল না।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করে ৫ই ফেব্রুয়ারি। যাবৎজীবন কারাদন্ড।
এত সামান্য শাস্তিতে সবাই ক্ষোভে ফেটে পড়ে
যেখাবে বাচ্চু রেজাকার এরচেয়ে অল্প অপরাধে ফাঁসি। আর এতগুলো খুন করে কশাই বেঁচে যায় কিভাবে?
তার মৃত্যুদণ্ড চেয়ে শাহবাগে আন্দোলন শুরু হয়। দিন-রাত ব্যাপি প্রবল আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৮ই ফেব্রুয়ারি সংসদে ট্রাইব্যুনাস আইন সংশোধন আনা হয়। প্রয়োজনিয় আইন প্রনয়ন, সংশোধন করে সরকারের আপিল ক্ষমতা অর্জন ও এই আইন কাদের মোল্লার উপর প্রয়োগ করে সর্বচ্চ শাস্তি (ফাঁসি) নিশ্চিত করা। এ সংশোধনে যে কোন দণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারকে আপিল দায়েরের সুযোগ দেয়া হয়। (আগের আইনে ছিল না)
কিন্তু এর আগেই কাদের মোল্লার মামলার সকল বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ সংশোধনী প্রয়োগের সুযোগ ছিল না"।
সরকার আপিল দায়ের করলে সিনহা আপিল বিভাগের এক বিচারক ছিল। তখন উচ্চ আদালত বেকে বসে।
ফাইনাল রায় হয়ে গেছে, সংসোধিত আইন পরে জারি হয়েছে। হিসেবে এই সংসোধিত আইন কাদের মোল্লার উপর প্রয়োগ হওয়ার কথা না। পরে অন্য আসামীর উপর হতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই ফাইলটি প্রধান বিচারপতির টেবিলে পাঠিয়ে দেয়।
সরকারপক্ষের প্রবল দাবির মুখেও উচ্চ আদালতের বিচারকরা এই নতুন তৈরি আইনটি কাদের মোল্লার উপর প্রয়োগ করতে দ্বিধাগ্রস্থ হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের মুল দাবি ছিল - পৃথিবীতে এ পর্যন্ত য্ত আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন হয়েছে, সব ক্ষেত্রেই ভূতাপেক্ষ কার্যকারিতা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আইন তৈরি হয়েছে অপরাধ সংঘটনের পরে।
তাই এক্ষেত্রে দেশী আইনের সাথে আন্তর্জাতিক এই ধারাটি প্রজয্য হতে পারে। যেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আইনে অস্পষ্টতা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আদালত আন্তর্জাতিক অঙ্গনের মীমাংসিত সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা উচিত।
এটা প্রতিষ্ঠিত নীতি যে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে বিভেদ দেখা দিলে দেশীয় আইনই প্রাধান্য পাবে। সাধারণত দেশীয় আদালত দেশীয় আইন অনুসরণ করে। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আইন পূর্ণাঙ্গ নয়, যেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আইনে অস্পষ্টতা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে দেশীয় আদালত ভারত পাকিস্তান সহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বা বিভিন্ন দেশের মীমাংসিত সিদ্ধান্ত (রায় গুলো) অনুসরণ করতে পারে।
কিন্তু আসামী পক্ষ নতুন তৈরি আইনটি কাদের মোল্লার উপর প্রয়োগ অনৈতিক ও বেআইনি বলে দাবী করে।
আদালতে এধরনের জটিল পরিস্থিতি হলে যা হয় তাই হয়েছে।
আদালত ৭ জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন।
যাদের দুজন বাদে প্রায় সবাই আওয়ামী বিরোধী, কিছু বিএনপি-জামাত শুধু সমর্থক না,বিএনপি-জামাতের উকিল হিসেবেও পরিচিত।
আপিল বিভাগের মননিত অ্যামিকাস কিউরি ৭ সিনিওর আইনজিবী। এরা হচ্ছেন
ব্যারিস্টার টিএইচ খান,
এডভোকেট এএফ হাসান আরিফ।(বিএনপি-জামাত সরকারের সাবেক এটর্নি জেনারেল)
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক,
ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম,
ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ,
এডভোকেট মাহমুদুল ইসলাম,
ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন. কিউসি,
শেষ দুজন বাদে সবাই আওয়ামী বিরোধী, তবে সেই শাহাবাগের যুদ্ধাপরাধ বিচার দাবিতে উত্তাল ঢাকায় এদের সবাই কিছু না কিছু প্রভাবিত।
৭ জন অ্যামিকাস কিউরিদের কাছে দুটি প্রশ্ন করা হয় -
১। দণ্ড ঘোষণার পর নতুন তৈরি সংশোধনী আইনটি কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে ভূতাপেক্ষ (Retro perspective) ভাবে প্রযোজ্য কি না?
২। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩-এর অধীনে গঠিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে কি না?
নিরপেক্ষ হিসেবে পরিচিত প্রখ্যাত আইনজীবী ব্যারিষ্টার রফিক-উল হক সবচেয়ে আগে আদালতে উপস্থিত হয়ে ওনার মতামত তুলেধরেছিলেন। তিনি এই আইনটির প্রশংসা করেন এবং কাদের মোল্লার উপর এই নতুন আইন প্রয়োগ করতে কোন বাধা নেই বলে স্পষ্ট মত দেন।
ব্যারিষ্টার রফিক-উল হকের বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের ২১ ধারায় যে সংশোধনী আনা হয়েছে। তা সম্পুর্ন বৈধ ও সংবিধানসম্মত। এই সংশোধনী ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই থেকে তা কার্যকর বলে গণ্য করা যাবে। সংবিধানের ৪৭(৩) অনুচ্ছেদে আইনটিকে সুরক্ষা দেওয়া আছে। নতুন ধারা অনুসারে, কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে অধিকার হিসেবে সরকার আপিল করতে পারে।
সাবেক এটর্নি জেনারেল হাসান আরিফ ও ব্যারিস্টার টি এইচ খানও পিছনের তারিখ দিয়ে সরকারকে আপিলের সুযোগ দেয়ার বিরোধিতা করেছেন। তিনি আইন সংশোধনের আগের বিষয় এর আওতায় আনার বিরোধিতা করে মত ব্যাক্ত করেছেন।
হাসান আরিফ বিবিসিকে বলেন, ''যদি কারও বিরুদ্ধে রায় হয়, তখন তার অধিকার জন্মেছে বলে আইনের ভাষায় বলা হয়ে থাকে।
সে ক্ষেত্রে রায় হয়ে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট আইনের সংশোধনী এনে সরকারকে সাজা নিয়ে আপিলের যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেটা এই রায়ের ক্ষেত্রে কার্যকর হয় না। এরসাথে আমি আদালতে আরও বলেছি, সেই সংশোধনী অবশ্যই বৈধ। এটি শুধু মি: কাদের মোল্লার রায় বাদ দিয়ে অন্যদের রায়ের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে আইনগত কোন সমস্যা নেই।''
ব্যারিষ্টার রফিক-উল হকের দ্রুত মতামত অন্যান্ন অ্যামিকাসদের উপর কিছুটা হলেও প্রভাব বিস্তার করে বলে আমার মনে হয়েছে।
ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, এডভোকেট মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন. কিউসি, সবাই কাদের মোল্লার উপর এই নতুন আইন প্রয়োগ করতে কোন বাধা নেই।
তবে আন্তর্জাতিক আইন ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন (কাস্টমারি ইন্টারন্যাশনাল ল) ব্যাপারে সবাই মিশ্র বক্তব্য প্রকাশ করেন।
ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের পক্ষে মত দেন।
ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ১৯৭৩ সালের ট্রাইব্যুনালস আইনে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের প্রতিফলন রয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের পক্ষে মত দেন।
মাহমুদুল ইসলাম বলেন, এ প্রশ্নে হাঁ না উত্তর দেয়া কঠিন। সাধারণভাবে প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে না। তবে দেশীয় আইনে কোন ধরনের অস্পষ্টতা থাকলে, শূন্যতা থাকলে অথবা ব্যাখ্যার জন্য প্রয়োজন হলে আন্তর্জাতিক আইনের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।
আজমালুল হোসেন কিউসি মত দেন, সাংঘর্ষিক না হলে আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইন প্রযোজ্য হতে পারে।
ব্যারিস্টার টিএইচ খানের মত প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন প্রযোজ্য হবে। তবে দেশীয় আইনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন সাংঘর্ষিক হলে সেক্ষেত্রে দেশীয় আইনই প্রাধান্য পাবে।
