বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বিধান, দ্রুত বিদ্যুৎ সংকট দূর করে কৃষি ও শিল্প প্রতিষ্ঠানসহ ঘরে ঘরে বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ এবং জাতীয় সম্পদের উপর জনগণের কর্তৃত্ব নিশ্চিত করবার জন্য আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ অবিলম্বে নীচের দাবিগুলো মেনে নেবার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছিঃ
১। যেহেতু ৫০ বছরের জ্বালানি চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশের স্থলভাগে ও সমুদ্রে তেল-গ্যাস-কয়লা মজুদ অনেক কম, সেহেতু কোনভাবেই তেল গ্যাস কয়লা খনিজদ্রব্য নিয়ে কোন রফতানিমুখী চুক্তি করা যাবে না। কোন চুক্তি হয়ে থাকলে তা বাতিল করতে হবে। জাতীয় কমিটি প্রস্তাবিত ‘খনিজ সম্পদ রফতানি নিষিদ্ধকরণ আইন ২০০৯’ অবিলম্বে পাশ করতে হবে।
২। রফতানিমুখী ‘মডেল পিএসসি ২০০৮’ বাতিল করে শতভাগ দেশীয় মালিকানার শর্ত রেখে নতুন নীতিমালার ভিত্তিতে তেল-গ্যাস উত্তোলনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সমুদ্রে বাংলাদেশের ন্যায্য সীমানা নির্দিষ্টকরণ ও এই এলাকায় সার্বভৌম কর্তৃত্ব নিশ্চিত করবার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩। আবাদি জমি-পানি সম্পদ-খাদ্য নিরাপত্তা ও মানুষ বিনাশী কয়লা উত্তোলনের উন্মুক্ত খনন পদ্ধতি বাতিল এবং এই পদ্ধতির পক্ষে দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং প্রতারণামূলক অপতৎপরতার সঙ্গে যুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জিকে অবিলম্বে বহিষ্কারসহ জনগণের সঙ্গে সরকারের স্বাক্ষরিত ৬ দফা ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। উন্মুক্ত পদ্ধতি অনুমোদনের চেষ্টায় কয়লানীতি ঝুলিয়ে না রেখে ‘উন্মুক্ত না, রপ্তানি না, বিদেশি না’ নীতিমালার ভিত্তিতে পরিবেশ-অনুকূল পদ্ধতি গ্রহণ করে দ্রুত কয়লা উত্তোলন ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে।
৪। স্থলভাগের ১২টি সমৃদ্ধ গ্যাস ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য চুক্তি করার পর সাম্রাজ্যবাদী বহুজাতিক কোম্পানিগুলি কর্তৃক অনুসৃত নীতি তথা বর্তমান তীব্র গ্যাস সংকটের সুযোগে দেশকে জিম্মি করে দীর্ঘসূত্রিতা, প্রতারণা ও অনিয়ম অবলম্বনের নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। সকল অসম পিএসসিসহ বহুজাতিক কোম্পানির সাথে সম্পাদিত জাতীয় স্বার্থ পরিপন্থী সব চুক্তি বাতিল করে রাষ্ট্রীয় ও দেশীয় সংস্থার কর্তৃত্বে বা নিয়ন্ত্রণে খনিজ উত্তোলনের ব্যবস্থা করতে হবে। মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলার দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বহুজাতিক কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশের প্রাপ্য অন্ততঃ ২০ হাজার কোটি টাকা আদায় করে বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে ব্যয় করতে হবে।
৫। পেট্রোবাংলা, বাপেক্স, জিওলজিক্যাল সার্ভে আনুবিক শক্তি কমিশনসহ জ্বালানিখাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে পঙ্গু করবার নীতি ত্যাগ করে, এই খাতকে দুর্নীতিবাজ ও বিদেশি কোম্পানির রাহুমুক্ত করতে হবে এবং জাতীয় সক্ষমতা বিকাশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬। জ্বালানি সম্পদ নিয়ে এ যাবতকালে বিভিন্ন সরকারের আমলে যেসব জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি করা হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করতে হবে এবং এগুলোসহ যেসব অপতৎপরতার কারণে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বিপর্যস্ত ও ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলোর জন্য দায়ী দুর্নীতিবাজ জাতীয় স্বার্থবিরোধী ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭। ২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ জাতীয় সম্পদ রক্ষায় সংগঠিত জাতীয় কমিটির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশী হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
লিঙ্কঃhttp://www.petitiononline.com/telgas/petition.html

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




