somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পয়লা বৈশাখ

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছেলেবেলায় ঠিক আজকের দিনটাতে আমি কয়েকবার নানাবাড়ীতে ছিলাম। সেখানে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে একটা মেলা হয়। আমি গিয়েছিলাম ঐ মেলায়। দুবার। বিশাল প্রান্তরের মত একটা জায়গা। মাঝখানে মাজার। কিসের মাজার জানিনা, কিন্তু ঐ মাজারকে ঘিরেই বসতো মেলা। আমি আরো অনেকের সাথে ধূ ধূ মাঠ-প্রান্তর পেরিয়ে খালি পায়ে ধুলো মেখে হেটে গিয়েছিলাম । তারপর যে অভিজ্ঞতাটা হয়েছিল সেটা অভূতপুর্ব আর অকৃত্তিম। যেটা আমার স্মৃতীর ভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। অনেক স্মৃতীর মাঝে পহেলা বৈশাখের এই স্মৃতীটাকেও আমি খুব যত্নে আগলে রাখি। এটা অমূল্য। চোখ বন্ধ করলে আমি আজো দেখতে পাই দৃশ্যটা। এই প্রজন্মের কাছে এমন একটা স্মৃতী অর্জন করা বাস্তবিক ভাবেই অসম্ভব। সেই সময়কার ইলিশ মাছ গুলোর আকার বা স্বাদ কোনটাই এখনকার চেয়ে কম ছিল না। অথচ আমার মনে আছে সম্ববত ৯৭ সালে একবার নদীতে প্রচুর ইলিশ এসেছিল। আমি ২ কেজি আকারের একটা ইলিশ মাত্র ৩৫ টাকা দিয়ে কিনতে দেখেছি মানুষকে! তারপরও বৈশাখে ইলিশ মাছ খেতেই হয় এমন ধারনাপোষনকারী কোন মানুষ লক্ষ করিনি। অনেক মানুষ তখন এমনিতেই পান্তা খেতো। শখ করে, তাও আবার দাম দিয়ে কিনে পান্তা খাওয়ার চিন্তা তো হাস্যকর ছিল।

আমাদের ঘনবসতীপূর্ণ দেশটির মধ্যে একটা অর্থনৈতিক পরিবর্তন এসেছে যেটি খুব স্বাভাবিক একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু অস্বাভাবিক হলো এই, পরিবর্তনকে ধারন করতে যেই শিক্ষাগত প্রস্তুতির দরকার ছিল আমরা সেটা অর্জন করতে পারিনি। ফলে এক অস্বাভাবিক ভারসাম্যহীন সামাজিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে বাস করছি আমরা। যেটা প্রতিদিনই বিভিন্ন ভাবে প্রকাশ পায়। তবে পয়লা বৈশাখ বা ভেলেন্টাইন্স ডে'র মত দিন গুলোতে এই ভারসাম্যহীনতার প্রকাশটা মনেহয় সবচেয়ে কুৎসিত। সামর্থবান মানুষ ইলিশমাছ কিনে রিতিমত উল্লাসবোধ করেন আর যারা ব্যর্থ হন তারা ভোগেন হীনমন্যতায়। আমরা যে কতটা অসুস্থ্য আমরা নিজেরাও বোধহয় জানিনা! আমি সবসময়ইচেষ্টা করে এসেছি নিজেকে যাবতীয় হুজুগে উন্মাদনা থেকে দুরে সরিয়ে রাখার। লাখ লাখ মানুষ সংকীর্ন রাস্তা ঘাটে পিপড়ার মত পিলপিল করে হেঁটে বেড়াচ্ছে, ভয়ংকর শব্দদুষনের মাাঝে বটমুলে বসে রবীন্দ্রসংগীত উপভোগ(!) করছেন এমন চিন্তা করাটাও কষ্টকর আমার পক্ষে। আর যখন টিভিতে দলে দলে মানুষের গপ গপ করে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার দৃশ্য দেখি সেটা খুবই অশ্লীল মনে হয় আমার কাছে। এতদিন যাবত আমি উপেক্ষার হাসি হেসে এসেছি এসব দেখে। কিন্তু এখন হাসি আসেনা। বরং আমার ভয় হয়। ভয় হয় আমার উত্তরপুরুষের জন্য। আমার কেবলই মনে হয় কতটা কান্ডজ্ঞানহীন আমরা! যে আমাদের সন্তানদের জন্য একটা অসুস্থ্য সমাজ তৈরি কেরে দিয়ে যাচ্ছি। যারা হয়ত নিজেদের স্মৃতীকে সমৃদ্ধ করার মত কোন সুস্থ্য উপাদানই পাবেনা সমাজে!!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৪৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×