এএফ হাসান আরিফের মতে আন্তর্জাতিক প্রথাগত আইন প্রযোজ্য হবে।
শুধুমাত্র ব্যারিস্টার রফিক-উল হক মত দেন - এই মামলায় প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন (কাস্টমারি ইন্টারন্যাশনাল ল) প্রয়োগের কোন সুযোগ নেই।
এরপর আপিল দায়ের হল।
তার আগেই রায় ঘোষণার ২৭ দিনের মাথায় ছয় অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে দেওয়া সাজাকে অপর্যাপ্ত দাবি করে সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপিল করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। পাশাপাশি একটি অভিযোগ থেকে তাঁকে দেওয়া খালাসের আদেশও বাতিলের আরজি জানানো হয়।
অপর পক্ষে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ বাতিল ও সাজা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আপিল করেন কাদের মোল্লা।
এরপর কাহিনি সবার জানা।
মামলার নাম
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বনাম আবদুল কাদের মোল্লা’
প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ । বেঞ্চের বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
আসামি ও সরকার—উভয় পক্ষের দুটি আপিলের ওপর ৩৯ কার্যদিবস শুনানি শেষে ২৩ জুলাই আপিল বিভাগ রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। শুনানি শেষ হওয়ার ৫৪ দিনের মাথায় রায় ঘোষনা তারিখ দেয়া হল।
শুনানি শেষ হওয়ার ৫৫ দিনের মাথায় ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতে কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় ৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। এরপর রায়ের অনুলিপি সুপ্রিম কোর্ট থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর বিকেলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ থেকে কাদের মোল্লার মৃত্যু পরোয়ানা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
এরপরও কাহিনী শেষ হয় না।
ডিসেম্বরের সেই উত্তাল ঢাকা শাহাবাগ, টিএসসি। সবাই উত্তেজিত। এই প্রথম বহু প্রতিক্ষিত ফাঁসি। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের।
১০ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হবে। ফাঁসি কার্যকরের ব্যাপক প্রস্তুতিও ছিল কারা কর্তৃপক্ষের।
কারাগারের ফটকে হাজার হাজার সাংবাদিক, ক্যামেরা তাক করা। সবগুলো টিভি লাইভ সম্প্রচার করছে।
তবে আরেক দিকে চলছে আরেক নাটক।
তবে ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিতের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের বাসায় হাজির হন কাদের মোল্লার আইনজীবীরা। তবে ঘোষিত সময়ের দেড় ঘণ্টা আগে তাঁর ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি।
তিনি ১১ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ফাঁসির কার্যক্রম স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
কিন্তু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন তোলা হয়। শুনানি শেষে ফালতু রিভিউ আবেদনটি খারিজ করে দেয়া হয়।
প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন ‘বোথ দ্য রিভিউ পিটিশনস আর ডিসমিসড’ (দুটি পুনর্বিবেচনার আবেদনই খারিজ করা হলো) বলে ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করেন।
সে রাতেই ফাঁসির মাধ্যমে বাংলাদেশে আরেকটি অধ্যায়ের সুচনা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২০