যে কারণে সামুর পোলাপাইনগো অতিসত্বর বিয়ে করা শুধু উচিত নয়,রীতিমত কর্তব্য বলে মনে করছি
১। মোবাইলের খরচ থেকে শুভমুক্তি:
যারা এখনও বিযে করেন নাই কিন্তু গার্লফ্রেন্ড পুষতেছেন, তাদের মোবাইলে যে কী পরিমাণ টাকা খরচ হয় সেটা আমরা খুব ভালো করে জানি।আর যাদের কোন গার্লফ্রেন্ড নাই তারাও গার্লফ্রেন্ড বানানোর জন্য মোবাইল, ফেইসবুক,ইয়াহু মেসেন্জার,স্কাইপ বা মিগ-২৯ (নাকি ৩৩?) তে যে কী পরিমাণ সময় ও অর্থ ব্যয় করেন সেটাও আমরা জানি। Student life এ বাপের পকেট থেকে টাকা নি্যা গার্লফ্রেন্ডের পেছনে ঢালছেন,গায়ে লাগে নাই। এখন সারা মাস গাধার খাটুনি খাইটা মাস শেষে যে বেতন পান,তার অর্ধেক যদি মোবাইলের তলেই যায় তাইলে কি আর ভালো লাগে? সুতরাং যদি আপনার মোবাইলের খরচ থেকে বাঁচতে চান,অতিসত্বর বিয়া কইরা ফেলান!
***হুঁশিয়ার সাবধান : মোবাইলের খরচ থেকে বাঁচতে গিয়া বিয়া কইরা যে পার্মানেন্টলি কুরবানী হইতে যাইতেছেন এটাও মাইন্ডে রাইখেন।বউয়ের খরচ যোগাইতে যোগাইতে রাজার ভান্ডারও শেষ হয়ে যায়। কবি যথার্থই বলিয়াছেন :
"মজা পাইয়া, বেশী খাইয়া
ঝালে মইরোনা গো তুমরা
ঝালে মইরোনা!"
***করনীয় এবং উপকারীতা: এক্ষেত্রে করণীয় হলো বউরে কখনই বেতনের আসল অ্যামাউন্টটা বলবেন না। যা পান, বউরে তার তিন ভাগের দুইভাগ বলবেন আর বেতন পাইয়া সেই দুইভাগ বউরে দিয়া বলবেন, এই নাও তোমার স্যালারি।এইটা দিয়া সংসার চালাও। বউ দিব্যি চালায়া নিবে।কথায় আছে না "দুনিয়ায় যা কিছু কল্যানকর,অর্ধেক তার করিয়াছে নর অর্ধেক তার নারী" (মিলল না মনে হয়
২। রান্না'র ভাবনা, আর না আর না:
স্টুডেন্ট লাইফে হলের ডাইনিংয়ের সুস্বাদু (?) খাবার খাইছেন। আর ঢাকায় আইসা জব লাইফে ঢুইকা বুয়াদের ততোধিক সুস্বাদু (??) খাবার খাইতে খাইতে নিশ্চয় উনাদের হাতখানাও খাইতে মুঞ্চায়?
