আফগামিস্তানে নতুন করে ৩০ হাজার সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এছাড়াও ২০১১ সালের জুলাই মাসের মধ্যে দেশটি থেকে সেনা-প্রত্যাহারের সূচণা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। স্বল্প-মেয়াদে অভিযানের তীব্রতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেই সেনা-সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওবামা। সোমবার রাতে ওয়েস্ট পয়েন্ট মিলিটারী একাডেমীতে দেয়া ভাষণে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দুটি দিয়েছেন ওবামা। এদিকে, বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি জানিয়েছে সেনা-প্রত্যাহারের সময়-সীমা ঘোষণাকে তালেবানরা যুক্তরাষ্ট্রের 'দুর্বলতা' হিসাবে বিবেচনা করবে।
ওয়েস্ট পয়েন্ট মিলিটারী একাডেমীতে ৯২-দিন দীর্ঘ আফগানিস্তান বিষয়ক নীতিমালার মূল্যায়ন শেষে দেয়া বহুল-প্রতীক্ষিত ঘোষণাটিতে ওবামা জানান আগামী সাত থেকে আট মাসের মধ্যে আফগানিস্তানে ৩০ হাজার সেনা প্রেরণ করা হবে। উল্লেখ্য, ২০০১ সালে অভিযান শুরুর পরে আর কখনও আফগানিস্তানে এত সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়নি মার্কিন প্রশাসন। জানা গেছে, নতুন করে সেনা-সংখ্যা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা-সংখ্যা এক লক্ষে গিয়ে ঠেকবে। লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে, ২০১১ সালের জুলাই মাসের মধ্যে সেনা-প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানো হলেও কবে না প্রক্রিয়াটি সমাপ্ত হবে সে-ব্যাপারে ওবামার ভাষনে কোন তথ্য দেয়া হয়নি। তবে ওয়াইট হাউসের সূত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন মিডিয়া জানিয়েছে ২০১২ সালের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই বেশির ভাগ সেনা সরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে আশাবাদী ওবামা-প্রশাসন। উল্লেখ্য, আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে ইতিপূর্বে কখনোই কোন সময়-সীমা উল্লেখ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। সেনা-প্রত্যহার প্রসঙ্গে ওবামা জানান, উল্লেখিত সময়কালে যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি কেমন থাকে তার উপরেই নির্ভর করবে পুরোপুরি সেনা-প্রত্যাহারের ব্যাপারটি। তিনি এ-প্রসঙ্গে বলেন, ইরাকের ক্ষেত্রে যে-রকম করা হয়েছিলো, যুদ্ধ-ক্ষেত্রের পরিস্থিতি বিবেচনাতে নিয়ে, আমরা দায়িত্বশীলতার সাথে [সেনা] প্রত্যাহারের ব্যাপারটি সম্পন্ন করবো।
পর্যবেক্ষকদের মতে, ফেব্রুয়ারীতে ওয়াইট হাউসে প্রবেশের পর থেকে এ-পর্যন্ত নেয়া ওবামার সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে আফগানিস্তানে সেনা-সংখ্যা বৃদ্ধি ও সেনা-প্রত্যাহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্তটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, আফগানিস্তানে অভিযান নিয়ে মার্কিন জনগন যেভাবে দিনকে দিন ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে উঠছে তা দূর করার আশা থেকেই সেনা-প্রত্যাহারের সময়-সীমা ঘোষণা করেছেন বারাক ওবামা। আফগানিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভিয়েতনামের মতই প্রলম্বিত এক হতাশা হয়ে উঠতে পারে বলে একটি ধারণা বর্তমানে মার্কিনীদের বড় একটি অংশের মধ্যে বেশ দানা বেঁধে উঠেছে।
বারাক ওবামা অবশ্য উপরোক্ত হতাশার ব্যাপারটিকে মেনে নিতে রাজী হননি সোমবারের ভাষণে। তার দাবীঃ আফগানিস্তান এর ব্যাপারে [যুক্তরাষ্ট্রের জন্য] আন্তর্জাতিক সমর্থন আছে, তালেবান কোন জনপ্রিয়তা-ধন্য তৎপরতা নয়। এক-এগারোর হামলার দিকে ইঙ্গিত করে ওবামা বলেন, ভিয়েতনামের অভিজ্ঞতার বিপরীতে, আফগানিস্তান থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রান্ত করা হয়েছিলো এবং [যুক্তরাষ্ট্র] এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানে অবস্থান গ্রহনকারী সেই একই উগ্রবাদীদের হামলার লক্ষ্যস্থল হয়ে আছে।
এদিকে, বারাক ওবামার ঘোষণার বিরোধীতায় মাঠে নেমেছে বিরোধী দল। রিপাবলিকানদের মত সেনা-প্রত্যাহারের সময়-সীমা ঘোষণাকে তালেবানরা দুর্বলতা হিসাবে ধরে নেবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী জন ম্যাককেইন বলেন, সরে পড়ার তারিখ ঘোষণার মাধ্যমে নয়, শত্রুর ইচ্ছা-শক্তি ধ্বংস করে দেয়ার মধ্য দিয়েই যুদ্ধ জিতে নিতে হয়।
খবরে প্রকাশ, এবারের ক্রিসমাসের আগেই নতুন সেনাদের প্রথম দলটি আফগানিস্তান পৌঁছুবে; আর সামনের বছরের অগাস্ট মাসের মধ্যেই নতুন সেনা-প্রেরণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হবে। পেন্টাগন এতদিন পর্যন্ত ১২ থেকে ১৮ মাস সময় নিয়ে সেনা-প্রেরণ সম্পন্ন করার কথা ভাবছিলো। আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর প্রধান জেনারেল স্ট্যানলি ম্যাকক্রিস্টাল কিছু দিন আগে ৪০ হাজার নতুন সেনা প্রেরণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছিলেন। সুত্রঃhttp://portal.ukbengali.com/?q=node/381

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




