মধ্যরাতে শূন্য রাস্তার মাঝে সারি সারি সোডিয়াম বাতি জ্বলতে দেখতে ভাল লাগে। কিছুদূর পরপর দেখা যায় একজন করে পাহারাদার দাঁড়িয়ে আছে।
ইনারা সারা রাত শূন্য এলাকা পাহারা দেন। ঘড়ির কাটা টিক টিক করে ১টা, ২টা...৪টার ঘর পেরিয়ে যায়। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠায় বসে থাকেন। তাদের মস্তিষ্ক কি তখন কিছু ভাবে না?
তাদের সঙ্গী থাকেন রাতজাগা সৃষ্টির দল। কুকুর থাকে, বেড়াল থাকে, আরো থাকে কিছু পাখি।
আমার অবাক লাগে কিভাবে একটা মানুষ এভাবে সময় কাটিয়ে দিতে পারে।
হাসপাতাল থেকে মাঝরাতে যখন বেরোই। তখন আমাকে সই করে বেরোতে বলে। যদিও আমি গেইটের কাছেই দাঁড়িয়ে থাকি। তবুও এই ছুতোয় একটু কথা বলা...
একবার মনে আছে, সেনাবাহিনীর একটা মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম। গেইটের সিকিউরিটি প্রধান কোথায় থাকি, কি করি জিজ্ঞেস করতে গিয়ে প্রায় আধ ঘণ্টার উপরে কথা বলতে থাকেন। আমার কিছু বলতে হয়নি, উনিই গড়গড় করে বলে গেছেন।
তাদের আসলে কথা বলার লোক থাকে না।
তাদের রিক্রিয়েশনের কোন ব্যবস্থা থাকে না। কেউ কেউ সেল ফোনে পুরনো হিন্দি গান প্লে করে রাখে।
মাঝেমাঝে অকারণে বাঁশি বাজায়।
ডাকাত যদি হামলা চালায়। তাদের প্রথম শিকার হয় এই রাতজাগা সিকিউরিটি। তাদের হাতে রাইফেল থাকে। তারা হয়ত রাইফেল চালনা শিখেওছিল কিন্তু বহুদিন ব্যবহার না করার কারণে তৎক্ষণাৎ তা ব্যবহার করার আগেই মারা পড়ে। জীবনের মুল্য বাবদ এক লক্ষ টাকা তাদের পরিবারে পৌছে দেওয়া হয়। তার নয় দশ বছরের ছেলেটা অসহায় হয়ে পড়ে।
আপনার আমার নিরাপত্তা দিতে গিয়ে তারা আরামের ঘুম ত্যাগ করে, জীবনের মায়া ছেড়ে দেয়। আমরা তবুও তাদেরকে সমাজের নিচু শ্রেণী ভাবি।