***হুঁশিয়ার সাবধান : "রঙ্গীন চুড়ী পড়া মেহেদি রাঙ্গা কোমল দুটি হাতের রান্না করা অমৃতসাধ" কিছু খাইতে গিয়া মোহ ভঙ্গ হইতে পারে। তখন বুয়া বা জিয়া হলের ডাইনিংয়ের বাবুর্চির রান্নাও অধিকতর সুস্বাদু ছিল বলে মনে হতে পারে। এমনকি এও মনে হইতে পারে শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ভয়ঙ্কর খাবার খাইতাছি।
"সামহোয়্যারের পোলাপান
হুঁশিয়ার সাবধান"
***করনীয় এবং উপকারীতা: বউয়ের রান্না ভালো হলেতো ভালোই (ভালো হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, এ যুগের মেয়ে বলে কথা!) আর ভালো না হলেও সমস্যা নেই।খাওয়া-দাওয়া কমায় দেন।বউরে বল ডায়েট করতেছেন। কী আর করবেন? "কপালে নাই হাড়, কী আর হবে দাদা খাদিমদার"
"আমাকে পোড়াতে যদি এত লাগে ভালো, জ্বালো আগুন আরো জ্বালো,ঢালো আরো ব্যথা ঢালো,আমাকে পোড়াতে যদি এত লাগে ভালো"।
বউয়ের মনে মায়া হলেও হতে পারে। (আহারে !আমারই কান্না আসতেছে
৩। কাপড় গোছানো এবং ধোয়া :
কবি মীর্জা গালিবের শায়ের
***হুঁশিয়ার সাবধান :বউরে দিয়া যদি কাপড় ধুয়াইতে বা গোছাইতে চান তাহলে বিয়ার রাইতেই বিড়ালটা মাইরা ফেলাও।তা নাহলে নিজের কাপড় তো দূরের কথা বউয়ের কাপড় ধুইয়া কূল পাইবেন না ,কইয়া দিলাম।
***করনীয় এবং উপকারীতা: বউ যদি কাপড় ধোয় তো আলহামদুলিল্লাহ।আর না ধুইলেও ক্ষতি নাই।হুইল পাউডার নেন,বালতিতে ভাল করে ফেনা তোলেন তারপর নিজের আর বউয়ের কাপড়টা ভাল করে ধুয়ে ফেলেন।এটা আর এমন কী?আর এর ফলে উপকার যেটা হবে সেটা হলো শরীরের তো একটা ব্যায়াম হবে,তাইনা? উপরন্তু যদি হঠাৎ করে বাসায় "শ্বশুরবাড়ী সমগ্র" এসে উপস্হিত হয় তাদের কাপড়-চোপড়ও ধুয়ে দিয়েন।এতে ব্যায়ামের পরিমাণটাও বাড়বে,শরিরটাও সুগঠিত হবে,কী বলেন?
৪। মশারি টাঙ্গানো কী এতই সহজ ?
স্টুডেন্ট লাইফে সারা রাত মোবাইল, ইন্টারনেট,ফেসবুক,আড্ডা,নৈশকালীন "বিশেষ চলচ্চিত্র" দর্শন, C.T (Class Test) আর P.L (পরীক্ষার আগে Preparation leave) ইত্যাদি করে কাটাইছেন।আর ঘুমাইছেন দিনের বেলা রুমে বা ক্লাসে। ফলে মশারি টাঙ্গানোর প্রয়োজন পড়েনি।কিন্তু এখন জবে ঢুকে তো আর দিনে ঘুমানোর সুযোগ নাই।ঢাকায় যে মশা!মশারি টাঙ্গানো ছাড়া ঘুমানোর কোন উপায় নাই।কিন্তু সারাদিন অফিস করে এসে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত শরীরে মশারি টাঙ্গানোর শক্তিটুকু কি আর থাকে?বউ থাকলে কি এই কাজটা বউ করতে পারতনা?এই মশারি টাঙ্গানোর জন্য হলেও তো একটা বিয়ে করা উচিত,তাইনা?!
***হুঁশিয়ার সাবধান : বউ যদি দজ্জাল প্রকৃতির হয় তাহলে কী ঘটনা ঘটবে তা সহজেই অনুমেয়।
"আমি বন্দি কারাগারে,আমি বন্দি কারাগারে
আছি গো মা বিপদে,
বাইরের মশা যেন ঢুকেনা,মা
আমি বন্দি কারাগারে"
***করনীয় এবং উপকারীতা: একটা কাজ করতে পারেন।বউকে এই কথাটা বলে প্যাচে ফেলে দিতে পারেন "আজকে তুমি মশারি টাঙ্গাও আমি ঘুমাই আর কালকে আমি ঘুমাব তুমি মশারি টাঙ্গাবা।"একমাত্র Engineering পাশ করা মেয়ে ছাড়া আর কোন মেয়ে এই প্যাচ ধরতেই পারবেনা।
৫।গন্ডারের চামড়া,তুলে নেব আমরা:
অফিসের বসরা কী প্রকৃতির এতদিনে আমাদের সকলেরই সে অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে।বসের দু-একটি ঝাড়ি খেয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে এমন নজিরও আমাদের মধ্যে আছে।at least চাকরি ছাড়ার ইচ্ছা হয়নি এমন কেউ বোধ করি আমাদের মধ্যে নেই।কিন্তু চাকরির যে বাজার তাতে একটা ছাড়লে আরেকটা যে পাওয়া যাবে তার কোন নিশ্চয়তা নাই।তাই বসের হাজারো ঝাড়ি সহ্য করতে হবে।গায়ের চামড়া করতে হবে গন্ডারের মত মোটা।আর এক্ষেত্রে বউই তো হেল্প করতে পারে!
