গবেষনা শব্দের ইংরেজী হলো রিসার্চ। রি-সার্চ, অর্থাত কোনো বিষয়ে পুন: পুন: অনুসন্ধান করা। অর্থাত একটি বিষয়ে এক জায়গাতেই সীমাবদ্ধ না থেকে পুন: অনুসন্ধানের মাধ্যমে আরো ভালো কিছু আরো নতুন কিছু খুজে বের করার নামই হচ্ছে রিচার্স।
চিকিতসা বিদ্যায় দেখা যায় নতুনরোগের আগমন হলে গবেষনা করে রোগের কারন খুজে বের করে সে কারন অনুযায়ী প্রতিষেধক বের করা হয়। একসময় এই বাংলাদেশেই কলেরা, হাম, বসন্ত, প্রভৃতি রোগের প্রাদুর্ভাবে অনেক লোক মারা গিয়েছে। এখন এসব রোগকে মানুষ আর রোগই মনে করে না। হার্টের অসুখ হলে অপারেশন করে ভালো হচ্ছে। হার্টের ইমার্জেন্সী সমস্যার জন্য অনেক ঔষধ রয়েছে যা রোগীর উপরে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। স্বাশকষ্টের রোগীর চিকিতসার পাশাপাশি ইনহেলার বা এইটাইপের ব্যবস্থা রয়েছে যা রোগীর শরীরে কাজ করবে শতভাগ নিশ্চিত। এভাবে বহু রোগী জীবনটাকে এগিয়ে নিচ্ছে।
আমার এক আত্নীয়া স্টমাকের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। রিপোর্টে দেখা গেলো প্রতিমুহুর্তে তার ক্যানসার স্টমাকে ছড়িয়ে পড়ছে। রোগ ধরা পড়ার দ্বিতীয়দিনেই তার স্টমাকে আক্রান্ত অংশ কেটে বাদ দেয়া হয়েছে। আলহামদৃলিল্লাহ তিনি সুস্থ আছেন।
আমার আর এক আত্নীয়া তিনি ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। যদিও ব্যয়বহুল চিকিতসা ছিলো, তবুও আল্লাহর রহমতে চিকিতসা করে তিনি সু্স্থ আছেন।
প্রচলিত চিকিতসা ব্যবস্থা যা এলোপ্যাথি নামে পরিচিত। সেখানে রোগ ডায়াগনোসিস হলে এবং তার মেডিসিন থাকলে আরোগ্য ইনশাআল্লাহ সুনিশ্চিত। উদাহরন হিসেবে বাংলাদেশে ডেংগু জ্বরের কথা বলতে পারি। প্রথম দৃ-একটি রোগী মারা গেছে। এরপরে ডেংগু নিয়ে সমস্যা আর তেমন হয়নি।
হোমিওপ্যাথি। এ পথের পথিকগন একে সর্বাধুনিক চিকিতসা ব্যবস্থা বলে থাকেন কারন হোমিওর আবিস্কার বেশিদিন হয়নি। মহাত্না হ্যানিম্যান একজন এলোপ্যাথির চিকিতসক ততকালীন সময়ের এমডি এবং জানায় ভুল না থাকলে ব্রিটেনের রানীর ব্যক্তিগত চিকিতসক হওয়া সত্বেও সে তিনি এলোপ্যাথির চিকিতসা পদ্ধতির উপরে সন্তুষ্ট না হওয়াতে নিজেই গবেষনা করে নতুন একটি চিকিতসা পদ্ধতি প্রবর্তন করেন যা হোমিওপ্যাথি নামে পরিচিত।
হোমিও চিকিতসা যে নিয়মনীতি অনুসরন করেন তাকে অর্গানন বলা হয়। হ্যানিম্যান লিখিত এ অর্গাননের মোট ছয়টি সংস্করন বের হয়েছে। সর্বশেষ সংস্করনটি বের হয় আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর আগে(১৮৪৩)। অর্গাননেই লেখা থাকে হোমিও চিকিতসা পদ্ধিতিটি। গবেষনা বা রি-সার্চ বা পুন খোজ করা এই শব্দটির ব্যবহার আমরা বিগত ১৫০ বছরের অধিককাল ধরে অনুপস্থিত দেখতে পাচ্ছি। হ্যানিম্যানের মৃত্যুর পরে তার আবিস্কৃত ঔষধ বাদেও আরো অসংখ্য ওষধ বের হয়েছে কিন্তু চিকিতসা পদ্ধতিটি সেই ১৫০ বছরের পুরোনোই থেকে গেছে। এই সুদীর্ঘ সময়ে চিকিতসা জগতে ব্যপক পরিবর্তন এসেছে। নতুন রোগ যেমন এসেছে তেমনি রোগের চিকিতসাও এসেছে। কি কারনে এই রোগ হয়, সে কারন নির্নয় করে তার কার্যকরী ঔষধ এলোপ্যাথিতে রয়েছে। ঔষধটি শরীরে কিভাবে কোথায় গিয়ে কাজ করবে তার বিস্তারিত জানা। সেখানে হোমিওর চিকিতসা পদ্ধতিটি সেই লক্ষন নির্ভর এবং ১৮৪৩ সালের অর্গানন দিয়েই চলছে। গবেষনা করে অর্গাননের ৭ম বা ৮ম সংস্করন আসে নাই। ৬ষ্ঠ সংস্করন তো সৃষ্টি কর্তা কর্তৃক প্রেরীত কোনো ঐশী বানী নয় যে এটি অবিনশ্বর, অপরিবর্তনীয়।
হোমিওতে রোগ নিয়ে গবেষনা হয়, চিকিতসা পদ্ধতি নিয়ে গবেষনা হয় এমনটি আমরা দেখতে পাই না। হোমিও ঔষধ মানব শরীরে কিভাবে কাজ করে তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই। যার কারনে হু(WHO) কর্তৃক সরাসরি স্বীকৃতি পাওয়া যায় নাই। গেছে বিকল্প চিকিতসা ব্যবস্থা হিসেবে। এর কারনও ঐ একটি। গবেষনা/রিসার্চ/রি-সার্চ/পুন খোজ তাদের নেই।
মজার ব্যাপার হচ্ছে জীবনে একবারের জন্য হলেও হোমিও ঔষধ খায় নাই এমন লোক দেশে পাওয়া বিরল। মাইগ্রেনের ব্যাথায় আমি কাতর ছিলাম। হোমিও-এলোপ্যাথি অনেক চিকিতসা করেও সুবিধা হয়নি। ডা: নাজির আহমেদ নামে নাটোরের একজন হোমিও ডাক্তার নেট্রাম মিউর ঔষধটি খেতে দেন। আলহামদুলিল্লাহ। ১৯৯২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভালো আছি। হোমিও ঔষধ ছোটদের উপরেতো অসাধারন কাজ করে।
উৎসর্গ: হোমিওপ্যাথির উৎকর্ষসাধনে যারা নিবেদিত।