আমাদের দেশে শিক্ষিত বেয়াদব ধান্দাবাজ লোকের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলছে। সত্যি চিন্তার বিষয়।।
নওম চমস্কি পৃথিবীর অন্যতম জীবিত দার্শনিক, বুদ্ধিজীবী, বলা যায়, উনি একটি প্রতিষ্ঠান।
এত বড় একজন মহামানবকে যে সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য রাজী করাতে পেরেছিলেন তিনি --এটা একটা বিরাট ব্যাপার। দুই বছর চেষ্টার পর ইন্টারভিউয়ের জন্য রাজি করিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক চ্যাংড়া সাংবাদিক, চিটাগং থেকে। কিন্তু ওনার বোকামির (বা চালাকির) জন্য পুরো জিনিসটাই ভেস্তে গেল। বাংলাদেশের সুনামও ক্ষু্ন্ন হলো।
একজন বিখ্যাত মানুষের সাথে কিভাবে কথা শুরু করতে হয়, ইন্ট্রোডিয়স করাতে হয় জানেনা, যে দেশের জন্মের ইতিহাস সম্পর্কে অজ্ঞ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানে না, নিহতের সংখা জানে না, ভাল ইংরেজি জানে না আমেরিকা-বাংলাদেশ রিসেন্ট টাইম জোন জানে না এবং নিজের ভুল হলে স্যরি বলতে হয় জানেনা, সে কেন নোয়াম চমস্কিকে আমন্ত্রন জানাবে? বয়োবৃদ্ধ নোয়াম চমস্কি ১ ঘন্টা ওয়েট করেছেন, ই মেইল করেছেন, সেই ইমেইল ফেসবুকে আপ্লোড করে বাহবাও কুড়াতে চেয়েছে সে, নিজস্ব বিরক্ত মার্কেটিং করেছে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা প্রসঙ্গে চমস্কিকে বলতে শোনা যায়, হেনরি কিসিঞ্জার বেইজিং এ একটি গোপন সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি সেই সফরকে দেখতে চাইছিলেন নিজের বড় সাফল্য হিসেবে। আর এ জন্য পাকিস্তানের স্থল সীমান্ত ওপর নির্ভর করতে হত তাঁকে। এ কারণে তাদের অপরাধকেও তিনি মেনে নেন। নৌবহর পাঠিয়ে ভারতকে নিষ্কৃয় করে অবরোধ করতে চেয়েছিল।
উনি আরো কিছু বলতে চেয়েছিলেন কিন্তু ছ্যামড়াটা কথা শেষ করার আগেই আরেকটি প্রশ্ন করে বসে, ছাগল।
২ বছর চেষ্টা করে রাজি করানো। দুই মাস ধরে প্রচারণা চালিয়ে আয়োজক সাহেব এক ঘন্টা দেরিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছে! চিন্তা করা যায়??!!
বেচারা চমস্কি বসে থেকে অধৈর্য হয়ে ইমেইলে জিজ্ঞেস করেন- I am waiting, Are we scheduled for now?'
এই গর্দভ সেই মেসেজের স্ক্রিনশর্ট দিয়ে আবার বাহবা নিচ্ছে- - চমস্কি ইন্টারভিউ এর জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে!
চমস্কি ক্যামেরার সামনে এসেই বললেন- 'It's too late. We need to reschedule'
তারপরও সরি না বলে মুখের উপর বলে "লেট মি স্টার্ট"। এরপর ভুল ইংরেজিতে প্রশ্ন করা - পুরো বাংলাদেশের মান-সম্মান নিয়ে প্রশ্ন।
এদিকে নিজস্ব বিজ্ঞাপন ঠিকই যাচ্ছে- Sponsor by Mohur Fashion House.
মানুষের বদান্যতা নিয়ে অসততার এই নজির, সাংবাদিক হিসাবে অতি নিম্নমান দেশকেকে শুধু লজ্জিতই করে নি, বাংলাদেশের মান-সম্মানকেও ভূলুণ্ঠিত করেছে। এইসব গর্দভ, এটেনশন লোভী, সর্বপোরী অসৎ সাংবাদিক নামের ভাইরাল-লিপ্সু প্রাণীদের সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো বয়কট করা উচিত।
পুনশ্চ: ইন্টারভিউয়ের সময় নিয়ে না হয় ভুল হতে পারে, মানলাম। কিন্তু দুই বছর ধরে প্রস্তুতি এর পর ২ মাস ধরে প্রচারনা, এরপরও লিখিত প্রশ্নে যদি - ১৯৭১ মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ কে দুই লাখ বলা হয়, তবে তাকে কী বলা যাবে? ব্লান্ডার?
না কি চতুরতার সাথে সেই জামাত-শিবিরিও পরিকল্পিত ইতিহাস বিকৃতি?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৫৪