আমার অফিসে এখন কাজের অনেক চাপ। গার্মেন্টস সংশ্লিষ্ট ব্যবসা বলে কমবেশী সারা বছরই চাপ থাকে। তবে এখন শিপমেন্টের মৌসুম বলে চাপটা একটু বেশী। অফিসের সবাই সকাল থেকে সন্ধ্যা ব্যস্ত। কথা বলার মানুষও পাচ্ছিনা। তাই ভাবলাম একটু ইতস্তত লেখালেখি করি।
অনেকক্ষন ধরেই লেখালেখির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু ঘুরেফিরে অপহরন আর গুম ছাড়া আর কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। পত্রিকা কিম্বা টিভি মিডিয়াতে সারাক্ষনই এসব খবর।
আমার মতে অপহরন ব্যাপারটাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়ে দেয়া উচিত। বিশেষ করে বড় বড় ব্যবসায়ীদের এই ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিতে হবে। কারন, আমাদের দেশে তো এমনিতে সম্পদের সুষম বন্টন বলে কোন জিনিষ নেই। যার আছে তো সব আছে আর যার নেই তো কিছুই নেই। বড় বড় ব্যবসায়ীরা যদি বড় বড় মুক্তিপন দিয়ে বের হয়, তাহলে তাদের পকেট থেকে অনেক টাকা বেরিয়ে অনেক সাধারন মানুষের পকেট পর্যন্ত হয়তো আসতে পারে। এই বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু প্রস্তাবনা উত্থাপন করছি:
১. শীর্ষ সন্ত্রাসীদের যেমন 'একে ধরিয়ে দিন' মার্কা তালিকা প্রকাশ করা হয়, তেমনি প্রতি অর্থবছরেরর হিসাবনিকাশ শেষে শীর্ষ ঋনখেলাপী ও করখেলাপী ব্যবসায়ীদের 'একে অপহরন করুন' মার্কা তালিকা প্রকাশ করা যেতে পারে।
২. তালিকার প্রথম দশজনকে অপহরনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ পুরষ্কার ঘোষনা করা যেতে পারে।
৩. অভিজ্ঞ অপহরনকারীদের দিয়ে 'সুষ্ঠভাবে অপহরনের নানান কৌশল' নামে বই প্রকাশ করা যেতে পারে।
৪. রাষ্ট্রায়ত্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে 'অপহরনবিদ্যা' নামে একটি বিভাগ খোলা যেতে পারে। এখান থেকে উচ্চতর ডিগ্রীপ্রাপ্তরা ইথিওপিয়া, কলম্বিয়া কিম্বা যেকোন মাফিয়া-অধ্যুষিত দেশে বিরাট অংকের বেতনে কাজ নিয়ে যেতে পারবে। তাতে দেশে রেমিটেন্সের পরিমান দ্বিগুন বা আরো বেশী হতে পারে।
৫. ব্যাংকগুলো অপহরন পেশায় কেরিয়ার গড়তে ইচ্ছুকদের স্বল্প সুদে ঋন দিয়ে সহায়তা দেবে। ঋনগ্রহীতা পরবর্তীতে অপহরনের মাধ্যমে অর্জিত টাকা থেকে ঋন পরিশোধ করবে।
৬. অপহরন পেশায় নিয়োজিতদের করের আওতামুক্ত রাখতে হবে। নাহলে তারাও ঋনখেলাপীদের তালিকায় নাম লেখাতে পারে।
৭. বিদেশী অতিথিদের অপহরন করে বিদেশ থেকে মুক্তিপন আদায়ের জন্য বিশেষ অপহরনকারী বাহিনী (ইংরেজী এবং 'হিন্দী' ভাষায় পারদর্শী) গড়ে তোলা যেতে পারে। বৈদেশিক বানিজ্যের ক্ষেত্রে এটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
৮. অপহরনের হাত থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ীরা নিজস্ব রক্ষীবাহিনী গড়ে তুলবেন নতুন করে (অতীতেও রক্ষীবাহিনী গঠনের নজীর আমাদের দেশে আছে)। এর ফলে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে।
৯. রক্ষীবাহিনী গড়ার ক্ষেত্রে দেশের ইয়াবাসেবী যুবসমাজকে ব্যবহার করা যেতে পারে। কারন, ওরা তো এমনিতেই রাতে ঘুমায়না। রাত জেগে পাহারা দেয়ার কাজটা ওরা ভালো পারবে।
১০. ঋনখেলাপীর তালিকা থেকে নাম বাদ দেয়ার জন্যে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জায়গায় টাকা ঢালবে, এমনকি কেউ কেউ সব বকেয়া ঋন ও কর পরিশোধও করে দিতে পারে (হা হা হা...... অসম্ভব!!)।
আমি জানি আমার এই লেখাটা পড়ে (যদি কেউ পড়েন আদৌ) অনেকেই আমার মস্তিষ্কের বাস্তব অবস্থা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করবেন জানি। কিন্তু অনেক আগে Murphey's Law তে পেয়েছিলাম ""When rape is unavoidable, start enjoying it!!""। তো, আমাদের বর্তমান অবস্থা কি সেরকমই না??
ও হ্যাঁ.... আমার লেখাটি নিতান্তই আমাদের অসহায় অবস্থাকে কটাক্ষ করার উদ্দেশ্যে লেখা। বাস্তবে অপহৃত বা গুম হওয়া কেউ বা তার পরিবারের প্রতি আমার পূর্ন সমবেদনা আছে। আশা করি কেউ ভুল বুঝবেন না।