"বউয়ের ঝাড়ি খান
গায়ের চামড়া মোটা বানান"।
***হুঁশিয়ার সাবধান :যাদের হার্ট দুর্বল, বউয়ের ঝাড়ি খেয়ে তাদের হার্ট অ্যাটাক করে ভবলীলা সাঙ্গ হতে পারে।বউয়ের Active voice এ কারো কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে।চিল্লাইতে চিল্লাইতে যদি বউয়ের গলা ভেঙ্গে যায় সেটা জোড়া লাগাতে আবার এক্সট্রা খরচ!
***করনীয় এবং উপকারীতা:বউয়ের ঝাড়ি খেয়ে আপনার চামড়া হবে গন্ডারের মত মোটা।ঝাড়ি সহ্য করার এফিসিয়েন্সি বাড়বে।বসের ঝাড়িকেও আর ঝাড়ি বলে মনে হবে না।চাকরি ছাড়ার ইচ্ছাও আর করবেনা।
৬। থাকবেনা আর কন্যাদায়,বিয়া করবেন আপনারাই:
হে তরুণ ব্লগার! উঠ!! জাগ্রত হও!!!জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে তোমাকেই দরকার।উঠ।
বিবাহ কর।জাতিকে কন্যাদায়গ্রস্হতার অভিশাপ থেকে মুক্ত কর।আর সমস্বরে গেয়ে উঠ
আমরা যদি না জাগি মা
কেমনে বিয়ে হবে ?
তোমার ছেলে করলে বিয়ে
জাতি মুক্তি পাবে।
***হুঁশিয়ার সাবধান : এতদ্বারা এই মর্মে আপনাদেরকে হুঁশিয়ার করা যাইতেছে যে জাতিকে কন্যাদায়গ্রস্হতার অভিশাপ হইতে মুক্ত করিতে গিয়া আপনাদেরও পত্নিদায়গ্রস্হ হইবার সমূহ আশংকা রহিয়াছে।আমাদিগের এই কথা বলিবার যথেষ্ঠ কারণ, প্রমাণ ও অবকাশ রহিয়াছে যে নারী জাতি সুঁইরূপে প্রবেশ করিয়া অবশেষে ফাল রূপে বাহির হয়।সুতরাং সাধু সাবধান!
***করনীয় এবং উপকারীতা: কেউ যদি আপনার বিশ্বাস আর সরলতার (সামুর প্রত্যেকটা ব্লগারেরই রয়েছে বলে আমি মনে করি) সুযোগ নিয়ে আপনার সর্বস্ব অধিকার করে নেয়, তাতে কী বা করার আছে,বলেন? তাইতো লোকে বলে
"উপকারের দাম?
ইয়ে মারাই কাম"।
যাইহোক,আরো কিছু কারণ ছিল।কিন্তু সবগুলো লিখলাম না।তাতে আপনারা বিয়ে করার জন্য এতই পাগলা হয়ে যাবেন যে, পাবনা মেন্টালেও আসন সংকুলান হবেনা।
আর ওহো, ভাল কথা। আমার এই পোস্ট টা পড়ে যদি কারো বিয়ে করার "আর" বিন্দুমাত্র ইচ্ছা জাগে, তাহলে নিজেকে অত্যন্ত স্বার্থক বলে মনে করব।
(ইহা পুরোটাই একটা ফানি পোস্ট।আমার নিজের লেখা।কোন কিছু দোষণীয় হলে ক্ষমাপ্রার্থী)
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



