প্রথম পর্ব
ফেরস্তাদের প্রতি বিশ্বাসঃ
ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান আনতে হবে। মুসলমান মুমিন ব্যাক্তি এ বিশ্বাস স্থাপন করবে যে, আল্লাহ্ তায়ালার অসংখ্য ফেরেশতা রয়েছে। ফেরেশতা গন নূরের সৃষ্টি।
আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণীত ছহীহ্ হাদিসে প্রমানিত যে, নবী কারীম (সাঃ) বলেছেনঃ “মালাইকাগন নূরের সৃষ্টি, জ্বীনেরা আগুন থেকে সৃষ্টি এবং আদমকে যা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তা আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর পবিত্র কোরাণে বলে দিয়েছেন। (মুসলিম)
কোরাণে – সূরা ফাতির – ৩৫:১
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও যমীনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই দুই, তিন তিন ও চার চার পাখাবিশিষ্ট| তিনি সৃষ্টি মধ্যে যা ইচ্ছা যোগ করেন| নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সক্ষম|
তাদের কে তিনি নিজ আনুগত্যের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তারা সর্বদা আল্লাহর আদেশ অনুসারে নিজ নিজ দ্বায়িত্ব পালন করেন।
সূরা – আম্বিয়া (২১:২৮)
তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা আছে, তা তিনি জানেন। তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করে, যাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারা (ফেরেশতা) তাঁর ভয়ে ভীত।
আল্লাহ তার মালাইকাগনকে বিভিন্ন প্রকার দ্বয়িত্বে নিয়োজিত করেছেন। তারমধ্যে একদল তাঁর আরশ উত্তোলনের কাজে। অপর একদল জান্নাত ও জাহান্নামের তত্ত্বাবধানে এবং আরেক দল মানুষের আমল নামা সংরক্ষনের কাজে নিয়োজিত।
কোরানের অসংখ্য জায়গায় তাদের কথা বলা হয়েছে –
সূরা বাক্কারাহ- (২:৩০)
আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেন: আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি| তিনি বললেন, নি:সন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না|
(২:৩১)
আর আল্লাহ্ তা’আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম| তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্খাপন করলেন| অত:পর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক|
২:৩২
তারা বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা|
২:৩৩
তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম| তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সে সবের নাম, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আসমান ও যমীনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি? এবং সেসব বিষয়ও জানি যা তোমরা প্রকাশ কর, আর যা তোমরা গোপন কর!
২:৩৪
এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইব্লীস ব্যতীত সবাই সিজ্দা করলো| সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল| ফলে সে কাফিরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল|
২:৯৮
যে ব্যক্তি আল্লাহ্ তাঁর ফেরেশতা ও রসূলগণ এবং জিবরাঈল ও মিকাঈলের শত্রু হয়, নিশ্চিতই আল্লাহ্ সেসব কাফেরের শত্রু|
সূরা আল-মুদ্দাস্সির
৭৪:৩১
আমি জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাই রেখেছি| আমি কাফেরদেরকে পরীক্ষা করার জন্যেই তার এই সংখ্যা করেছি-যাতে কিতাবীরা দৃঢ়বিশ্বাসী হয়, মুমিনদের ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং কিতাবীরা ও মুমিনগণ সন্দেহ পোষণ না করে এবং যাতে যাদের অন্তরে রোগ আছে, তারা এবং কাফেররা বলে যে, আল্লাহ্ এর দ্বারা কি বোঝাতে চেয়েছেন| এমনিভাবে আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে ইচ্ছা সৎপথে চালান| আপনার পালনকর্তার বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন এটা তো মানুষের জন্যে উপদেশ বৈ নয়|
আমরা বিশ্বাস করবো ফেরেশতাদের প্রতি ।
চলবে ...