somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি খুন

২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লাশ টা কই লুকানো যায় বল তো দোস্ত???- বন্ধু সুমন কে প্রশ্ন টা করলাম আর লাশ টা কে কি করা যায় চিন্তা করছিলাম। কিন্তু কোনো রিপ্লাই পেলাম না। সুমনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ছেলেটা ঠক ঠক করে কাপছে।


কিরে সালা কাপতেছিস কেরে??তুই তো কিছু করস নাই যা করার আমিই তো করছি হুদাই ভয় পাস কেরে,,, ফ্যানের নিচে গিয়া বস,, পুরাই তো ঘাইমা গেসস,, আমি দেখি লাশটারে কি করা যায়।
তারপরও দেখি ছেলেটা দাড়ায় দাড়ায় ঘামতেসে আর কাপতেসে। কি আর করব অগত্য আমিই নিয়ে ফ্যানের নিচে নিয়ে সুমনকে বসিয়ে দিয়ে বললাম-বস ব্যাটা ঠান্ডা হ। এত ভয় পাইলে কেমনে কি করুম এখনো তো অনেক কাজ বাকি আছে।লাশটারে তো গুম করতে হইব।তোরে ডাকছি সাহায্য করার জন্য ভয়ে কাপার জন্য না।


লাশটা আমার গার্লফ্রেন্ড রুপি পিশাচের। নাম ছিলো দিয়া। এক সাথেই পড়তাম দুজন। খুব ভালোবাসতাম মেয়েটাকে খুব বললেও ভুল হবে অনেক বেশিই ভালবাসতাম।বলা যায় পাগলের মত।দিয়াই আমাকে প্রথমে তার ভালোবাসার কথা বলেছিলো,,,আমিও মনে মনে পছন্দ করতাম তাই যখন ই আমাকে প্রোপজ করলো আমিও কালবিলম্ব না করে হ্যা বলে দিলাম।


দিয়াকে খুব বিশ্বাস করতাম। একদিন আমাকে ফোন দিয়ে বললো ওর নাকি খুব জরুরি ৫০০০ টাকা লাগবে। যদিও তখন আমার কাছে অত টাকা ছিল না তারপরও অকে কিছু বুঝতে দেই নি।বন্ধুদের কাছ থেকে টাকা ম্যানেজ করে টাকা দিয়ে দেই।
খুব বিশ্বাস করতাম তাই একবারও জিজ্ঞেস করি নি টাকা লাগবে কেন এরকম আরো অনেক বারই টাকা নিয়েছিল আমার কাছ থেকে। ভার্সিটি উঠার পর সুমনের সাথে গভীর সম্পর্ক হয়ে গেল আমার। সব কিছুই তার সাথে শেয়ার করতাম কিন্তু দিয়াকে টাকা দেয়ার কথাটা আমি ওর কাছে চেপে যাই।

ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করার সময় একদিন সুমনের সাথে দিয়ার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম। একদিন কথা প্রসংগে দিয়াকে টাকা দেয়ার কথাটা সুমনের সাথে শেয়ার করলাম। শুনে সুমন বললো- দোস্ত বিশ্বাস করছ ভালো কথা কিন্তু অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। আমি ওকে পাত্তা দিলাম না বললাম-আরে ব্যাটা দিয়া অইরকম না বুঝসস। ও অন্য মেয়েদের থিকা আলাদা। সুমন কিছু না বলে একটা অবজ্ঞার হাসি দিলো।
বেশ কিছুদিন পর সুমন একদিন সন্ধ্যার সময় ভার্সিটি যেতে বললো আমি ভেবেছিলাম হয়তোবা কোন জরুরি দরকার তাই চলে গেলাম বাসায় বলে গেলাম আসতে দেরি হবে। গিয়ে দেখলাম সুমন বসে বসে চা আর সিগারেট খাচ্ছে। গিয়ে বললাম- কিরে ডাকসস কেরে??
সুমন বললো-বস জরুরি কথা আছে।
-কিসের জরুরি কথা??তারাতারি ক
-দোস্ত তোর দিয়া রে তো দেখলাম আজকে।
-ফইন্নির পুত এই কথা কওয়ার লেইগা তুই আমারে ডাকসস।
-আরে মামা চেইতা গেলে চলব না পুরাটা শুন দিয়ার লগে আরেকটা পোলাও ছিল দুইজন দেখলাম হাত ধরাধরি কইরা রিক্সায় কইরা কই জানি যাইতাসে।
এই কথা শুনে আমার মাথায় রক্ত উঠে গেল বললাম-সালা তুই আমার বন্ধু না হইলে এখনই লাশ বানায় দিতাম। এর পর যদি দিয়ার নামে কোন বাজে কথা কইসস তাইলে তোর সাথে আমি আর কোন সম্পর্ক রাখুম না।
এই বলে সেখান থেকে চলে আসলাম বাসায়।
বাসায় গিয়ে দিয়াকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম বিকালে কোথায় ছিল? দিয়া বলল- বাসায় ছিল।
খুব বিশ্বাস করতাম তাই ভাবলাম সুমন বোধহয় মিথ্যা বলেছে। এর পর থেকে সুমনের সাথে কথা বলা কমিয়ে দিলাম।
প্রায় একমাস পর একদিন বিকালে টিউশনিতে যাচ্ছিলাম মালিবাগের দিকে। একটা রিকশা অতিক্রম করার সময় ভিতরে চোখ পড়তেই দেখি দিয়া পাশে একটি ছেলের সাথে খুব ঘনিষ্ট ভাবে বসে আছে। এটা দেখে আমি তৎক্ষনাত অই জায়গা থেকে সরে গেলাম। সোজা চলে গেলাম সুমনের বাসায়। সুমন বাসায় ছিলো না। আধা ঘন্টা পর বাসায় আসলো। আসার পর সব খুলে বললাম শুনে সুমন বললো-আমি তো আগেই কইসিলাম অতি বিশ্বাস ভালো না এখন দেখসো তো ভালো হইছে। কই আর করবি ছাইরা দে মামা আমিও একজনরে ভালবাসছিলাম সেও আমারে এইভাবে ছেকা দিছে।তুই আবার এই মাইয়ার লেইগা উল্টাপাল্টা কিছু করিস না যা হবার হইছে বাদ দে। বাসায় গিয়া ঘুমা। কালকে ভার্সিটি আয় অইখানে কথা হইব।
আমি কিছু না বলে সেখান থেকে চলে আসলাম। দিয়ার বান্ধবিদের কাছ থেকে জেনেছিলাম যে ছেলেটার সাথে নাকি দিয়ার৬ মাসের সম্পর্ক চলছিল।
এইসব কিছুর ব্যাপারে দিয়াকে কিছু জানালাম না বা দিয়াও কিছু জানলো না।আমার ভিতরে তখন আমার পশুটা জেগে উঠেছে প্ল্যান করতে লাগলাম কিভাবে দিয়াকে শাস্তি দেয়া যায়। আমার ভেতর শুধু একটা কথাই বেজে যাচ্ছিল - দিয়া শুধু মাত্র আমার আর কার না।
বাসার সবাই গ্রামের বাড়িতে গিয়েছে তাই আর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। বাসায় পার্টি হবে আরও অনেকেই আসবে শুনে আসবে বললো। বাসায় এসে যখন দেখলো কেউ নেই একটু অবাক হল। পিছনে ফিরে কিছু একটা বলতে যাবে ততক্ষনে ছুরিটা গলায় ঢুকিয়ে দিয়েছি। বিস্ফরিত চোখে তখনো তাকিয়ে আছে। শেষ নিঃশ্বাস যাওয়া পর্যন্ত গলায় ছুরিটা গেথে রেখেছিলাম। এরপর ফোন দিয়ে সুমনকে বাসায় আনলাম।
কিরে ব্যাটা কিছু কস না ক্যাের??কি করতাম লাশ টা?? তোরে আনলাম ভাবলাম তুই কিছু করবি তা না কইরা তুই ভয়ে কাপতাসস। এত ভয় পাস কেরে?? আমারে দেখ আমি তো ভয় পাইতাসি না তুই এত ভয় পাইতাসস ক্যারে??আমি তো আসি দোস্ত। আমি ধরা খাইলে তোর নাম কমু না হইসে তো। ক না কি করুম।
- তোগো গাড়িতে কইরা লাশ টা বুড়িগঙ্গায় ফেলায় দিয়া আয়।
- ফেলায় দিয়া আয় মানে তুইও আমার সাথে যাবি সালা।
-আইচ্ছা যাহ যামু না হয় তোর লগে। হইসে। এখন লাশ টারে বস্তায় ভর।
প্রায় মধ্যরাত। লাশ টা বুড়িগঙায় ফেলে দিয়েছি। ফিরে যাচ্ছি আপন নীরে। নাহ মনের ভেতর কোন অনুশোচনা হচ্ছে না। বিশ্বাস ভঙ্গের শাস্তি দিয়েছি নিজ হাতে।ভবিষ্যতে কি হবে জানি না হয়তোবা ধরা পড়বো হয়তোবা না কিন্তু অনুশোচনা কখনোই হবে না।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×